November 12, 2025, 8:09 pm
শিরোনামঃ
ঝিনাইদহে দুইদিন ব্যাপি কৃষক প্রশিক্ষণের উদ্বোধন আগামী বছর হজ করতে পারবেন সাড়ে ৭৮ হাজার বাংলাদেশি বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আর্মি সার্ভিস কোরকে প্রস্তুত থাকতে সেনাপ্রধানের আহ্বান আসন্ন সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে প্রবাসী ভোটার নিবন্ধনে নির্দেশনা দিয়ে পরিপত্র জারি বাংলাদেশে অবস্থিত রোহিঙ্গাদের জন্য ২০ হাজার ২৬৫ মেট্রিক টন চাল সহায়তা দিল দ. কোরিয়া গত অক্টোবরে সারা দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৬৯ জন নিহত সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে মতবিনিময় সভা গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর নাকফুল- আংটি-বদনা ফিরে পেলেন বাগেরহাটের শ্রাবণী বাগেরহাটের চিতলমারী ও মোল্লাহাটে অবাধে চলছে অতিথি পাখি শিকার চাঁদপুরে পাঁচটি পাইপগানসহ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার
এইমাত্রপাওয়াঃ

শুরু হয়েছে মানুষের কৃত্রিম ডিএনএ তৈরির প্রকল্প

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : মানব জীবনের মূল ভিত্তি ডিএনএ কৃত্রিমভাবে তৈরির একটি বিতর্কিত প্রকল্প শুরু হয়েছে, যা বিশ্বে প্রথমবারের মতো বলে মনে করা হচ্ছে। বিবিসি বলছে, এই গবেষণা এতদিন নিষিদ্ধ ছিল। কারণ আশঙ্কা করা হচ্ছিল- এটি ডিজাইনার বেবি বা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য অপ্রত্যাশিত পরিবর্তনের দিকে নিয়ে যেতে পারে। কিন্তু এখন বিশ্বের বৃহত্তম চিকিৎসা দাতব্য সংস্থা ওয়েলকাম ট্রাস্ট এই প্রকল্প শুরু করার জন্য প্রাথমিকভাবে ১০ মিলিয়ন পাউন্ড অনুদান দিয়ে বলছে, এই গবেষণায় অপকারের চেয়ে উপকারের সম্ভাবনাই বেশি, কারণ এটি অনেক দুরারোগ্য রোগের চিকিৎসা দ্রুততার সঙ্গে করতে পারবে।

এই প্রকল্পে জড়িত ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের এমআরসি ল্যাবরেটরি অব মলিকুলার বায়োলজির ড. জুলিয়ান সেল বলেন, ‘এই গবেষণা জীববিজ্ঞানের ক্ষেত্রে একটি বড় ধরনের অগ্রগতি।’

তিনি বলেন, ‘এই গবেষণার সম্ভাবনার শেষ নেই। আমরা এমন চিকিৎসা পদ্ধতির কথা ভাবছি, যা মানুষের বার্ধক্যের সময় জীবনকে আরও উন্নত করবে এবং কম রোগে ভোগাসহ সুস্থ বার্ধক্য নিশ্চিত করবে।’

‘আমরা এমন কোষ তৈরি করার কথা ভাবছি- যেগুলো রোগপ্রতিরোধী হবে এবং ক্ষতিগ্রস্ত অঙ্গপ্রত্যঙ্গ, যেমন: যকৃত, হৃৎপিণ্ড এমনকি ইমিউন সিস্টেমে পুনরায় স্থাপন করা যাবে’, বলেন জুলিয়ান সেল। তবে সমালোচকদের আশঙ্কা, এই গবেষণাটি অসাধু গবেষকদের হাতে পড়লে তারা উন্নত বা পরিবর্তিত মানুষ তৈরির চেষ্টা করতে পারে।

ক্যাম্পেইন গ্রুপ বিয়ন্ড জিএমের পরিচালক ড. প্যাট থমাস বলেন, ‘আমরা ভাবতে ভালোবাসি যে, সব বিজ্ঞানী ভালো কাজের জন্যই গবেষণা করেন। কিন্তু এই বিজ্ঞানকে ক্ষতিকর কাজ বা যুদ্ধের জন্যও ব্যবহার করা যেতে পারে।’

এই প্রকল্পের বিস্তারিত বিবরণ বিবিসিকে দেওয়া হয় মানব জিনোম প্রকল্প সম্পন্ন হওয়ার ২৫তম বার্ষিকীতে, যা মানব ডিএনএতে থাকা অণুগুলো চিহ্নিত করেছিল এবং এর অর্থায়ন করেছিল মূলত ওয়েলকাম।

আমাদের শরীরের প্রতিটি কোষে একটি ডিএনএ অণু থাকে, যা এর প্রয়োজনীয় জিনগত তথ্য বহন করে। ডিএনএ চারটি ছোট উপাদান- এ, জি, সি এবং টি দিয়ে তৈরি। সেগুলো বিভিন্ন রকম বিন্যাসে বারবার পুনরাবৃত্ত হয় এবং অবিশ্বাস্যভাবে এই উপাদানগুলোই আমাদের শারীরিক গঠনের পূর্ণ তথ্য বহন করে।

মানব জিনোম প্রকল্প বিজ্ঞানীদের মানব জিন পড়ার ক্ষমতা দিয়েছে বারকোডের মতো। ‘সিনথেটিক হিউম্যান জিনোম প্রজেক্ট’ নামে পরিচিত নতুন এই প্রকল্প বিজ্ঞানীদের কেবল ডিএনএ অণু পড়তেই নয়, বরং এই অণুগুলোকে কৃত্রিমভাবে তৈরিতে সাহায্যও করবে- সম্ভবত একদিন সম্পূর্ণ ডিএনএ তৈরিও সম্ভব হবে।

