13 May 2024, 07:39 am

মাদারীপুর ডিসি অফিসের অফিস সহকারীর কোটি কোটি টাকার সম্পদের সন্ধান ; দুদকের মামলা 

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : মাদারীপুরে আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের কর্মচারী মিজানুর রহমান ফকিরের (৫৩) বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) দুপুরে দুদকের মাদারীপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আখতারুজ্জামান বাদী হয়ে এ মামলা করেন। অভিযুক্ত মিজানুর রহমান ফকির জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের অফিস সহকারী কাম মুদ্রাক্ষরিক পদে চাকরি করছেন। তিনি মাদারীপুর পৌরসভার পাঠককান্দি এলাকার কিনাই ফকিরের ছেলে।

তার বিরুদ্ধে ২০১৯ সালে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। পরে প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে তদন্তে নামে দুদক। মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালে মিজানুর রহমান ফকিরের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি আমলে নিয়ে তার প্রাপ্ত সম্পদের অনুসন্ধান শুরু করেন দুদকের ফরিদপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সাবেক উপ-সহকারী পরিচালক সৌরভ দাস।
প্রাথমিকভাবে দুর্নীতির তথ্য-প্রমাণ পাওয়ায় তাকে সম্পদ বিবরণীর নোটিশ পাঠানো হয়। তার জমা দেওয়া সম্পদ বিবরণীর নোটিশ পর্যালোচনা করেন মাদারীপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আখতারুজ্জামান।

দুদকের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, মিজানুর রহমান দুর্নীতি দমন কমিশনে তার জমা করা বিবরণীতে নিজ নামে স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ মিলিয়ে ২৯ লাখ ৮৪ হাজার ৪৬২ টাকা মূল্যের সম্পদ গোপন করেছেন এবং ৩০ লাখ ১২ হাজার ৩৫৮ টাকা মূল্যের জ্ঞাত আয়ের উৎসবহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও দখলে রেখেছেন, যা দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪-এর ২৬(২) ধারা ও ২৭(১) ধারা অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এসব কারণে তার বিরুদ্ধে ঢাকার দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান কার্যালয় থেকে ৮ আগস্ট মামলা করার অনুমোদন দেওয়া হয়। পরে বৃহস্পতিবার সহকারী পরিচালক আখতারুজ্জামান বাদী হয়ে মামলাটি করেন।

এ বিষয়ে আখতারুজ্জামান বলেন, প্রাথমিকভাবে মিজানুর রহমানের সম্পদ অনুসন্ধান করে দেখা যায়, তিনি অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন করেছেন। এসব তথ্য ও প্রমাণ হাতে পেয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে আমাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তদন্ত শেষে চার্জশিট দেওয়া হবে।

এদিকে দুদকের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মিজানুর রহমান ফকির। তার দাবি, আমার কোনও অবৈধ সম্পদ নেই। দুদক আমাকে নোটিশ পাঠালে আমি সম্পদের বিবরণী তাদের কাছে জমা দিয়েছিলাম। তারপর কী হয়েছে বলতে পারি না।

জানতে চাইলে জেলা প্রশাসকের মুখপাত্র ও মাদারীপুর স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক মো. নজরুল ইসলাম জানান, মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে দুদকের মামলার বিষয়ে তিনি জানেন না। তবে দুদকের করা মামলায় তিনি আইনিভাবে অভিযুক্ত প্রমাণ হলে তার বিরুদ্ধে অ্যাকশনে যাওয়া হবে।

উল্লেখ্য, মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। পরে প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে তদন্তে নামে দুদক। অনুসন্ধানে জানা যায়, মাদারীপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে চাকরির সময়ই মিজানের ভাগ্যোন্নয়ন শুরু হয়। মাদারীপুর ও শরীয়তপুরে পরিবহন ব্যবসায়ও তিনি যুক্ত রয়েছেন। মাদারীপুরে তার একাধিক ট্রাক এবং শরীয়তপুরে একাধিক গাড়ি রয়েছে। মাদারীপুর শহরেই তার চারটি বাড়ি রয়েছে। মাদারীপুর শহরের পাঠককান্দি এলাকায় একটি বাড়ি রয়েছে। বাড়ির বড় একটি অংশ ভাড়া দেওয়া।

১৪ শতাংশ জমির ওপর বাড়িটি গড়ে তোলা হয়েছে। শহরের স্টেডিয়ামের পেছনেও বহুতল ভবন নির্মাণ করেন। জমিসহ বাড়িটির বাজারমূল্য প্রায় তিন কোটি টাকা। শহরের থানতলী এলাকায়ও একটি বাড়ি রয়েছে। ওই বাড়িতে তার ছোট ভাই থাকেন। বাকি ঘরগুলো ভাড়া দেওয়া। মাদারীপুর শহরের স্কুল সংলগ্ন এলাকায় ১০ শতাংশ জমিতে তার একটি বাড়ি রয়েছে।

 

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • Visits Today: 2955
  • Total Visits: 722829
  • Total Visitors: 2
  • Total Countries: 1126

আজকের বাংলা তারিখ

  • আজ সোমবার, ১৩ই মে, ২০২৪ ইং
  • ৩০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (গ্রীষ্মকাল)
  • ৪ঠা জ্বিলকদ, ১৪৪৫ হিজরী
  • এখন সময়, সকাল ৭:৩৯

Archives

MonTueWedThuFriSatSun
  12345
13141516171819
20212223242526
2728293031  
       
  12345
2728     
       
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
31      
  12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930   
       

https://youtu.be/dhqhRb9y018