অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : বরগুনার বেতাগীতে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) রাস্তার কয়েক হাজার ইট চুরির অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক বিএনপি নেতা ও এক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে। চুরির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে ওই ইউপি সদস্য মাসুদ আলম মৃধাসহ তিনজনকে কারাগারে পাঠিয়েছে বেতাগী থানা পুলিশ। এ ঘটনার পর এলাকা থেকে পালিয়েছেন অভিযুক্ত ওই বিএনপি নেতা সিদ্দিকুর রহমান।
অভিযুক্ত সিদ্দিকুর রহমান উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক ইউপি সদস্য।
তিনি হোসনাবাদ ইউনিয়নের সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য মুক্তা বেগমের স্বামী। এর আগে ২০২১ সালের জুলাই মাসে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে দল থেকে বহিষ্কার করা হয় সিদ্দিকুর রহমানকে। তিন মাস পর তার বহিষ্কারাদেশ তুলে নেওয়া হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, হোসনাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের সামনে রাস্তার পুরনো ইট রাখা হয়।
রাতের আঁধারে বিএনপি নেতা সিদ্দিক ও স্থানীয় একটি চক্র মিলে এসব ইট বিক্রির উদ্দেশ্যে সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় এলাকাবাসী দুজনকে হাতেনাতে আটক করে। বিষয়টি জানাজানি হলে কৌশলে পালিয়ে যান অভিযুক্ত বিএনপি নেতা সিদ্দিক। এ ঘটনায় হোসনাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শৈলেন চন্দ্র রায় বাদী হয়ে চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
পরে ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত হোসনাবাদ ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মাসুদ আলম, জালাল খলিফা ও রিয়াজ সরদারকে গ্রেপ্তার করে মঙ্গলবার কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।
এ ছাড়া তাদের বিরুদ্ধে একই সড়কের বন বিভাগের রোপিত ২৩টি তালগাছ ও বেশ কয়েকটি আকাশমণিগাছ কেটে নেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় আরো একটি সূত্র জানায়, দলীয় ক্ষমতাকে ব্যবহার করে স্ত্রীকে প্যানেল চেয়ারম্যান বানিয়ে অপকর্মের রাজত্ব তৈরি করেছেন সিদ্দিকুর রহমান। বিভিন্ন ধরনের ভাতার নামে অর্থ আদায়সহ খাসজমি দখল করে দোকান ও বসতবাড়ি নির্মাণসহ নানা অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
তবে ইট বিক্রির বিষয়ে সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘রাস্তার ইট চুরি করে বিক্রি করা হয়নি।
উপজেলা বিএনপির একটি গ্রুপ আমাদের কোণঠাসা করতে ষড়যন্ত্রমূলক মামলাটি করেছে।’
বেতাগী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান মনির বলেন, ‘চুরি করে বিক্রি করা ইটের কিছু পরিমাণ পুলিশ উদ্ধার করেছে এবং স্থানীয় এক ব্যক্তির জিম্মায় রাখা হয়েছে। চুরির ঘটনায় চারজনকে আসামি করে মামলা রুজু হয়েছে। এদের মধ্যে তিনজনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামি পলাতক থাকায় তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। তবে তাকে গ্রেপ্তারে পুলিশের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. বশির গাজী বলেন, ‘সরকারি রাস্তার ইট চুরির ঘটনায় সব ধরনের আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।’
Leave a Reply