19 Feb 2025, 11:11 pm

পানির ন্যায্য হিস্যার দাবীতে তিস্তাপাড়ে মশাল জ্বালিয়ে লাখো মানুষের প্রতিবাদ

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা থেকে বঞ্চিত উত্তরাঞ্চলের মানুষ ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে।

প্রতিবাদ আর ক্ষোভের আগুনে মশাল প্রজ্জ্বলন করে তিস্তা অববাহিকাজুড়ে প্রতিবাদ জানিয়েছে তিস্তাপাড়ের কয়েক লাখ মানুষ।

মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৮টার দিকে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের ৪৮ ঘণ্টার কর্মসূচির অংশ হিসেবে রংপুরের পাঁচ জেলার ১১টি পয়েন্টে একযোগে তারা মশাল প্রজ্জ্বলন করেন।

এসময় বিক্ষুব্ধ তিস্তাবাসীর কণ্ঠে ‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’, ‘পানি আগ্রাসন মানি না মানব না’, ‘পানির ন্যায্য হিস্যা চাই-দিতে হবে দিতে হবে’, ‘তিস্তা মহাপরিকল্পনার কাজ শুরু কর-করতে হবে’, ডাক দিয়েছেন দুলু ভাই-জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই’ সহ বিভিন্ন শ্লোগান শোনা যায়।

কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া তিস্তাপাড়ের ক্ষতিগ্রস্ত মানুষেরা একতরফাভাবে পানি প্রত্যাহার করে তিস্তাকে শুকিয়ে মারার জন্য ভারতকে পানি আগ্রাসী বলে দাবি করেন। তারা তিস্তা মহাপরিকল্পনার কাজ শুরু করার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করে পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারসহ বিএনপির প্রতি আহ্বান জানান।

এখন তিস্তা বিস্তৃত ১১টি পয়েন্টে চলছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা আয়োজন। এর আগে, জনতার গণসমাবেশে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তৃতা দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

তিনি বলেন, প্রতিবেশী দেশ ভারত যদি তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা না দেয় বা দিতে যদি দেরি করে, তিস্তা চুক্তি করতে অনীহা দেখায় তাহলে দেশ ও জনগণের স্বার্থে জনগণকে বাঁচাতে, কৃষিকে বাঁচাতে, কৃষককে বাঁচাতে, নদী বাঁচাতে, নাব্যতা রক্ষা করতে তিস্তা সমস্যার সমাধানের জন্য আমাদেরকেই আমাদের বাঁচার পথ খুঁজে নিতে হবে। দেশীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে সব সম্ভাব্য বিকল্পকে কাজে লাগাতে হবে। পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় করতে জাতিসংঘসহ সংশ্লিষ্ট সব আন্তর্জাতিক ফোরামে জোরালোভাবে বাংলাদেশের দাবি তুলে ধরতে হবে। একইসঙ্গে প্রতিবেশী দেশের সঙ্গেও আমাদেরকে কূটনৈতিকভাবে আলোচনা শুরু করতে হবে। আমরা মনে করি, আন্তর্জাতিক উদ্যোগের অংশ হিসেবে আর সময়ক্ষেপণ না করে বাংলাদেশকে ১৯৯২ সালের ওয়াটার কনভেনশন এবং ১৯৯৭ সালের জাতিসংঘ পানিপ্রবাহ কনভেনশনে স্বাক্ষর করা জরুরি হয়ে পড়েছে।

এদিকে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক ও বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু বলেন, দীর্ঘদিন ধরে তিস্তা নদীবেষ্টিত লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, রংপুর ও গাইবান্ধার মানুষ পানি বৈষম্যের শিকার হয়েছে। জুলাই বিপ্লবের মধ্য দিয়ে আমরা বাকস্বাধীনতা পেয়েছি। রংপুরের মানুষ তিস্তা মহাপরিকল্পনা নিয়ে জেগে উঠেছে। তিস্তা পানি নিয়ে ভারতীয় আগ্রাসন ও বৈষম্যের বিষয়টি গোটা বিশ্ববাসীকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন যদি আমাদের দাবি আদায় না হয় তাহলে আগামীতে পুরো উত্তরাঞ্চল অচল করে দেওয়ার মতো বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

এর আগে, সকালে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নসহ পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ের দাবিতে গণপদযাত্রা শুরু করে তিস্তা রক্ষা আন্দোলন কমিটি। এ পদযাত্রায় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীসহ তিস্তাপাড়ের সর্বস্তরের মানুষ অংশ নিয়েছেন। গণপদযাত্রাটি লালমনিরহাট প্রান্তের তিস্তা ব্রিজ থেকে শুরু হয়ে রংপুরের কাউনিয়া বাজার প্রান্তে গিয়ে শেষ হয়।

এদিকে আজ বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) ভোর ৬টায় আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হয় ৪৮ ঘণ্টার লাগাতার কর্মসূচি। সোমবার সকাল থেকে শুরু হয়েছিল এই লাগাতার কর্মসূচি। ‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’ শ্লোগানে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন এ কর্মসূচি দেয়।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • Visits Today: 1689
  • Total Visits: 1601948
  • Total Visitors: 4
  • Total Countries: 1702

আজকের বাংলা তারিখ

  • আজ বুধবার, ১৯শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ ইং
  • ৭ই ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (বসন্তকাল)
  • ২০শে শা'বান, ১৪৪৬ হিজরী
  • এখন সময়, রাত ১১:১১

Archives

MonTueWedThuFriSatSun
     12
17181920212223
2425262728  
       
15161718192021
293031    
       
  12345
2728     
       
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
31      
  12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930   
       

https://youtu.be/dhqhRb9y018