অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : দীর্ঘ নয় মাস পর রাফাহ ক্রসিং খুলে দেওয়ায় গুরুতর অসুস্থ ও আহত ফিলিস্তিনি শিশুদের একটি দল চিকিৎসার জন্য মিশরে প্রবেশ শুরু করেছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ফিলিস্তিনি শিশুদের ৫০ জনের একটি দল ও তাদের দেখভালকারী আরও ৬১ জন গতকাল (শনিবার) রাফাহ সীমান্ত পার হয়ে মিশরে গেছেন। এসব শিশুর অনেকেই ক্যান্সারের মতো বিভিন্ন দুরারোগ্য রোগে ভুগছে। ১৫ মাস ধরে চলা যুদ্ধের কারণে তারা চিকিৎসা নিতে পারছিল না।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হাসপাতাল বিষয়ক পরিচালক মোহাম্মদ জাকুত জানান, ছয় হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি রোগীকে চিকিৎসা জন্য বিদেশে পাঠানোর প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে এবং ১২ হাজারেরও বেশি রোগীর জরুরি চিকিৎসা সেবা প্রয়োজন।
গত ১৯ জানুয়ারি হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসেবে মোট ৪০০ ফিলিস্তিনিকে গাজা ত্যাগের অনুমতি দেয়া হবে।
হামাস তাদের হাতে থাকা শেষ নারী বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার পর ইসরাইল মিশর ও গাজার মধ্যে একমাত্র সীমান্ত পথ রাফাহ ক্রসিংটি খুলে দিতে সম্মত হয়। গতকাল (শনিবার) হামাস গাজায় তাদের হাতে বন্দি আরও তিন ইসরাইলি বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে। তাদের বিনিময়ে ইসরাইলের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন ১৮৩ জন ফিলিস্তিনি। এই দিনটিতেই গাজার গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত ক্রসিংটি খুলে দেওয়া হয়।
২০২৪ সালে মে মাসে ইসরাইলি বাহিনী গাজার দক্ষিণ সীমান্তের ক্রসিংটি দখল করে নেওয়ার পর সেটি বন্ধ করে দেয়। প্রতিবাদে মিশরও ক্রসিংয়ের তাদের পাশের অংশটি বন্ধ করে দেয়।
যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্ত অনুযায়ী ক্রসিংটি খুললেও এর ব্যবস্থাপনায় জটিলতা রয়ে গেছে। ইসরাইলি বাহিনী ফিলিস্তিনি সশাসন কর্তৃপক্ষকেও (পিএ) এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে এর ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব ছেড়ে দিতে রাজি হয়নি। তাদের বদলে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তাদের সঙ্গে এর আগে দায়িত্বপালন করা গাজার ফিলিস্তিনিদের ক্রসিংটির কর্মী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হবে। তবে তাদের পিএ-র পরিচয় চিহ্নবাহী ব্যাজ পরার অনুমতি দেওয়া হবে না বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে আন্তর্জাতিক এক বার্তা সংস্থাকে জানিয়েছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) এক কূটনীতিক। ২০০৭ সালের আগের মতো ইইউয়ের পর্যবেক্ষকরাও ক্রসিংটিতে উপস্থিত থাকবেন।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর থেকে গাজা উপত্যকায় ইহুদিবাদী ইসরাইলের ১৫ মাসের অবিরাম বোমাবর্ষণ ও স্থল অভিযানে গাজার স্বাস্থ্য খাত ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বেশিরভাগ হাসপাতালেরই চিকিৎসা দেওয়ার মতও পরিস্থিতি নেই। ইসরাইলের বোমাবর্ষণ এবং স্থল আক্রমণে এক লাখ ১০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন। গুরুতর আহত হাজার হাজার ফিলিস্তিনি যথাযথ চিকিৎসার অভাবে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
Leave a Reply