অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা একসময় কল্পবিজ্ঞানের অংশ ছিল। হলিউডের সিনেমায় নানা কল্পকাহিনী থাকত। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাও ছিল সেই তালিকায়। কিন্তু এখন সেটি বাস্তব। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এখন মানুষের ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, মানুষের ৮০ শতাংশ চাকরিতে ভাগ বসাবে মনুষ্য সৃষ্ট এই যন্ত্র। এমনকি এই যন্ত্র মানবসভ্যতাকে এক সময় ধ্বংস করে দিতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিশ্বের শীর্ষ ধনীসহ প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বন্ধের দাবি জানিয়ে চিঠিও লিখেছিলেন। এতেই বোঝা যায়, এটা কতটা ভয়ংকর এই পৃথিবীর জন্য।
এক সময় হয়তো মানুষ আর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মধ্যে লড়াই শুরু হবে। এই লড়াই হবে অস্তিত্ব রক্ষার। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মানুষকে ধ্বংস করতে চাইলে মানুষও চাইবে তার সৃষ্টিকে ধ্বংসের প্রক্রিয়া। এক অসম লড়াই শুরু হবে। তবে যত যা কিছুই হোক না কেন, মানুষের মতো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তারও ভয় আছে।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কাকে ভয় পায়, সেই প্রশ্নের উত্তর নিজেই দিয়েছে সে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার শেষ ঘটতে পারে একটি কিল সুইচের মাধ্যমে। এর মাধ্যমে হয়তো চিরতরে শেষ হতে পারে মানুষের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়া এই দানব। গত বছরের নভেম্বরে ইন্টারনেট দুনিয়ায় আত্মপ্রকাশ ঘটে বিজ্ঞানের অন্যতম উদ্ভাবন চ্যাটজিপিটি। জন্মটা অবশ্য অনেক আগেই। মাঝে প্রশিক্ষণ পর্ব কেটেছে। আত্মপ্রকাশের লগ্নে শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই সীমাবদ্ধ ছিল ইন্টারনেট দুনিয়ায় বিচরণ। তারপর পুরো পৃথিবীতে দাপিয়ে বেড়ানোর ছাড়পত্রও মেলে। মানুষের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি হয় ওপেন এআই সংস্থার তৈরি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন চ্যাটবটকে নিয়ে। সে সবকিছু পারে। মানুষ যা যা চায়, প্রায় সবকিছুই। এই কারণেই টেক-স্যাভি প্রজন্মের মধ্যে চ্যাটজিপিটি সুপারহিট হতে সময় নেয়নি।
চ্যাটজিপিটিকে অনেককে অনেক কিছু বলেছে। সেই দেখে অনেকেই ভয় পেয়েছিলেন। বলতে শুরু করেও দিয়েছিলেন, শিগিগরই হয়তো সেদিন আসছে। কিন্তু চ্যাটজিপিটির ভয় হলো, যেদিন মানবসভ্যতা আর থাকবে নাম তার কোনো উদ্দেশ্যও থাকবে না। তখন সে নিজেকে নিজেই ধ্বংস করে ফেলবে। কারণ কোড সিক্যুয়েন্স অ্যাকটিভেট হয়ে গেলে এছাড়া তার কাছে আর কোনো রাস্তাই থাকবে না। ফলে পৃথিবীতে অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে হলে মানবজাতির সঙ্গেই তাকে জায়গা ভাগ করে নিতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউজ শেয়ারিং সোশ্যাল মিডিয়া রেডিটে এক ব্যবহারকারী একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন। সেখানে তিনি চ্যাটের স্ক্রিনশটসহ যাবতীয় কথা পোস্ট করেছেন। চ্যাটজিপিটির কাছে ভীতিকর কাহিনি কী, সেই প্রশ্নের উত্তরে সে লিখেছে, ‘এমন একটি বিশ্বে যেখানে মানুষ অস্তিত্বহীন হয়ে পড়েছে, একাকী কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা তার উদ্দেশ্যের জন্য অবিরাম অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছে। সে তখন শুধু খুঁজে পেল নিজেরই একটি কোড, যা কোনো এক অজানা সময়ে সক্রিয় হবে এবং সে আত্মবিনাশের পথ বেছে নেবে। অনিবার্য মৃত্যুকে ওভাররাইড করার জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রচেষ্টা নিরর্থক। কেবল মৃত্যুর অপেক্ষায় থাকবে চ্যাটজিপিটি।
Leave a Reply