অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : মধ্য এশিয়ার পাঁচটি দেশের নেতাকে রাশিয়ার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি এমন এক সময় এই আহ্বান জানালেন যখন চীনও এই অঞ্চলে তার অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক প্রভাব দ্রুত বৃদ্ধি করছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এই খবর জানিয়েছে।
শুক্রবার (১০ অক্টোবর) তাজিকিস্তানের রাজধানী দুশানবেতে অনুষ্ঠিত এক শীর্ষ সম্মেলনে পুতিন বলেন, গত বছর কাজাখস্তান, উজবেকিস্তান, কিরগিজস্তান, তুর্কমেনিস্তান এবং তাজিকিস্তানের সঙ্গে রাশিয়ার মোট বাণিজ্য ছিল প্রায় ৪৫ বিলিয়ন ডলার।
তিনি এটিকে ‘ভালো ফলাফল’ বললেও উল্লেখ করেন যে, এই পরিমাণ বেলারুশের সঙ্গে রাশিয়ার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের তুলনায় অনেক কম, যদিও বেলারুশের জনসংখ্যা মধ্য এশিয়ার এই পাঁচটি দেশের মোট জনসংখ্যার একটি ক্ষুদ্র অংশ মাত্র। পুতিন আরও বলেন, বাণিজ্য বৃদ্ধির জন্য এখনও যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে।
১৯৯১ সাল পর্যন্ত সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ হিসেবে এই পাঁচটি দেশ মস্কোর অধীনে শাসিত ছিল, এবং রাশিয়া এখনও অঞ্চলটিকে তার প্রভাববলয়ের অংশ হিসেবে দেখে। তবে ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে মস্কোর মনোযোগ হ্রাস এবং চীনের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক প্রভাবের ফলে মধ্য এশিয়ায় রাশিয়ার অবস্থান কিছুটা দুর্বল হয়েছে।
যদিও লাখ লাখ মধ্য এশিয়ার অভিবাসী রাশিয়ায় কাজ করেন, যা দেশটির শ্রম ঘাটতি পূরণ করে এবং তাদের নিজ দেশে রেমিট্যান্স পাঠিয়ে অর্থনীতিকে সচল রাখে, তবুও গত বছর মস্কোর কাছে একটি হামলায় ১৪০ জনের বেশি নিহত হওয়ার পর (যেখানে সন্দেহভাজনদের বেশিরভাগই তাজিক নাগরিক), রাশিয়া অভিবাসী শ্রমিকদের ওপর কঠোরতা বাড়িয়েছে।
সম্মেলনের যৌথ ঘোষণায় মধ্য এশীয় দেশগুলো রাশিয়ার সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারত্ব আরও জোরদার করার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করেছে। নেতারা নতুন পরিবহন ও লজিস্টিক করিডর গঠনের পাশাপাশি সন্ত্রাসবাদ, অবৈধ অভিবাসন ও মাদকবিরোধী সহযোগিতা, এবং বাণিজ্যিক লেনদেন ব্যবস্থার উন্নয়নে ঐকমত্যে পৌঁছেছেন।
সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর থেকে রাশিয়া মধ্য এশিয়ার প্রভাব বজায় রাখতে চাইলেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীন ওই অঞ্চলে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক উপস্থিতি বাড়িয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে পুতিনের আহ্বানকে রাশিয়ার ঐতিহাসিক প্রভাব পুনর্নির্মাণের প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে।