অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ভারতের সাত দফার লোকসভা নির্বাচন গত ১৯ এপ্রিল শুরু হয়ে শেষ হয়েছে গত শনিবার। ভোট গণনা শেষে আজ মঙ্গলবার ফল প্রকাশ হবে। জানা যাবে দিল্লির মসনদে কে বসতে চলেছেন বিজেপির নেতৃত্বে থাকা এনডিএ জোট নাকি ইন্ডিয়া জোট।
দৈনিক ইত্তেফাকের সর্বশেষ খবর পেতে Google News অনুসরণ করুন
দেড় মাসব্যাপী অনুষ্ঠিত এ নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন ৬৪ কোটিরও বেশি ভোটার। ৩১ মে সপ্তম দফার ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পর থেকেই আসতে শুরু করে এক্সিট পোল বা বুথফেরত জরিপের ফলাফল।
প্রায় প্রতিটি বুথফেরত জরিপের ফলাফলে দেখা গেছে, বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ ৩৫০ আসনের বেশি পেয়ে তৃতীয়বার কেন্দ্রে সরকার গড়তে যাচ্ছে। তবে বুথফেরত জরিপই চূড়ান্ত ফল নয়। চূড়ান্ত ফল জানাবে ভারতের নির্বাচন কমিশন। আজ মঙ্গলবার তাই সবার চোখ থাকবে নির্বাচন কমিশনের দিকে।
এই নির্বাচনকে বিশ্বের ইতিহাসের ‘সবচেয়ে বড়’ নির্বাচনের তকমা দেওয়া হয়েছে এর ভোটারসংখ্যার কারণে। ভারতের অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচনে এবার ভোটারসংখ্যা ছিল ৯৭ কোটি। যা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ১২ শতাংশ। এর আগে বিশ্বে কোনো নির্বাচনে এত ভোটার ছিলেন না। বিপুল সংখ্যক ভোটারের ভোট গণনা করা হয় যেভাবে তা নিচে তুলে ধরা হলো:
যেভাবে আজ ভোট গোনা হবে
ভারতে বিগত বহু বছর ধরেই লোকসভা নির্বাচনে সব কেন্দ্রেই ভোটগ্রহণ করা হয়ে থাকে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএমের মাধ্যমে, এবারেও তার কোনও ব্যতিক্রম হয়নি। তবে নিজের কেন্দ্রের বাইরে কাজে নিযুক্ত সরকারি কর্মী বা সেনা সদস্যরা পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দেওয়ার সুযোগ পান।
বছর কয়েক হলো নির্বাচন কমিশন অতি বয়স্ক নাগরিকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের সেখানে বসেই ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা শুরু করেছে, যাতে তাদের পোলিং বুথে আসার কষ্ট না করতে হয়। আর এগুলো সবই হলো পেপার ব্যালট, অর্থাৎ কাগজের ব্যালট।
যে কোনও গণনাকেন্দ্রে ভোট গণনা শুরু হয় প্রথমে এই পোস্টাল ও পেপার ব্যালটগুলো গোনার মাধ্যমে। তাতে কেন্দ্রভেদে আধা ঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টাও সময় লেগে যেতে পারে।
ফলে সকাল আটটা থেকে ভোটগণনা শুরু হলেও ইভিএম গোনা শুরু হতে হতে প্রায় ন’টা বেজে যায় বেশিরভাগ কেন্দ্রেই।
প্রতি দফার ভোট শেষ হওয়ার পরই ইভিএমগুলো সিলগালা করে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে বিভিন্ন সংসদীয় কেন্দ্রের স্ট্রংরুমে রাখা হয়ে থাকে। আজ গণনার দিন সকালে সেই ইভিএমগুলো স্ট্রংরুম থেকে বের করে গণনাকেন্দ্রে এনে সব অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দল বা প্রার্থীর প্রতিনিধিদের সামনে তার সিল ভাঙা হবে।
প্রতিটি ইভিএমের ‘কন্ট্রোল ইউনিট’ ভালো মতো সিল করা ছিল কি না, সঠিকভাবে কাজ করছে কি না- গণনা শুরু করার আগে তা বারবার ভালো করে পরীক্ষা করার কথা ও সব দলের প্রতিনিধিদের সম্মতি নিয়েই গোনার প্রক্রিয়া শুরু করার কথা।
প্রতিটি কেন্দ্রে গণনার প্রক্রিয়াটি পরিচালনা করেন ‘কাউন্টিং সুপারভাইজর’ ও ‘কাউন্টিং অ্যাসিস্ট্যান্ট’রা- যাদের নিয়োগ করেন ওই সংসদীয় আসনের রিটার্নিং অফিসার।
ইভিএমের কন্ট্রোল ইউনিটে প্রত্যেক প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোট এক এক করে দেখানো হতে থাকে।
এক দফায় ১৪টি ইভিএম পরপর গোনার পর এক একটি রাউন্ডের ফল ঘোষণা করা হয় এবং তারপর আরও ১৪টি ইভিএম গোনা শেষ হলে ঘোষিত হয় পরবর্তী রাউন্ডের ফল। এইভাবে সব ইভিএম গোনা শেষ হলে ওই কেন্দ্রের রিটার্নিং অফিসার চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করেন এবং সব চেয়ে বেশি ভোট পাওয়া প্রার্থীর হাতে নির্বাচন কমিশনের তরফে বিজয়ীর সার্টিফিকেট তুলে দেন।
ভোটগণনার প্রক্রিয়াকে বিতর্কমুক্ত রাখতে কমিশনের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও দেখা গেছে ভারতের প্রায় সব নির্বাচনেই ইভিএম কমবেশি বিতর্কের মুখে পড়েছে।
পরাজিত দল বহু ক্ষেত্রেই অভিযোগ করে থাকে, ইভিএমে কারচুপি করা সম্ভব এবং তা করাও হয়েছে– যদিও ভারতের শীর্ষ আদালত আজ পর্যন্ত ইভিএমের ব্যবহার বন্ধ করার কোনও নির্দেশ দেয়নি।
Leave a Reply