ফারুক আহমেদ, মাগুরা জেলা প্রতিনিধি : মাগুরায় ৪ উপজেলা মাগুরা সদর, শ্রীপুর, মহম্মদপুর ও শালিখা এই ৩৬ টি ইউনিয়ন পর্যায়ে ইউনিয়ন পরিষদে গ্রাম আদালত কার্যক্রম সম্পর্কে জনসচেতনতা তৈরিতে সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ২৬ জুন বেলা সাড়ে ১১ টার সময় মাগুরা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে গ্রাম আদালত কার্যক্রম সম্পর্কে জনসচেতনতা তৈরিতে প্রচার প্রচারণা কার্যক্রম পরিচালনায় স্থানীয় অংশীজনদের সাথে সমন্বয় সভা করা হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মাগুরা স্থানীয় সরকার উপপরিচালক মোঃ আব্দুল কাদের ও সঞ্চালনায় বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ (৩য় পর্যায়) প্রকল্প, মাগুরা ডিস্ট্রিক্ট ম্যানেজার মো:জেনারুল ইসলাম। সার্বিক সহযোগিতায় বাংলাদেশ গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ (৩য় পর্যায়) উপজেলা সমন্বকারী শিউলী আক্তার।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাগুরা জেলা প্রশাসক মোঃ অহিদুল ইসলাম।
গ্রাম আদালত সমন্বয় সভা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি মাগুরা জেলা প্রশাসক মোঃ অহিদুল ইসলাম বলেন, ইতিমধ্যে সারা বাংলাদেশের প্রায় জেলা গুলোতে গ্রাম আদালত বিষয়ে ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি মেম্বার সদস্যদের নিয়ে প্রশিক্ষণ কর্মশালা ও ট্রেনিং দেওয়া হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় মাগুরা সদর উপজেলায় ইতিমধ্যে গত মে মাসে মাগুরা সদর উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদ গুলোতে জনসাধারণের ন্যায় বিচার পাওয়ার জন্য কাজ করা হচ্ছে এবং ব্যাপক আকারে প্রচার প্রচারণার জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
গ্রাম আদালত আইন ২০০৬ অনুযায়ী স্থানীয়ভাবে কতিপয় ফৌজদারী ও দেওয়ানী বিরোধের সহজ ও দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য ইউনিয়ন পরিষদে গ্রাম আদালত গঠিত হয়। গ্রাম আদালত অনধিক ৩ লাখ টাকা মূল্যমানের ফৌজদারী ও দেওয়ানী বিরোধ নিষ্পত্তি করতে পারে। গ্রাম আদালতে আইনজীবী নিয়োগের বিধান নেই। গ্রাম আদালতে ফৌজদারী বিরোধ নিষ্পত্তি করতে পারে চুরি, দাঙ্গা, প্রতারণা, ঝগড়া বিবাদ, কলহ বা মারামারি, মুল্যবান সম্পত্তি আত্মসাৎ করা, অন্যায় নিয়ন্ত্রণ ও অন্যায় আটক, ভয়ভীতি দেখানো বা হুমকি দেয়া, কোন নারীর শালীনতাকে অমর্যাদা বা অপমানের উদ্দেশ্য কথা বলা, অঙ্গভঙ্গি করা বা অন্য কোনো কাজ করা এবং দেওয়ানী বিরোধ নিষ্পত্তি হলো পাওনা টাকা আদায় সংক্রান্ত, স্থাবর সম্পত্তি দখল পুনরুদ্ধার সংক্রান্ত, অস্থাবর সম্পত্তি উদ্ধার বা তার মূল্য আদায় সংক্রান্ত, কোন অস্থাবর সম্পত্তি জবর দখল বা ক্ষতি করার জন্য ক্ষতিপূরণ আদায় সংক্রান্ত, গবাদিপশু অনধিকার প্রবেশের কারণে ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত, কৃষি শ্রমিকদের পরিশোধযোগ্য মজুরি ও ক্ষতিপূরণ আদায় সংক্রান্ত, স্ত্রী কর্তৃক বকেয়া ভরণপোষণ আদায় ইত্যাদি। এছাড়াও দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগণ বিশেষ করে নারী, প্রতিবন্ধী এবং ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী খুব সহজে বিরোধ নিষ্পত্তির সুযোগ পায়।
গ্রাম আদালত ধর্ষণ, খুন, অপহরণ, ডাকাতি, বহুবিবাহ, তালাক, অভিভাবকত্ব, দেনমোহর, দাম্পত্য সম্পর্ক পুনরুদ্ধার, যৌতুক, নারী ও শিশু নির্যাতন, কোনা ঘটনায় রক্তপাত ঘটে থাকলে, স্থাবর সম্পত্তির স্বত্বাধিকার সংক্রান্ত, ৩ লাখ টাকার অধিক মূল্যমানের যে কোনো বিরোধের নিষ্পত্তি করতে পারে না।