অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর পেনশন সংস্কার নিয়ে উত্তাল ফ্রান্স। এমনকি পার্লামেন্টেও হচ্ছে প্রবল প্রতিবাদ। ফরাসি এই প্রেসিডেন্ট পেনশন পাওয়ার বয়স ৬২ বছর থেকে বাড়িয়ে ৬৪ বছর করতে বদ্ধপরিকর। আর এর বিরুদ্ধেই কার্যত বিক্ষোভ চলছে।
প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর প্রস্তাব নিয়ে পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে ভোটাভুটি হওয়ার কথা ছিল। সেখানে বামপন্থিসহ ম্যাক্রোঁ-বিরোধীরা প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট দিয়ে তা হারানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। এই পরিস্থিতিতে ম্যাক্রোঁ একের পর এক বৈঠক করতে থাকেন।
তারপর তিনি সিদ্ধান্ত নেন, সরকার বিশেষ সাংবিধানিক ক্ষমতা প্রয়োগ করবে। ভোটাভুটি ছাড়াই পার্লামেন্টে বিল পাস করানো হবে।
প্রধানমন্ত্রী যখন পার্লামেন্টে এই ঘোষণা করছেন, তখন বামপন্থিরা স্লোগান দিতে থাকে, ‘সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে’। কিছু এমপি খুব জোরে জাতীয় সঙ্গীত গাইতে থাকেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, পেশনপ্রাপ্তদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত করতে চায় না সরকার। তাই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এরপরই ট্রেড ইউনিয়নগুলো বিক্ষোভ তীব্র করার সিদ্ধান্ত নেয়। হাজার হাজার বিক্ষোভকারী শহরের কেন্দ্রস্থলে পৌঁছান। বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। এএফপি জানাচ্ছে, জনতা পার্লামেন্টের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করে।
বিক্ষোভভকারীদের মোকাবিলায় পুলিশ কাঁদানে গ্য়াস ব্যবহার করে। এমনকি জলকামান ব্যবহারের পাশাপাশি বিক্ষোভকারীদের ওপর লাঠিচার্জও করা হয়।
এএফপি জানাচ্ছে, পুলিশ আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে। কিন্তু ফ্রান্স ইনফোকে পুলিশের সূত্র জানিয়েছে, ২১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রায় ৬ হাজার মানুষ বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন। তারা রাস্তায় কাঠ ফেলে আগুন ধরিয়ে দেন। পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথরও নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে।
কিছুক্ষণের মধ্যেই ফ্রান্সের অন্য শহরেও বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
মূলত রাজকোষে যাতে আরও অর্থ আসে তার ব্যবস্থা করার জন্যই ম্যাক্রোঁ পেনশন পাওয়ার বয়স আরও দুই বছর বাড়াতে চাইছেন। সরকারি সূত্রের দাবি, এই ব্যবস্থা না নিলে আর্থিক পরিস্থিতি সামলানো যাবে না। সরকার ঘাটতি সামলাতে পারবে না।
কিন্তু বিক্ষোভকারীদের দাবি, এটা সরকারের নীতির ব্যর্থতা। সমীক্ষায় দেখা গেছে, প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষ এই প্রস্তাবের বিরোধী। ইউনিয়নগুলো এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে একদিনের ধর্মঘটের ডাক দিচ্ছে। সরকার সিদ্ধান্ত বদল না করলে তারা ২৩ মার্চ ধর্মঘট পালন করবে।
পার্লামেন্টে এখন ম্যাক্রোঁর দলের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই। বিল পাস করার জন্য তাদের রক্ষণশীলদের ভরসায় থাকতে হয়। রক্ষণশীলরা এই সিদ্ধান্ত নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত। বামপন্থিরা বিরোধী। তাই বিল পাস করাতে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন ম্যাক্রোঁ। সেজন্যই তিনি বিশেষ ক্ষমতা প্রয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
Leave a Reply