December 13, 2025, 6:09 pm
শিরোনামঃ
ঝিনাইদহ প্রেস ক্লাবের দ্বিবার্ষিক নির্বাচনে মাখন সভাপতি ও লিটন সম্পাদক নির্বাচিত হাদির ওপর হামলাকারীদের ধরিয়ে দিতে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দিলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা শনাক্ত ব্যক্তি ও ডাকসু ভিপি একসাথে চা খাচ্ছেন ; এর বিচার কে করবে : রুহুল কবির রিজভী নির্বাচনি এলাকায় ২০টির অধিক বিলবোর্ডে ও নালাউড স্পিকারে বিধিনিষেধ বাংলাদেশের জলবায়ু সংবেদনশীল অঞ্চলের উন্নয়নে ৫১.৪ মিলিয়ন ডলার দেবে ইফাদ লক্ষ্মীপুর জেলা নির্বাচন অফিসে পেট্রোল ঢেলে আগুন ; পুড়লো গুরুত্বপূর্ণ নথি গাজীপুরের মাকে মারধর করায় মাদকাসক্ত ছেলেকে মাটিতে পুঁতে রাখলেন এলাকাবাসী মিয়ানমার থেকে ছোড়া গুলিতে কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তে আতঙ্ক ৬০ লাখ লিটার তেলসহ ট্যাঙ্কার জব্দ করেছে ইরান ; বাংলাদেশিসহ ১৮ ক্রুকে আটক আমাদের এখান থেকে বেরিয়ে যা চোর ; তোর মুখোশ খুলে পড়েছে !: ট্রাম্পকে মাদুরো
এইমাত্রপাওয়াঃ

রংপুরে ভোট কেনার টাকা ফেরত চেয়ে নারী ইউপি সদস্যকে হুমকি প্রদান

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : রংপুর জেলা পরিষদের নির্বাচনে জেতার পরে ভোট কেনার ৫০ হাজার টাকা ফেরত চেয়ে নারী ইউপি সদস্যকে হুমকি-ধামকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। কাউনিয়া থেকে নির্বাচিত জেলা পরিষদ সদস্য আলতাফ হোসেনের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেছেন ইউপি সদস্য মুরশিদা বেগম।

সোমবার (৩১ অক্টোবর) এক সংবাদ সম্মেলনে শ্লীলতাহানিরও অভিযোগ তোলেন তিনি। মোবাইল ফোনে টাকা ফেরতের কথা ও হুমকি দেওয়া একটি অডিও এলাকায় ভাইরাল হয়েছে।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে আলতাফ হোসেন বলেন, অভিযোগকারী সম্পর্কে আমার মামি। জমিজমা নিয়ে টাকা-পয়সা সংক্রান্ত বিষয়ে ভোটের আগে এসব ঘটনা ঘটেছিল।

এদিকে, টাকার বিনিময়ে ভোট কিনে নির্বাচিত হওয়ায় আলতাফ হোসেনের সদস্য পদ বাতিল করে ওই ওয়ার্ডে পুনরায় ভোটগ্রহণের দাবি জানিয়েছেন নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী গোলাম সারোয়ার আনছারী।

সোমবার দুপুরে রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছ ইউনিয়নের ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য মুরশিদা বেগমের এই সংবাদ সম্মেলনকে ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য তৈরি হয়। যেন আগুনে ঘি ঢালার পরিস্থিতি।

সংবাদ সম্মেলতে মুরশিদা হক বলেন, গত ১৭ অক্টোবর অনুষ্ঠিত রংপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনের ২ নম্বর ওয়ার্ডের (কাউনিয়া) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজয়ী হন আলতাফ হোসেন। নির্বাচনের আগে ১৫ অক্টোবর আলতাফ হোসেন হারাগাছ ইউপির সদস্য মোজাম্মেল হকের মাধ্যমে অপর ইউপি সদস্য জহুরুল হকের বাড়িতে রাত সাড়ে ৩টায় আমাকে অবরুদ্ধ করেন। সেখানে আমাকেসহ ৭ পুরুষ ও মহিলা সদস্যকে ডেকে নেন। আলতাফ হোসেন ভোট দেয়ার জন্য আমাদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার করে টাকা দেন। আমি তার সাথে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়ে ভোট দিই এবং তিনি নির্বাচিত হয়েছেন।

মুরশিদা অভিযোগ করেন, নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে ১৯ অক্টোবর আলতাফ আমাকে তার মোবাইল থেকে ফোন দিয়ে আমাকে অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন। আমি সে ভাষা প্রকাশ করতে পারব না। এ সময় তিনি আমাকে বলেন, আমি নাকি তাকে ভোট দিইনি। সে কারণে টাকাসহ বাকি সরঞ্জামাদি ফেরত দিতে বলে। পরে আবারো আলতাফ হোসেনের দলীয় লোক ও বন্ধু মশিয়ার রহমানের মোবাইল থেকে আমার মোবাইলে ফোন দিয়ে বলে, টাকা ফেরত দাও। তা না হলে শ্লীলতাহানি, বেইজ্জতি করবে। এরকম হুমকি দেন। আমি মোবাইল কেটে দিলে আলতাফ আবারও ওই মোবাইল থেকে আমার স্বামীর মোবাইলে কল দেন। স্বামীকে তিনিই হুমকি দেন। এসবের রেকর্ড আমার কাছে আছে।