বিজ্ঞানীদের প্রথম লক্ষ্য- মানব ডিএনএর বড় একটি অংশ তৈরির উপায় উদ্ভাবন করা, যতক্ষণ না তারা একটি সম্পূর্ণ কৃত্রিম মানব ক্রোমোজোম তৈরি করতে পারছেন। এই ক্রোমোজোমগুলো আমাদের শারীরিক উন্নয়ন, মেরামত এবং রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ন্ত্রণ করে। এরপর এগুলো নিয়ে গবেষণা করে জানা যাবে কীভাবে জিন এবং ডিএনএ আমাদের শরীরকে পরিচালনা করে।

মানব জিনোমের সর্বাধিক অংশ সিকোয়েন্স করা ওয়েলকাম স্যাঙ্গার ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ম্যাথু হারলেস মনে করেন, অনেক রোগ তখনই হয় যখন এই জিনগুলো ভুলভাবে কাজ করে, তাই এ ধরনের গবেষণা আরও উন্নত চিকিৎসার পথ খুলে দিতে পারে।

তিনি বলেন, ‘কৃত্রিমভাবে ডিএনএ তৈরি করলে আমরা বুঝতে পারব যে, এটি আসলে কীভাবে কাজ করে এবং নতুন নতুন তত্ত্ব পরীক্ষা করতে পারব। কেননা বর্তমানে আমরা শুধু বিদ্যমান জীবন্ত ডিএনএতে কিছু পরিবর্তন এনে তা করতে পারি।’

এই প্রকল্পের কাজ শুধু পরীক্ষাগার ও টেস্টটিউবেই সীমাবদ্ধ থাকবে এবং কৃত্রিম জীবন তৈরির কোনো চেষ্টা করা হবে না। কিন্তু এই প্রযুক্তি গবেষকদের মানুষের শরীরবৃত্তীয় সিস্টেমে নজিরবিহীন নিয়ন্ত্রণ এনে দেবে।

প্রকল্পটি চিকিৎসাগত সুবিধার জন্যই কাজ করবে বললেও, এই প্রযুক্তি অসৎ বিজ্ঞানীদের হাতে পড়লে এর অপব্যবহারের আশঙ্কা থেকেই যায়। তারা জৈব অস্ত্র, উন্নত মানুষ বা এমনকি মানব ডিএনএ-যুক্ত প্রাণী তৈরির চেষ্টা করতে পারে’, বলেন কৃত্রিম মানব ক্রোমোজোম তৈরির একটি পদ্ধতি উদ্ভাবনকারী এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের জিন বিজ্ঞানী অধ্যাপক বিল আর্নশ।

তিনি বলেন, ‘বোতল থেকে দৈত্য বেরিয়ে পড়েছে। এখন আমরা নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে পারি। কিন্তু কোনো সংস্থা যদি প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি পেয়ে যায় এবং ডিএনএ তৈরি করতে শুরু করে, তাহলে আমরা তা থামাতে পারব না।’

এই প্রযুক্তি স্বাস্থ্যসেবা কোম্পানিগুলোর দ্বারা কীভাবে বাণিজ্যিকীকরণ হবে, তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ড. প্যাট থমাস। তার প্রশ্ন, ‘আমরা যদি কৃত্রিম অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বা কৃত্রিম মানুষ তৈরি করি, তাহলে এদের মালিক কে হবে? এই সৃষ্টি থেকে প্রাপ্ত তথ্যের মালিকানা কার হবে?’

এই প্রযুক্তির সম্ভাব্য অপব্যবহারের আশঙ্কা থাকা সত্ত্বেও ওয়েলকাম ট্রাস্ট কেন এতে অর্থায়ন করল- এখন এই প্রশ্ন উঠেছে। এই অর্থায়নের সিদ্ধান্তদাতা ড. টম কলিন্স বলেন, ‘এটি হালকাভাবে নেওয়া কোনো সিদ্ধান্ত ছিল না।’

তিনি বলেন, ‘আমরা নিজেদের প্রশ্ন করেছি- যদি আমরা কিছু না করি, তাহলে এর মাশুল কত? এই প্রযুক্তি একদিন না একদিন চলে আসবেই। তাই আমরা এখনই এটি করছি যাতে যতটা সম্ভব দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কাজটি করা যায় এবং নৈতিক প্রশ্নগুলোর মোকাবিলা করা যায়।

এই প্রকল্পের বৈজ্ঞানিক উন্নয়নের পাশাপাশি একটি বিশেষ সামাজিক বিজ্ঞান প্রোগ্রামও চলবে, যার নেতৃত্ব দেবেন ইউনিভার্সিটি অব কেন্ট’র সমাজবিজ্ঞানী অধ্যাপক জয় ঝাং। তিনি বলেন, ‘আমরা বিশেষজ্ঞ, সমাজবিজ্ঞানী এবং বিশেষ করে সাধারণ মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি জানতে চাই যে, তারা এই প্রযুক্তিকে কীভাবে দেখছেন, কীভাবে উপকৃত হতে পারেন এবং তাদের উদ্বেগ বা প্রশ্নগুলো কী?’

আজকের বাংলা তারিখ

November ২০২৫
Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
« Oct    
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০


Our Like Page