24 Feb 2025, 11:18 am

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে বিশাল ক্ষতির মুখে আর্জেন্টিনা

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : এক বছর পেরিয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। এতে শুধু যুদ্ধরত দু’পক্ষ নয়, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গোটা বিশ্ব। জ্বালানি সংকট দেখা দিয়েছে, মূল্যস্ফীতি বেড়ে আকাশ ছুঁয়েছে, নিত্যপণ্যের বাজার রীতিমতো আগুন। দরিদ্রদের পাশাপাশি মধ্যবিত্তদেরও আজ জীবনযাপন কঠিন হয়ে উঠেছে। তবে এর মধ্যেও কিছু কিছু খাতে বাণিজ্যের পালে লেগেছে সুসময়ের হাওয়া। যেমন- আর্জেন্টিনার কৃষি খাত।

রাশিয়া-ইউক্রেন দুই দেশই বিশ্বের অন্যতম প্রধান শস্য সরবরাহকারী। তবে যুদ্ধের কারণে ইউক্রেনের এবং পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়ার শস্য রপ্তানি কার্যত থমকে গেছে। এর ফলে বিকল্প দেশগুলোতে চাহিদা বেড়েছে ব্যাপকভাবে। আর্জেন্টিনার কৃষি খাতে লেগেছে সেই সুসময়ের হাওয়া। ঊর্দ্ধমুখী দামের সঙ্গে বেড়েছে রপ্তানি। তাতে কিছুটা হলেও ফুলেফেঁপে উঠেছে দেশটির অর্থভাণ্ডার।

কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে জ্বালানি সংকট, পণ্য পরিবহনে বাড়তি খরচের কারণে শেষপর্যন্ত লাভের মুখ দেখতে পারেনি আর্জেন্টিনা। বরং এই যুদ্ধের কারণে এক বছরে প্রায় ৫০০ কোটি মার্কিন ডলার ক্ষতি হয়েছে লাতিন আমেরিকান দেশটির।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের এক বছরপূর্তির দিনে একটি বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করে আর্জেন্টিনার অর্থনীতি মন্ত্রণালয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, এই যুদ্ধ আর্জেন্টিনার বাণিজ্য ভারসাম্যের ওপর বিশাল আঘাত হেনেছে। এতে আর্থিক ক্ষতি হয়েছে অন্তত ৪৯৪ কোটি মার্কিন ডলার। যুদ্ধসৃষ্ট মূল্যস্ফীতির ধাক্কা দেশটির কৃষি ও জ্বালানি খাতকে সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত করেছে।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করার আগে আর্জেন্টিনার জ্বালানি ঘাটতির পূর্বাভাস ছিল ১৯৯ কোটি ডলারের। কিন্তু যুদ্ধের ধাক্কায় তা বেড়ে ৩৭৫ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে। আমদানি ব্যয় বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বলিভিয়ান গ্যাসের পেছনে খরচ বেড়েছে ১১৪ শতাংশ, তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসে বেড়েছে ২৩৩ শতাংশ এবং গ্যাসঅয়েলে বেড়েছে অন্তত ৮৫ শতাংশ।

নাইট্রোজেন সার উৎপাদনে ব্যবহৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি কৃষিপণ্যের দামকেও প্রভাবিত করেছে। আন্তর্জাতিক বাজারে এক বছরে সয়াবিনের দাম বেড়েছে ৯ দশমিক ৪ শতাংশ, গমের ৩৩ দশমিক ৭ শতাংশ ও ভুট্টার ১৭ দশমিক ৮ শতাংশ।

ইউক্রেন যুদ্ধের আগে ২০২২ সালে আর্জেন্টিনার মোট রপ্তানি পূর্বাভাস ছিল ৩ হাজার ১৮ কোটি ডলারের। কিন্তু যুদ্ধ শুরুর প্রেক্ষাপটে আরও ৬১ কোটি ৭০ লাখ ডলারের পণ্য বেশি রপ্তানি করেছে দেশটি। কিন্তু এটি তাদের জ্বালানি খাতের ক্ষতি পূরণের জন্য যথেষ্ট ছিল না।

আর্জেন্টাইন অর্থনীতি মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুদ্ধের কারণে আমদানি-রপ্তানির পরিবহন খরচও বেড়ে গেছে। যুদ্ধের আগে দেশটি মালমাল পরিবহনে মোট ব্যয় ৩০০ কোটি ডলারের পূর্বাভাস দিয়েছিল। কিন্তু এখন তার পরিমাণ ৪৮০ কোটি ডলারে পৌঁছানোর কথা বলা হয়েছে।

শুধু তা-ই নয়, যুদ্ধের কারণে আর্জেন্টিনার জ্বালানি খাতে ভর্তুকিও বেড়েছে। প্রতিবেদন বলছে, ২০২২ সালে এ খাতে দেশটির ভর্তুকি বেড়ে ১৭৯ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে। অবশ্য ২০২১ সালের তুলনায় ২০২২ সালে তাদের জ্বালানি আমদানিও বেড়েছে।

যদি দাম অপরিবর্তিত থাকতো তাহলে গত বছর আর্জেন্টিনার জ্বালানি আমদানিতে ব্যয় হতো ৯০৩ কোটি ডলার। কিন্তু নতুন হিসাবে এর পরিমাণ ১ হাজার ৩২৭ কোটি ডলারে পৌঁছানোর কথা বলা হয়েছে। অর্থাৎ, যুদ্ধের জেরে জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়ায় আর্জেন্টিনার অতিরিক্ত খরচ হয়েছে অন্তত ৪২৪ কোটি ডলার। এর ফলে তাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও কমেছে।সূত্র: বুয়েন্স আয়ার্স হেরাল্ড

 

 

 

 

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • Visits Today: 14560
  • Total Visits: 1635385
  • Total Visitors: 4
  • Total Countries: 1714

আজকের বাংলা তারিখ

  • আজ সোমবার, ২৪শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ ইং
  • ১২ই ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (বসন্তকাল)
  • ২৪শে শা'বান, ১৪৪৬ হিজরী
  • এখন সময়, সকাল ১১:১৮

Archives

MonTueWedThuFriSatSun
     12
2425262728  
       
15161718192021
293031    
       
  12345
2728     
       
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
31      
  12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930   
       

https://youtu.be/dhqhRb9y018