সংবাদ সম্মেলনে মুরশিদা বলেন, এভাবে হুমকি-ধামকির কারণে আমি আমার জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও ডিসির কাছে একটা দরখাস্ত দিয়েছি। সেখান থেকে অনুলিপি নিয়ে আমি থানার ওসিকে দিই। সেখান থেকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং উপজেলা চেয়ারম্যানকে দিয়েছি। এছাড়াও ওই কপি আমি আমার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানকেও দেই। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো সুরাহা নেই।

মুরশিদা বেগমের অভিযোগ করে বলেন, কয়েক দিন আগে আলতাফ আমাকে বকুলতলা বাজারে আপেল নামের এক দোকানে ধরে নিয়ে গিয়ে বেইজ্জতি করে। আমার শ্লীলতাহানি ঘটান এবং আমাকে বলে, এখানে টাকা দিয়ে ওঠেক। তখন আমি বলছি, কিসের টাকা দেবো। তখন বলে, ভোটের টাকা। আমি তাকে বলি, আমার ভোটটা ফেরত দে। আমার কোটি টাকার আমানত, পবিত্র ভোট, তোকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করলাম। আর তুই আমার কাছে কিসের টাকা ফেরত চাস। তখন সে আমাকে বলে, তুই টাকা দিয়ে ওঠেক। টাকা দিয়ে তারপর প্রধানমন্ত্রীকে বিচার দে। ওই যদি প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিচার চায়, তাহলে আমি কোথায় বিচার চাইবো। আমার এ ঘটনার আমি সঠিক বিচার চাই।

মোরশেদা বেগম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার আকুল আবেদন, আমার সে মা, আমি তার কাছে বিচার চাই। আমি কোনো উপায় না পেয়ে আপনাদের কাছে আসছি। আপনারা আমাকে সাহায্য করবেন। যেন আমি সঠিকভাবে চলাফেরা করতে পারি। জনগণের কাছে যেতে পারি। আমি নির্বাচিত মহিলা মেম্বার। আমাকে জনগণ রাত ৩টার সময়ও ডাকতে পারে। আমি এর আগে দুইবার ছিলাম। এবার নিয়ে তিনবার আমি নির্বাচিত হয়েছি।

মোরশেদা বেগমের অভিযোগ, আলতাফের হুমকিতে আমি চলাফেরা করতে পারছি না। আমি আমার জীবনের নিরাপত্তা চাচ্ছি। আমি যেন খোলামেলা ঘোরাফেরা করতে পারি। আমি যেন জনগণের কাছে যেতে পারি। গ্রামগঞ্জে যেতে পারি। ইউনিয়ন পরিষদে যেতে পারি। আমার ইউনিয়ন পরিষদ বাড়ি থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে। আমি যদি অটো না পাই, আলতাফ যদি আমাকে মেরে ফেলে তাহলে আমি কী করবো!

সংবাদ সম্মেলনে তার সাথে উপস্থিত ছিলেন একই ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মকবুল সালাম, ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ওবায়দুল হক, ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মনিরুজ্জামান, এবং ৭, ৮, ৯ ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী সদস্য শেফালি বেগমের স্বামী নুরুজ্জামান।

সংবাদ সম্মেলনে ৯ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মকবুল হোসেন সালাম বলেন, জেলা পরিষদ নির্বাচনের পর থেকেই মুরশিদা আপার এই দশা। তাকে হুমকি-ধামকি দেওয়া হচ্ছে। শ্লীলতাহানির কথা বলা হচ্ছে। আপা থানায় অভিযোগও করেছে। কিন্তু থানা থেকে এখনও যায়নি। মুরশিদা আপা একজন সম্মানিত ব্যক্তি। তার তিনটি ওয়ার্ডে ১০-১২ হাজার ভোট আছে। তিনি এভাবে বেইজ্জতি করা হোক, খারাপ ভাষায় গালি দেয়, এটা যেন না হয়। তিনি যেন পরিষদে এবং জনগণের কাছে খোলামেলাভাবে যেতে পারেন। তার নিরাপত্তার দাবি জানাচ্ছি আমরা।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত নির্বাচিত জেলা পরিষদ সদস্য (কাউনিয়া) আলতাফ হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ভুয়া। তার সাথে আমার পারিবারিক সম্পর্ক আছে। তিনি আমার মামি হন। তার সাথে আমার জমি নিয়ে ঝামেলা আছে। সেটা নিয়ে, পারিবারিক বিরোধ নিয়ে অনেক ঘটনাই তার সাথে ঘটেছে। তিনি এখন যে অভিযোগগুলো তুলছেন, সেগুলো পারিবারিক বিরোধের জেরে। ভোটের অনেক আগে তার সাথে আমার এসব হয়েছিল।

আলতাফ হোসেন টাকা-পয়সা দেওয়ার ব্যাপারে সরাসরি কোন উত্তর না দিয়ে বলেন, জেলা পরিষদ নির্বাচনে এবার কীভাবে ভোট হয়েছে, সেটা সাংবাদিক মানুষ আপনারা ভালো জানেন। অন্যরাও যেভাবে ভোট খেলেছে আমিও সেভাবে ভোট খেলেছি ভাই।

 

 

 

আজকের বাংলা তারিখ

December ২০২৫
Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
« Nov    
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০৩১  


Our Like Page