মাগুরা জেলা প্রতিনিধি : মাগুরা সদর উপজেলার হাজরাপুর ইউনিয়নের নন্দলালপুর গ্রামে বসতবাড়ির সরকারি টিউবওয়েলে বেড়া দেওয়া নিয়ে উভয় পক্ষের শরীকের মধ্যে মারামারি এবং এজাহার মামলা ও অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
মো: বাবর আলী মোল্যা, সাং-নন্দলালপুর, থানা-মাগুরা সদর,জেলা মাগুরা, সাং-নন্দলালপুর, থানা-মাগুরা, পিতা-মৃত আঙুল ওহেদ মোল্যা, সাং-নন্দলালপুর, থানা-মাগুরা সদর, জেলা- মাগুরা, মাগুরা সদর থানা অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, আসামী মো. রিয়াজুল মোল্যা (৪০), পিতা-মৃত মো: গোলাম রহমান মোল্যা, সাং-নন্দলালপুর, থানা-মাগুর সদর, জেলা-মাগুরা, উক্ত আসামী সম্পর্কে বাবর আলীর ভাতিজা। বাবর আলীর ভিটা বাড়ী জোর পূর্বক আত্মসাৎ করবার উদ্দেশ্যে তাকে এবং তার সহধর্মীনি মোছা: হালিমা খাতুন, উভয়ের উপরে কিল, ঘুষি, লাথি, চড় মারে। সর্বশেষ গত ইং-১০-০৯-২ ২৪ তারিখ বিকাল ৬:১৫ টার তার বাড়ীর উপর এসে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। বাবর আলী প্রতিবাদ করতে গেলে তাকে জীবন নাশের হুমকি দেয়।
মাগুরা সদর থানা এজাহার সূত্রে জানা যায়, বাদী রিয়া পারভীন ওরফে সোহানা (৩০), পিতা- মোঃ বাবর আলী মোল্যা, স্বামী- মোঃ আব্দুল কাশেম মোল্যা, সাং-দেড়ুয়া, মাগুরা সদর, আসামী হলো মুসা মোল্যা (৪৫) পিং-মৃত হবিবর মোল্যা, লালু (৫০) পিং-হেকমত মোল্যা, রিয়াজুল (৪০) পিতা-মৃত রহমত মোল্যা, জেসমিন (৩৮) স্বামী- রিজাউল, রেসমা (৩৬) পিং-মৃত রহমত মোল্যা, শরিফুল মোল্যা (৫০) পিং-মৃত-কাওছার মোল্যা,সাহেব আলী (৫০) পিং-ইছাহাক মোল্যা, রুপম (২৮) পিং-রেজাউল মোল্যা, সাইফুল মোল্যা (৩৮), পিং- রহমত মোল্যা ওরফে গোলাম রহমান, সর্বসাং-নন্দলালপুর মাগুরা সদর, মাগুরা। সোহানার পিতার সাথে বিবাদীদের জমিজমা নিয়ে বহুদিন পূর্ব হইতে দ্বন্ধ চলে আসতেছে।
সোহানার পিতার বাড়ীর সামনে একটি টিউবওয়েল আছে এবং তার পিতার বসতকারী লোকজনের ব্যবহারের জন্য টিউবওয়েল পাড় চারপাশে বেড়া দেওয়া ছিল। সেই বেড়া ভেঙ্গে যাওয়ার কারণে বেড়া মেরামতের কাজ করছিল স্বাক্ষীগণ হালিমা বেগম, বাবর আলী, শরিফুল, জোয়াদ, আব্দুর রহমান। সোহানার স্বামী ইটালি থেকে ২ লাখ টাকা পাঠায় গত বৃহস্পতিবার ১২ সেপ্টেম্বর ব্যাংক থেকে টাকা তুলে শুক্রবার ১৩ সেপ্টেম্বর তার পিতাকে জমি ক্রয়ের উদ্দেশ্যে পিতাকে টাকা দেওয়ার জন্য পিতার বাড়িতে যায়। গত ১৩-০৯-২০২৪ ইং তারিখ শুক্রবার সময় দুপুর ২ টার সময় পিতার বাড়ী গিয়ে দেখতে পায় আসামীরা তার পিতা-মাতা ও ভাইদের সঙ্গে বাগড়া বিবাদে লিপ্ত হয় এবং সোহানা আসামীদের ঝগড়া করতে নিষেধ করলে লালু মোল্লা বলে শালির মাতব্বরী করার সাধ মিটিয়ে দে। হুকুম পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মুসা মোল্লা তার হাতে থাকা চাইনিজ কুড়াল দিয়ে খুন করার উদ্দেশ্যে কোপ মারিলে উক্ত কোপ সোহানার মাথার ডান পাশে কপালের উপর লেগে হাড় মাংস কেটে গুরুত্বর রক্তাক্ত জখম হয় (৩/৪টি সেলাই লাগে)। লালু মোল্লা লোহার রড দিয়ে খুন করার উদ্দেশ্যে সোহানার ঘাড়ে সজোরে আঘাত করে এবং উক্ত আঘাতের পর সোহানা