অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা বিধিনিষেধ নিয়ে সরকার চিন্তিত নয়। কেননা ওয়াশিংটন গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষুন্ন করার জন্য দায়ী বা জড়িত থাকা বাংলাদেশি ব্যক্তিদের ওপর এটি প্রয়োগ শুরু করেছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা পর শুক্রবার রাতে গুলশানে তার বাসভবনে এক ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদরে হারানোর কিছু নেই, আমরা এটা নিয়ে চিন্তিত নই কেননা আমরা কিছু ভুল করছি না।’
তিনি বিষয়টিকে সুখকর অভিজ্ঞতা নয় বলে অভিহিত করে বলেছেন ‘এর মধ্য দিয়েই আমাদের যেতে হবে।’
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার একটি বিবৃতিতে বলেছেন, ‘এই ব্যক্তিদের মধ্যে আইন প্রয়োগকারী সদস্য, ক্ষমতাসীন ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্যরা এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসবে।’
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বিঘ্ন সৃষ্টিকারী দায়ী ব্যক্তি বা এতে জড়িত বাংলাদেশিদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের পদক্ষেপ নিচ্ছে।
আলম বলনে, ওয়াশিংটন নতুন ভিসা নীতির অধীনে তাদের সিদ্ধান্তের বিষয়ে ঢাকাকে অবহিত করেছে। বাংলাদেশের লক্ষ্য অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান এবং তার প্রতি সমর্থনের লক্ষে যুক্তরাষ্ট্র এটা করছে।
বাংলাদেশের নির্বাচনের পর এ নীতি বাস্তবায়নের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঢাকা যোগাযোগ করেছিল কি না জানতে চাইলে আলম নেতিবাচক জবাবে বলেন, ঢাকা কখনোই ওয়াশিংটনের কাছে এ ধরনের কোনো অনুরোধ জানায়নি।
তিনি বলেন, ‘এর আগে কিছু রাজনৈতিক দল এটা প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করেছিল যে, মার্কিন ভিসা বিধি নিষেধ কেবলমাত্র সরকারি দলের ওপর আরোপ করা হবে। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র স্পস্ট করেছে যে, নতুন নীতিটি সক্ষমতাসীন ও বিরোধী উভয় রাজনৈতিক দলের জন্যই প্রযোজ্য।’
আলম বলেন, সরকারের প্রত্যাশা মার্কিন সরকার সঠিক তথ্য ও পরিসংখ্যান যথাযথভাবে পর্যালোচনা করে নতুন ভিসা নিষেধাজ্ঞা নীতি বাস্তবায়ন করবে।
তিনি বলেন, ‘যদি দেখা যায় যেকোনো বিশেষ ব্যক্তির ওপর ভিসা বিধিনিষেধ আরোপের জন্য আমাদের (সরকারি) কাজ সম্পাদনে সমস্যা হচ্ছে, তবে ঢাকা এ ধরনের বিষয় নিয়ে ওয়াশিংটনের সঙ্গে আলোচনা করবে।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, কতজন ব্যক্তি ভিসা নীতির আওতায় এসেছে ওয়াশিংটন সে বিষয়ে ঢাকাকে একটা ধারণা দিয়েছে এবং ‘আমি আপনাকে কী বলতে পারি খুবই সংখ্যাটি কম।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকারের বিশ্বাস আগামী নির্বাচন বানচালে জড়িত থাকায় বিএনপি-জামায়াতের কর্মীরা যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞার ক্ষেত্রে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।
তিনি বলেন, বিদ্যমান সাংবিধানিক বিধান অনুযায়ী একটি অবাধ সুষ্ঠু ও সহিংসতামুক্ত নির্বাচন করতে সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন চলতি বছরের মে মাসে তার দেশের ‘অভিবাসন ও জাতীয়তা আইন’ এর অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের লক্ষ্যকে সহায়তার লক্ষ্যে নতুন এ ভিসা নীতি ঘোষণা করেন।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেন, এর মধ্যে বর্তমান ও সাবেক বাংলাদেশি কর্মকর্তা, বিরোধী ও ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের সদস্য, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, বিচার বিভাগ ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যারা রয়েছেন।
তিনি বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনে বিঘ্ন সৃষ্টিকারী ব্যক্তি ও তাদের পরিবারের সদস্যরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের অযোগ্য বলে বিবেচিত হতে পারেন।
Leave a Reply