July 1, 2025, 6:41 pm
শিরোনামঃ
ঝিনাইদহের মহেশপুর-যাদবপুর সড়কের দুই ধারে তালের চারা রোপন ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্ত দিয়ে ৯ বাংলদেশীকে হস্তান্তর করলো ভারতীয় বিএসএফ স্বৈরাচারের লক্ষণ দেখামাত্রই বিনাশের প্রত্যাশা প্রধান উপদেষ্টার নির্বাচনী বাজেট বরাদ্দে কার্পণ্য নয় : অর্থ উপদেষ্টা জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মরণ অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি খালেদা জিয়া শাহজালাল বিমানবন্দরে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা চালু কুষ্টিয়ায় ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে কৃষককে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ শরীয়তপুরে সাত দিনব্যাপী বৃক্ষমেলা শুরু সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরের জীববৈচিত্র্য পুনরুদ্ধারের দাবিতে মানববন্ধন জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করল পাকিস্তান
এইমাত্রপাওয়াঃ
আমাদের সাইটে নতুন ভার্ষনের কাজ চলছে সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ

মানব নভোচারীদের পরিবর্তে মহাকাশ অনুসন্ধানে কাজ করবে রোবট !

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক মহাকাশ অনুসন্ধানের নতুন যুগের সূচনা হতে চলেছে। ভবিষ্যতে মানব নভোচারীদের পরিবর্তে রোবট এবং অটোমেটেড প্রযুক্তি মহাকাশে কাজ করবে বলে ধারণা করছেন বিজ্ঞানীরা। এমনটা হলে কেবল মহাকাশ গবেষণার জন্যই নয়, বরং পৃথিবীর বাইরে মানুষের যাত্রা এবং বসবাসের নতুন দিগন্তের উন্মোচন হবে।

আজ (৩১ ডিসেম্বর) মঙ্গলবার একটি প্রতিবেদনে বিবিসি জানিয়েছে, মহাকাশ অভিযানে রোবটের ব্যবহার ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে। স্পেসএক্স এবং নাসাসহ বেশ কিছু মহাকাশ সংস্থা বিভিন্ন ধরনের রোবট প্রযুক্তি তৈরি ও পরীক্ষা করছে। সম্প্রতি, নাসার ‘রোবটিক অ্যাস্ট্রোনট’ প্রকল্পের মাধ্যমে, বিভিন্ন ধরনের রোবটকেও পাঠানো হচ্ছে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে। তবে নাসার পার্কার সোলার প্রোব মিশন মহাকাশে নভোচারীদের পরিবর্তে ভবিষ্যতে রোবটের কাজ করার ধারণাকে আরও শক্ত করেছে।

এবছর ক্রিসমাস ইভে নাসার পার্কার সোলার প্রোব মহাকাশযান সূর্যের পাশ দিয়ে উড়ে যায়। এই প্রথম পৃথিবী থেকে কোনো মানব-নির্মিত বস্তু সূর্যের এত কাছ দিয়ে গেছে। এই ঘটনাটি মানবজাতির জন্য একটি মাইলফলক, কারণ এখানে কোনো মানুষ ব্যক্তিগতভাবে অংশগ্রহণ করেননি। মহাকাশযানটি তার পূর্বনির্ধারিত কাজগুলি সম্পাদন করেছে কোনও মানবীয় হস্তক্ষেপ বা পৃথিবীর সঙ্গে যোগাযোগ ছাড়াই।

পূর্ববর্তী ছয় দশকে রোবোটিক মহাকাশযানগুলি সৌরজগতের বিভিন্ন গ্রহে পৌঁছেছে, এমন সব স্থানে পৌঁছেছে যা মানুষের পক্ষে অসম্ভব ছিল। তার মধ্যে পার্কার সোলার প্রোব তার ১০ দিনের ফ্লাইবিতে ১০০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা সহ্য করেছে। তবে এই স্বয়ংক্রিয় মহাকাশযানগুলোর সফলতা ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উন্নতির সাথে সাথে ভবিষ্যতের মহাকাশ অনুসন্ধানে মানুষের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

যুক্তরাজ্যের রশ্মি জ্যোতির্বিজ্ঞানী লর্ড মার্টিন রিসের মতে, রোবটগুলো দ্রুত উন্নতি করছে এবং মহাকাশে মানব পাঠানোর যুক্তি দিন দিন দুর্বল হয়ে আসছে। আমি মনে করি কোনো করদাতার টাকার মাধ্যমে মানুষকে মহাকাশে পাঠানো উচিত নয়। মহাকাশে মানুষের উপস্থিতির একমাত্র কারণ হতে পারে এটি একটি অ্যাডভেঞ্চার বা অভিজ্ঞান, যা শুধু ধনীদের জন্য হওয়া উচিত।

ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের পদার্থবিদ অ্যান্ড্রু কোয়েটসও রোবোটিক অনুসন্ধানকেই প্রাধান্য দিয়ে বলেন, জটিল মহাকাশ অনুসন্ধান পরিচালনার জন্য রোবট অনেক বেশি কার্যকর। তাদের মাধ্যমে আরও দূরে যাওয়ার এবং বেশি কাজ করার সুযোগ রয়েছে। রোবটের ব্যয়ও মানব নভোচারীদের তুলনায় অনেক কম। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অগ্রগতি সাপেক্ষে, রোবট আরও স্মার্ট হতে থাকবে।

মানুষের তুলনায় রোবট অনেক দূরে পৌঁছতে পারে এবং পৃথিবী থেকে বহু দূরবর্তী স্থান যেমন গ্রহ বা অস্টেরয়েডে কাজ করতে সক্ষম। এই পর্যন্ত মানুষ কেবল দুটি স্থানে গিয়েছেন—পৃথিবীর কক্ষপথ এবং চাঁদ। ১৯৬১ সালে ইউরি গাগারিন প্রথম মহাকাশচারী হিসেবে মহাকাশে যাত্রা শুরু করেন, এবং এর পর থেকে মাত্র ৭০০ জন মানুষ মহাকাশে গেছেন, যার বেশিরভাগই পৃথিবীর কক্ষপথে ভ্রমণ করেছেন। সুররাং, রোবটরা মানুষের চেয়ে এগিয়েই আছে। কারণ, রোবটরা মানসিক বা শারীরিক ক্লান্তি থেকে মুক্ত, যা মানুষের পক্ষে মহাকাশে অবস্থান করতে গিয়ে একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়।

রাইস বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিদ্যা বিশেষজ্ঞ ড. কেলি ওয়েইনারস্মিথ বলেন, মানুষের জন্য মহাকাশে কাজ করা অনেক বেশি শক্তি এবং ব্যয় সাপেক্ষ, যেখানে রোবটদের কোনো ধরনের জীবিত শর্ত (যেমন পানীয়, পুষ্টি বা ঘুম) প্রয়োজন হয় না।

রোবটের গতির কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, মঙ্গলে রোভারগুলো ঘণ্টায় মাত্র শুন্য দশমিক ১ মাইল গতি অর্জন করতে পারে, যা কার্যকরীভাবে দ্রুত তথ্য সংগ্রহে সক্ষম হয় না। তবে রোবট কেবল মানব নভোচারীদের পরিবর্তে কাজ করতে সক্ষম নয়, বরং তাদের সহকারী হিসেবে কাজ করার ক্ষেত্রেও বেশ কার্যকর।

কম্পিউটার ও প্লানেটারি সায়েন্স বিশেষজ্ঞ ড. কিরি ওয়াগস্টাফ বলেন, রোবটরা মহাকাশে এমন কাজ করতে সক্ষম, যা মানুষের পক্ষে ক্লান্তি এবং মনোযোগের অভাবের কারণে সম্ভব নাও হতে পারে।

যেমন- নাসার ‘ভালকিরি’ নামের হিউম্যানয়েড রোবটটি বিশেষভাবে নির্মিত হয়েছে মহাকাশের কাজের জন্য, যাতে মানবীয় দক্ষতাকে রোবটিক আঙ্গিকেও প্রয়োগ করা যায়। এটি ব্যবহৃত হাত এবং সরঞ্জামের মাধ্যমে মানুষের মতো কাজ করার সক্ষমতা রাখে। এর আগে নাসার রোবোনট মহাকাশ স্টেশনে কাজ করেছিল, সেও বিভিন্ন রক্ষণাবেক্ষণ এবং মেরামতের কাজে সাহায্য করেছিল।

বিশেষজ্ঞদের মতে, আগামী ২০ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে মহাকাশে মানুষের স্থায়ী বসবাসের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হতে পারে। যদি এমনটা হয় তবে, এই পরিকল্পনায় রোবটের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে। রোবটের সাহায্যে বিভিন্ন মহাকাশ স্টেশন এবং গ্রহে অবকাঠামো নির্মাণের কাজ শুরু হবে। পৃথিবীর বাইরে রোবটগুলোর মধ্যে কিছু বিশেষ রোবট থাকবে যারা পরবর্তী নভোচারীদের জন্য মহাকাশে খাবার, পানি এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস পৌঁছানোর কাজ করবে। এছাড়া, দূরবর্তী গ্রহ যেমন মঙ্গল এবং শনি, যেখানে মানুষের পক্ষে সরাসরি যাওয়া সম্ভব হবে না, সেখানেও রোবটের মাধ্যমে নতুন গবেষণা চালানো যেতে পারে।

মহাকাশে রোবটের ব্যবহার আগামী দিনের মহাকাশ অভিযানকে আরও দ্রুত, নিরাপদ ও কার্যকর করে তুলতেই পারে।যেখানে রোবটের সাহায্যে আমরা আরও গভীরে পৌঁছাতে পারব। এই প্রযুক্তিগত উন্নতি শুধু মহাকাশ গবেষণায় নয়, বরং পৃথিবীতে আমাদের দৈনন্দিন জীবনেও নানা সুবিধা আনতে পারে।

আজকের বাংলা তারিখ

July ২০২৫
Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
« Jun    
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০৩১  


Our Like Page