মাটিতে পড়ে গেলে রেসমা খাতুন তার ভ্যানিটি ব্যাগ নিয়ে চলে যায় যাহার মধ্যে ব্যাংক থেকে উত্তোলনকৃত টাকা সহ প্রয়োজনীয় অনেক কাগজপত্র ছিল। জেসমিন খাতুন তখন সোহানার গলার স্বর্নের ৮ আনা ওজনের চেইন এবং কানের দুল ৮ আনা ওজনের ছিড়ে নিয়ে যায়। শরিফুল মোল্লার হাতে থাকা লোহার রড দিয়ে সোহানার ডান পায়ে বারি মেরে গুরুত্বর জখম করে। রিয়াজুল মোল্লা তখন ঐ সুযোগে সোহানার গলা পাড়াইয়ে ধরে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করে। স্বাক্ষীগণ গ্রামের লোকজন এগিয়ে আসলে আসামীরা ভবিষ্যতে খুন জখমের হুমকি দিয়ে চলে যায় এবং বলে যে এই বিষয় নিয়ে কোন মামলা করলে গ্রামছাড়া করে দিবো। স্বাক্ষীগণ সোহানা খাতুনকে উদ্ধার করে মাগুরা মেডিকেল কলেজ ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করে।
১৪-০৯-২০২৪ ইং তারিখ শনিবার সকাল ৭ টার সময় আসামীরা পুনরায় টিউবওয়েলপাড় ভাঙ্গতে গেলে স্বাক্ষী হালিমা বেগম (ভিকটিম) ঠেকাতে গেলে সাহেব আলী মোল্লার হাতে থাকা লোহার রড দিয়ে ভিকটিমের মাজার ডান অংশে আঘাত করে গুরুত্বর জখম করে। রুপম মোল্লার হাতে থাকা লোহার রড দিয়া স্বাক্ষী হালিমা বেগমের গোপনাংগে আঘাত করে গুরুত্বর জখম করে। অন্যান্য আসামীরা স্বাক্ষী হালিমা বেগম সারা শরীরে লাঠি দিয়ে আঘাত করে নীলাফুলা বেদনাযুক্ত জখম করে। স্বাক্ষী হালিমা বেগমের ডাক চিৎকারে স্বাক্ষীগণ এগিয়ে আসলে আসামীরা হালিমা বেগমকে বলে অত্র বিষয় নিয়ে কাউকে জানালে বা মামলা করলে খুন করে লাশ গুম করার হুমকি প্রদান করে চলে যায়।
স্বাক্ষীগণ এসে হালিমা বেগমকে উদ্ধার করে মাগুরা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করে। স্বাক্ষীঃ হালিমা বেগম (ভিকটিম) পিং-মৃত-আব্দুল খালেক, স্বামী- বাবর আলী মোল্যা, মোঃ বাবর আলী মোল্যা পিং-মৃত-আব্দুল আহেদ মোল্লা গ্রাম- নন্দলালপুর, শরিফুল পিং- মৃত-আবদুল জলিল মোল্যা সাং-সাজিয়াড়া, মোঃ জোয়াদ আলী, পিং-মৃত- হাবিবুর রহমান বিশ্বাম, মোঃ আঃ রহমান, পিং-মোঃ আইয়ুব মোল্যা, সাং-দেড়ুয়া, থানা ও জেলা-মাগুরা।
ঘটনার বিষয়ে সোহানা খাতুন জানান, আমার বড় আপা সালমা বেগম, মেজো আপা নাজমা খাতুন, পুত্র হাবিব মোল্লা, শান্ত, সাব্বির এদেরকে প্রচন্ড মারধর করেছে মুসা মোল্লা, লালু মোল্লারা। তিনি মাগুরা পুলিশ প্রশাসনের কাছে অপরাধীদের আইনের আওতায় নিয়ে এসে শাস্তি ও বিচার দাবি করেন।
বিবাদী পক্ষ থেকে মুসা মোল্লা বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে ৪৬ শতাংশ জমিকে কেন্দ্র করে চাচার সাথে জমি জমা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে উভয় পক্ষের মামলা চলমান রয়েছে। টিউবওয়েল সম্পর্কে বলেন এটা সরকারি কল, আমার বসত ঘরের সামনের জানালার পাশে প্রশ্রাব করে এবং নোংরা পানি জমে থাকে যার ফলে প্রচন্ড দূর্গন্ধ হয় এবং বাড়ির জানালা সবসময় বন্ধ রাখতে হয়। মারামারির বিষয় সম্পর্কে মুসা মোল্লা আরও জানান, সোহানাদের লোকজন চাইনিজ কুরাল ও লাঠিসোঁটা দিয়ে আমাদের উপর আক্রমণ চালিয়েছে। সবশেষে তিনি বলেন, আমরা গ্রামে বসবাস করার জন্য মারামারি চাই না, আমরা শান্তি চাই।
Leave a Reply