ফারুক আহমেদ, মাগুরা জেলা প্রতিনিধি : মাগুরা জেলার শ্রীপুর উপজেলার ৩ নং শ্রীকোল ইউনিয়নের খামারপাড়া বাজারে বিএনপির লোকজন জোরপূর্বক ব্যবসায়ীদের কাছে থেকে খাঁজনা আদায় করার অভিযোগ উঠেছে।
বিশ্বস্ত গোপন সূত্রে জানা যায়, খামারপাড়া বাজার এলাকার সাবেক চেয়ারম্যান আশরাফপন্থির লোকজন শ্রীকোল গ্রামের মিকা মন্ডলের পুত্র মিলন মন্ডল (৪৫), জাকির মিয়ার পুত্র টিপু মিয়া (৪০), সিদ্দিক খানের পুত্র ইরান খান (৪০), রজব শেখের পুত্র বজলু শেখ (৩০), পূর্ব শ্রীকোল গ্রামের মহিউদ্দিন জোয়ারর্দারের পুত্র তোজ্জাম্মেল জোয়ার্দার (৬০), লাভলু, মকসেদের পুত্র জিল্লু, সাবেক মেম্বার মুকুল, দরিবিলা গ্রামের ইদ্রিস মোল্লার পুত্র রবি মিয়া (৪০), ইদ্রিস মিয়ার পুত্র হেমায়েত মিয়া (৩২), দাইরপোল গ্রামের শাহাদত মোল্লার পুত্র আমিরুল মোল্লা (৪০), টুপিপাড়া গ্রামের শামসেল মোল্লার পুত্রর রিপন মোল্লা (৩০), বারইপাড়া গ্রামের ওবায়দুল্লাহর পুত্র সাগর, বকুল মোল্লার পুত্র শামিম মোল্লা (৩০), টুপিপাড়া গ্রামের মৃত রুস্তম খানের পুত্র টুকু খান, সেলিম খান, আলিম খান সহ আরোও ২০-৩০ জন খামারপাড়া বাজার থেকে সন্ত্রাসী কায়দায় জোর করে ব্যবসায়ীদের কাছে থেকে জোরপূর্বক হুমকি ধামকি দিয়ে খাজনা আদায় করছে।

সরেজমিনে জানা যায়, ৩ নং শ্রীকোল ইউনিয়নের টুপিপাড়া গ্রামের মৃত শওকত মিয়ার পুত্র রবিউল মিয়া হার্ট ইজারাদার। গত ২০ মার্চ ২০২৫ তারিখে সরকারি বিধিমোতাবেক ২৭ লাখ ১০ হাজার ১০০ শত টাকায় হাট-বাজার ক্রয় করেছে। যেখানে সরকারি নিয়মে ভ্যাট, ট্যাক্স ও সিকিউরিটি সহ ৩৩ লাখ টাকার উপরে এক বছরের জন্য এবং গত পহেলা বৈশাখ ১৪ এপ্রিল সোমবার থেকে রবিউল মিয়ার খাঁজনা আদায়ের কথা কিন্তু জোরপূর্বক বিএনপি’র সাবেক চেয়ারম্যান আশরাফ তার লোকজন দিয়ে পূর্বের ভাবনা আদার আদায়ের রশিদের বহি প্রদর্শন করে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে মাছের বাজার, সাইকেল বাজার, পেয়াজ বাজার পাটবাজার, চাল বাজার সহ বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের কাছে থেকে খাঁজনা আদায় করে যাচ্ছে।

এ ব্যাপারে খামারপাড়া বাজারের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী সনাতন ট্রেডার্সের মনিরুল ইসলাম, মেসাস হাসান ট্রেডার্সের হাসান, পাট, গম ও ভুষি মাল ব্যবসায়ী বিশ্বজিৎ বিশ্বাস, পেঁয়াজের বস্তা ব্যবসায়ী লতিফ খা, পেঁয়াজ ব্যবসায়ী শমসের কাজী, মাছ বাজারের ব্যবসায়ী দিপু, বাবলু এদের কাছে জানা যায় সনাতন ট্রেডার্সের লালু বলে শামীম টাকা চেয়েছে মনে ৪ টাকা ও বস্তা প্রতি ৯ টাকা এবং হাট ইজারাদার না হলে কাউকে টাকা দিবো না। বিশ্বজিৎ বিশ্বাস জানাই লাভলু টাকা চেয়েছে পেঁয়াজ ক্রয় করলে খাঁজনা দিতে হবে। লতিফ খা বলে শামীম খাজনা নিয়ে গেছে আমার ভাড়াটিয়ার কাছ থেকে। হাসান জানায় শামীম ৮ শত টাকা নিয়ে গেছে আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে।

হাট ইজারাদার রবিউল মিয়ার আপন ভাই মিটুল মিয়া বলেন, সাবেক চেয়ারম্যান আশরাফের ভাতিজা তুফান, সাবেক মেম্বার মুকুল, তোজাম্মেল, হালিম খা, সেলিম খা আমাদের বাড়ি গিয়ে মেরে ফেলার হুমকি ধামকি দিচ্ছে। গতকাল ১লা বৈশাখ হার্ট জোরপূর্বক ভাবে কালেকশন করছে আমাদের লোকজন বের করে দিয়ে সাগর, জিল্লুর, তুফান, তোজাম্মেল ও আরো অনেক লোকজন দিয়ে হাট কালেকশন করে। ২০-২৫ জন লোকজন আমাকে বাড়িতে গিয়ে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি-ধমকি দিয়েছে আমি প্রশাসনের সহযোগিতা চাই এবং আমার ১০-১২ জন লোকজন নিয়ে হাটের খাঁজনা আদায় করতে চাই।
শ্রীকোল ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা আশরাফ জানান, খামারপাড়া বাজারের হাট উচ্চ মূল্য ক্রয় করেছে আওয়ামীলীগের রবিউল মিয়া তবে হাটের ইজারা গতকাল আদায় করা হয়নি। তিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইউএনওর কাছে এই হাটের সুষ্ঠু সমাধান চান।
৩ নং শ্রীকোল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও হাট-বাজার কমিটির সচিব কুতুবুল্লাহ হোসেন মিয়া জানান, বিএনপির দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এই খামারপাড়া বাজার থেকে হাট ইজারাদার রবিউল মিয়াকে তার লোকজনসহ বের করে দিয়ে আশরাফ জোয়ারর্দার বাজার থেকে ব্যবসায়ীদের কাছে থেকে টাকা আদায় করছে। বিষয়টি বাজার কমিটির সভাপতি ও শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাখী ব্যাণার্জী কে অবহত করা হয়েছে।
শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাখী ব্যাণার্জী জানান, খামারপাড়া হাটবাজারের বিষয়ে কোন অভিযোগ আসেনি, তবে হাট ইজারাদার বাদে যদি কেউ ইজারা তুলে থাকে সেটা অপরাধ এবং এবিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।