অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : বাংলাদেশের আটটি জেলার ৫০ টি উপজেলার ৩৫৭ টি ইউনিয়ন বন্যাকবলিত হয়েছে। এসব জেলার প্রায় সাড়ে চার লাখ পরিবার বন্যায় পানিবন্দি হয়ে আছেন। ফেনীর এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে বন্যার পানিতে ডুবে ২জন মারা গেছেন।
আজ (বৃহস্পতিবার) দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী রেজা।
তিনি বলেন, ‘আজ দুপুর ১টা পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুসারে, এখন পর্যন্ত বন্যা আক্রন্ত জেলার সংখ্যা আটটি। জেলাগুলো হলো-ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া।’
তিনি আরও বলেন, আটটি জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা ২৯ লাখ চার হাজার ৯৬৪ জন। এখন পর্যন্ত ফেনীতে ও ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে দুইজন মারা গেছেন।’
এক হাজার ৫৩৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আজ দুপুর দেড়টা পর্যন্ত ৭৫ হাজার ৬৭৮ জন আশ্রয় নিয়েছেন। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে প্রায় সাড়ে সাত হাজার গবাদি পশু আশ্রয় নিয়েছে। আটটি জেলাতে মোট ৪৪৪টি মেডিকেল টিম কাজ করছে। ফেনীতে সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনী কাজ করছে।’
বন্যাপ্লাবিত জেলাগুলোতে জেলা প্রশাসককে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক, সেনাবাহিনী, মেডিকেল টিম ও অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজের জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এ সময় জানানো হয়, সেনাবাহিনী থেকে ১৬০ জন সদস্য ৪০টি উদ্ধারকারী যান ফেনীতে পাঠানো হয়েছে। একটি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপন করা হয়েছে। নৌবাহিনীর ৭১ জন সদস্য ও আটটি উদ্ধারকারী যান কাজ করছে। এছাড়া বিজিবিসহ অন্যান্যরা নৌযান নিয়ে উদ্ধার কার্যক্রম চালাচ্ছে।
মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং তৎসংলগ্ন উজানে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া সংস্থাগুলো। ভারী বৃষ্টি ও ঢলে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদীগুলোয় পানি বাড়ছে।
বাঁধ খুলে আকস্মিক বন্যা সৃষ্টির প্রতিবাদে তিন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ : এদিকে, ভারতের সঙ্গে পানিচুক্তির ন্যায্য হিস্যার দাবি এবং ডম্বুর বাঁধ খুলে দিয়ে বাংলাদেশে আকস্মিক বন্যা সৃষ্টির প্রতিবাদে গতকাল বুধবার রাতে রাজশাহী ও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় এবং সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।
এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘ভারতের আগ্রাসন, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘আমার নদীর অধিকার, ফিরিয়ে দাও দিতে হবে’, ‘পেতে চাইলে মুক্তি, ছাড়ো ভারত ভক্তি’, ‘আমার দেশ ডুবল কেন, জবাব দে, জবাব দে’, ‘ভারতের দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘তুমি কে আমি কে, আবরার আবরার’, ‘কে মেরেছে কে মেরেছে, স্বৈরাচার স্বৈরাচার’ প্রভৃতি স্লোগান দেন।
বাংলাদেশের নদীর পানির অধিকার রক্ষা করতে প্রয়োজনে ‘লংমার্চ টু ফারাক্কা বাঁধ’ কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মেহেদী সজীব।
Leave a Reply