অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : বাংলাদেশের জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচএম এরশাদের মৃত্যুর পরে দলের নেতৃত্ব নিয়ে যে টানাপোড়েনের শুরু হয়েছিল তা এখনো মেটেনি পুরোপুরি।
ভাবি রওশন এরশাদ আর দেবর জিএম কাদেরের মধ্যে রাজনৈতিক সম্পর্কের দ্বন্দ চলছিল ঢিমে তালেই। তবে প্রায় ৫ মাসের চিকিৎসা শেষে ব্যাংকক থেকে দেশে ফিরেছেন জাতীয় পার্টির চিফ প্যাট্রন ও সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ। তার দেশে ফিরে আসাকে কেন্দ্র করে ফের চাঙা হয়েছেন তার অনুসারীরা। এমনকি চেয়ারম্যান জিএম কাদেরপন্থি প্রভাবশালী কয়েকজন নেতাও অবস্থান পরিবর্তন করে ভিড়েছেন রওশন এরশাদের ছায়াতলে।
অনুসারীদের হঠাৎ বাঁক বদলে জাতীয় পার্টিতে জিএম কাদেরের অবস্থান কিছুটা হলেও দুর্বল হয়েছে বলে মনে করছেন দলটির শীর্ষ পর্যায়ের কয়েকজন নেতা। এছাড়া হাইকোর্টে মামলা নিয়েও জটিলতায় আছেন তিনি। ফলে ওই শীর্ষ নেতাদের ধারণা, রওশন এরশাদের সঙ্গে সমঝোতায় যাওয়ার পথে হাঁটবেন জিএম কাদের। একইভাবে দেশে ফেরার পর রওশন এরশাদের বক্তব্যেও ছিল নরম সুর। তারা উভয়েই চাচ্ছিলেন একসঙ্গে বসে বিভ্রান্তি ও ভুল বোঝাবুঝি দূর করবেন।
এমন পরিস্থিতিতে ১৩ ডিসেম্বর গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ এবং জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের। এ বৈঠকের ফলে তাদের মধ্যকার দুরত্ব কমে আসবে বলেই মনে করছেন দলটির বিভিন্ন স্তরের নেতারা। তবে এই সমঝোতা এমনি এমনি নয়, তৃতীয় কোনো পক্ষের হস্তক্ষেপে হচ্ছে বলে মনে করছেন কেউ কেউ।
জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য এটিইউ তাজ রহমান বলেছেন, এটা নিশ্চয় দলের রাজনীতির জন্য আশির্বাদ। রওশন এরশাদের হঠাৎ করে সম্মেলন ডাকাকে কেন্দ্র করে জাতীয় পার্টির মধ্যে যে অস্থিরতা তৈরি হয়েছিল এখন তা কেটে যাবে। একই সাথে বিরোধীদলের নেতা ও সরকার প্রধানের আলোচনাতেও জাতীয় রাজনীতির জন্য সুখকর বার্তার আশা করেন এই জাপা নেতা।
জাতীয় পার্টি ও বিরোধীদলীয় নেতার মুখপাত্র কাজী মামুনুর রশীদ মনে করেন, এ বৈঠকে রাজনীতির মাঠে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উম্মোচিত হবে।
দলটির কো চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা বলেন, জাতীয় পার্টি অতীতের সব বিভেদ ভুলে এক ও অভিন্ন লক্ষ্যে আগামী দিনে এগিয়ে যাবে, দেশের মানুষের জন্য কাজ করবে। রওশন এরশাদ ও জিএম কাদেরের একসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের ফলে তাদের বিরোধ কমে যাবে এবং দলটি নতুন করে চাঙ্গা হবে বলে মনে করছেন অনেক রাজনীতিবিদ। রাজনীতির পরিবেশও ফিরবে বলে মনে করছেন দলটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।
Leave a Reply