অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ভিয়েতনাম যুদ্ধকালে নিখোঁজ হওয়া ৭৪০ মার্কিন সেনার মরদেহ শনাক্ত করে তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ডিফেন্স পিওডব্লিউ–এমআইএ অ্যাকাউন্টিং এজেন্সির পরিচালক কেলি ম্যাককিগ। ভিয়েতনামের সহায়তায় এই দীর্ঘমেয়াদি অনুসন্ধান সফলভাবে পরিচালিত হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। খবর ভিয়েতনাম প্লাসের।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) ভিয়েতনামের রাষ্ট্রীয় নথিপত্র ও আর্কাইভ বিভাগের আওতাধীন ন্যাশনাল আর্কাইভস সেন্টার-৩ পরিদর্শনের সময় এক বিবৃতিতে ম্যাককিগ এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘ভিয়েতনামের নিরলস সহায়তায় এতজন নিখোঁজ মার্কিন সেনার পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে এবং এই কর্মসূচি যুক্তরাষ্ট্র-ভিয়েতনাম কৌশলগত অংশীদারত্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি হয়ে উঠেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘২০২৫ সাল একাধিক ঐতিহাসিক ঘটনার বর্ষপূর্তির বছর—ভিয়েতনাম পুনঃএকত্রিকরণের ৫০ বছর, ভিয়েতনাম-যুক্তরাষ্ট্র কূটনৈতিক সম্পর্কের ৩০ বছর এবং যুক্তরাষ্ট্রের নিখোঁজ সেনা অনুসন্ধান কার্যক্রমের ৪০ বছর পূর্তি।’
ম্যাককিগ জানান, ১৯৭৩ সালের প্যারিস শান্তিচুক্তির পরই ভিয়েতনামের পক্ষ থেকে নিখোঁজ সেনাদের খোঁজে একটি বিশেষ সংস্থা গঠন করা হয় এবং সেই সময় থেকেই তারা যুক্তরাষ্ট্রকে সহযোগিতা করে আসছে। এই মানবিক উদ্যোগের জন্য মার্কিন সেনাদের পরিবারগুলোর পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।
তবে এখনো ভিয়েতনাম যুদ্ধে নিখোঁজ ১ হাজার ১৫৭ মার্কিন সেনার কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি বলে স্বীকার করেছেন ম্যাককিগ। তার মতে, তথ্যের অভাব অনুসন্ধান প্রক্রিয়াকে কঠিন করে তুলছে। তিনি বলেন, ‘তথ্য সংগ্রহ হলো এই অনুসন্ধান প্রক্রিয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। সঠিক তথ্য অনুসন্ধানকারী দলকে যথাযথ স্থানে পৌঁছাতে সহায়তা করে।’
ভিয়েতনামের স্টেট রেকর্ডস অ্যান্ড আর্কাইভস বিভাগের পরিচালক ডাং থান টুং জানান, শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, ফ্রান্সের সঙ্গেও এই সংস্থা ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে, যাতে নিখোঁজ সেনাদের পরিবারকে প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করা যায়। তিনি আরও বলেন, ‘তথ্য বিনিময় ও পারস্পরিক সহযোগিতা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।’
দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও, ভিয়েতনাম-যুক্তরাষ্ট্র যৌথ উদ্যোগে এই মানবিক অনুসন্ধান কার্যক্রম এখনো অব্যাহত রয়েছে। নিখোঁজদের শনাক্ত করতে তথ্য ও প্রযুক্তিনির্ভর প্রচেষ্টা বাড়ানোর পাশাপাশি পারস্পরিক কূটনৈতিক সম্পর্কও আরও জোরদার হচ্ছে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।