অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা নদী বিধৌত একটি দেশ বাংলাদেশ। যেখানকার মানুষ খুবই উৎসবপ্রিয়। এদেশে নানা ধরনের উৎসব-পার্বণে মেতে উঠে জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সবাই। বিশেষ করে খেলাধুলার সময় তো আবেগ আর অনূভূতির আতিশয্যে মেতে থাকে কিশোর তরুণ থেকে বয়োবৃদ্ধরাও।
এর মধ্যে বিশ্বকাপ ফুটবল তো তাদের আরেক উন্মাদনার নাম। কিন্তু দুর্ভাগ্য হল এই উন্মাদনার খেসারতে জীবন গেল ১২ জন মানুষের। ফুটবল নিয়ে তর্ক-বিতর্কের জের ধরে সংঘর্ষে, পতাকা টানাতে গিয়ে ছাদ থেকে পড়ে, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে কিংবা খেলা দেখার সময় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বাংলাদেশে মারা গেছেন ১২ জন। যাদের বেশির ভাগই কিশোর ও তরুণ।
এদিকে ফুটবল নিয়ে তর্ক-বিতর্কের জেরে বিভিন্ন জেলায় সংঘর্ষে এ পর্যন্ত আহত হয়েছেন অন্তত ২৭ জন। হতাহতদের সবাই বিশ্ব ফুটবলের প্রতিদ্বন্দ্বী দুই দল ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার সমর্থক।
বিশ্বকাপ শুরুর আগের সপ্তাহ থেকে কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত গত এক মাসের বিভিন্ন গণমাধ্যমের সংবাদ ও তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এ সময়ের মধ্যে দেশের তিন জেলায় খুন হয়েছেন তিনজন, সমর্থন করা দলের পতাকা টাঙাতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ও ছাদ থেকে পড়ে মারা গেছেন ৭ জন এবং খেলা দেখার সময় উত্তেজিত হয়ে অসুস্থ হওয়ার পর দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া খেলাকে কেন্দ্র করে লালমনিরহাট, ভোলাসহ ছয়টি জেলায় ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ ও মারামারি হয়েছে।
এ বিষয়ে অপরাধ বিশ্লেষক অধ্যাপক হাফিজুর রহমান কার্জন বলেন, বাংলাদেশিরা বরাবরই আনন্দ ও উৎসবপ্রিয়। কিন্তু এমন দুর্ঘটনা কোনোভাবেই কাম্য নয়। যা সামাজিক বিশৃঙ্খলা তৈরিতে আরো অনুসঙ্গ হিসেবে কাজ করতে পারে বলে শঙ্কা এ অপরাধ বিশ্লেষকের।
আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপকে ড. নেহাল করিম বলেছেন, যখন সমাজে কর্মতৎপরতা কম থাকে তখন মানুষে তুলনামূলক কম উৎপাদনশীল কাজে সম্পৃক্ত থাকে। সামাজিক ও রাজনৈতিক নানা কারণে মানুষের মধ্যে ধৈর্য, সহনশীলতা, সহমর্মিতা কমে যাওয়ার ফলে সামাজিক সংঘাতসহ নানা অপতৎপরতায় জড়িয়ে পড়ছে কিছু উশৃঙ্খল মানুষ। তবে এখনো আবেগতাড়িত এমন অবাস্তবিক কাজ থেকে মানুষকে সরে আসার আহ্বান জানান সমাজবিজ্ঞানী ড. নেহাল করিম।
Leave a Reply