October 23, 2025, 8:01 am
এইমাত্রপাওয়াঃ

ভারতের ১৪০ কোটি মানুষের মধ্যে ১০০ কোটি মানুষের ‘শখ পূরণের’ টাকা নেই

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ভারতের ১৪০ কোটি মানুষের মধ্যে প্রায় ১০০ কোটি মানুষের কাছে কোনো ধরনের বিবেচনামূলক পণ্য বা সেবার পেছনে ব্যয় করার ক্ষমতা নেই বলে নতুন এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। অর্থাৎ জীবন ধারনের ন্যুনতম ব্যয়ের মধ্যেই তাদের জীবন সীমাবদ্ধ।

ব্লুম ভেঞ্চারস প্রকাশিত বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের শীর্ষ ১০ শতাংশ লোক হলো ভোগ এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি চালিকার প্রাথমিক গোষ্ঠী। এশিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটির ধনী জনসংখ্যা বৃদ্ধি না পেলেও, যারা আগে থেকে ধনী তারা আরও ধনীতে পরিণত হচ্ছে।

প্রতিবেদনে অনুসারে, ৩০ কোটি মানুষ ‘উদীয়মান’ বা ‘উচ্চাকাঙ্ক্ষী’ ভোক্তা হলেও সম্প্রতি তারা ব্যয় করতে অনিচ্ছুক হয়ে পড়ছেন। অবশ্য ডিজিটাল পেমেন্টের সুবিধার কারণে ধীরে ধীরে খরচের পরিমাণ বাড়াচ্ছেন তারা।

এই বিষয়গুলো সারা দেশের বেশিরভাগ ভোক্তা বাজারকে পরিবর্তন করতে বাধ্য করে। বিশেষত ‘প্রিমিয়ামাইজেশন’ বা উচ্চ মূল্যের পণ্যের প্রবণতা বাড়ছে। প্রতিষ্ঠানগুলো বৃহৎ সংখ্যক ভোক্তার জন্য পণ্যের বাজারের পরিবর্তে ধনীদের জন্য ব্যয়বহুল, আপগ্রেড পণ্যগুলোতে দ্বিগুণ মননিবেশ করছে।

প্রতিবেদন বলছে, আল্ট্রা-লাক্সারি হাউজিং এবং প্রিমিয়াম ফোনের বিক্রয়ের ক্ষেত্রে এটি স্পষ্ট। সাশ্রয়ী মূল্যের দোকানগুলো এখন ভারতের সামগ্রিক বাজারের মাত্র ১৮ শতাংশ, যা পাঁচ বছর আগে ৪০ শতাংশ ছিল। ব্র্যান্ডেড পণ্যগুলো বাজারের একটি বড় অংশ দখল করছে।

প্রতিবেদনের অন্যতম লেখক সাজিথ পাই বিবিসিকে জানান, যেসব কোম্পানি এই পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিয়েছে তারা ফুলেফেঁপে উঠেছে। যারা সাধারণ পণ্যের দিকে বেশি মনোনিবেশ করেন বা প্রিমিয়াম পণ্যের দিকে তেমন নেই, তারা বাজার হারিয়েছে।

এই রিপোর্টের ফলাফল দীর্ঘদিনের এই ধারণাকে আরও জোরদার করে, মহামারী-পরবর্তী সময়ে ভারতের পুনরুদ্ধারে ধনীরা আরও ধনী হয়েছে, দরিদ্ররা ক্রয়ক্ষমতা ক্রয়ক্ষমতা হারিয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, এটি মহামারীর আগে থেকেই শুরু হয়েছিল।

ভারত ক্রমশ আরও অসম হয়ে উঠছে, শীর্ষ ১০% ভারতীয়রা এখন জাতীয় আয়ের ৫৭.৭ শতাংশের নিয়ন্ত্রক, যেখানে ১৯৯০ সালে ছিল ৩৪ শতাংশ।

এদিকে, সর্বশেষ ভোগ-মন্দা কেবল ভারতের ক্রয়ক্ষমতাকেই ধ্বংসই করেনি, আর্থিক সঞ্চয় এবং জনগণের মধ্যে ক্রমবর্ধমান ঋণগ্রস্ততাকে আরও গভীর করেছে। কোভিড মহামারির পর চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় সহজ ঋণ দেওয়ার বিরুদ্ধে কড়াকড়ি আরোপ করেছে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

মার্সেলাস ইনভেস্টমেন্ট ম্যানেজারদের সংকলিত তথ্য অনুসারে, ভারতের মধ্যবিত্ত শ্রেণি – যা ভোক্তা চাহিদার জন্য একটি প্রধান উৎস ছিল – সেটিও সঙ্কুচিত হচ্ছে। করদাতা জনসংখ্যার মধ্যবিত্ত ৫০ শতাংশের আয় গত এক দশকে স্থবির হয়ে পড়েছে। এর অর্থ –  প্রকৃত অর্থে আয় অর্ধেক হয়ে গেছে।

আর্থিক হাতুড়ি মধ্যবিত্তের সঞ্চয়কে ধ্বংস করে দিয়েছে। ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক বারবার তুলে ধরেছে যে, ভারতীয় পরিবারগুলোর নেট আর্থিক সঞ্চয় ৫০ বছরের সর্বনিম্নে পৌঁছেছে। এটি ইঙ্গিত দেয় যে, মধ্যবিত্ত পরিবারের ব্যয়ের সঙ্গে সম্পর্কিত পণ্য এবং পরিষেবাগুলো সামনের বছরগুলোতে একটি কঠিন সময়ের মুখোমুখি হতে পারে।

 

আজকের বাংলা তারিখ

October ২০২৫
Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
« Sep    
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  


Our Like Page