এম এ কবীর, ঝিনাইদহ : বিগত এক বছরে ঝিনাইদহে সড়ক দুর্ঘটনায় ৭৯ জনের নিহত হয়েছে। এ সময় আহত হয়েছেন প্রায় পাঁচশাতাধীক মানুষ। চিরতরে পঙ্গু হয়েছেন অনেকে। এর মধ্যে বেশির ভাগ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে গ্রামীন রাস্তায়। পুরানো বছর জুড়ে সড়কে ছিল অবৈধ যানবাহনের দাপট এবং এখনো তা অব্যাহত রয়েছে। পুলিশ ও বিভিন্ন সরকারী দপ্তর সুত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালে ঝিনাইদহ সদর উপজেলায় সুড়ক দুর্ঘটনায় সবচে বেশি ২৪ জন মানুষের প্রানহানী ঘটেছে।
এছাড়া কালীগঞ্জ উপজেলায় ১৯ জন, মহেশপুর উপজেলায় ১৪ জন, শৈলকুপায় ১৩ জন, হরিণাকুন্ডু উপজেলায় ৬ জন এবং কোটচাঁদপুরে ৩ জন সড়কে প্রাণ হারান। বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো ও অসচেতনা এই দুর্ঘটনায় কারণ বলে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) ও ঝিনাইদহ জেলা ট্রাফিক বিভাগের কর্মকর্তারা জানান। অভিযোগ রয়েছে, উচ্চ আদালতের নিষেধ থাকা সত্তেও ঝিনাইদহর সড়ক মহাসড়ক জুড়ে অবৈধ যান চলাচল অব্যাহত রয়েছে। অবস্থা এমন এক পর্যায়ে পৌচেছে যে,আইন প্রয়োগ ও জরিমানা করেও অবৈধ যানবাহনের দাপট কমানো সম্ভব হচ্ছে না। ফলে জেলার বিভিন্ন গ্রামীন সড়কে অহরহ দুর্ঘটনা ঘটছে।
এদিকে ঝিনাইদহ শহর দিনকে দিন বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ছে। প্রধান প্রধান সড়ক ছাড়াও পৌরসভার অলিগলিতে ইজিবাইকের দাপট বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে ফুটপাত দিয়ে চলাও মুশকিল হয়ে পড়েছে। কোন ভাবেই ইজিবাইক নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেনা ট্রাফিট পুলিশ। দিন ও রাতে দুই শিফটে ইজিবাইক পরিচালনার প্রস্তাব ট্রাফিক পুলিশের পক্ষ থেকে দেয়া হলেও তা বাস্তবায়িত হচ্ছে না বলে অভিযোগ। ঝিনাইদহ ট্রাফিক পুলিশের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, ইজিবাইক এখন ঝিনাইদহ শহরের প্রধান সমস্যা এবং শহরবাসির গলার কাঁটা হয়ে দেখা দিয়েছে। এটি নিয়ন্ত্রন করা পুলিশের একার পক্ষে সম্ভব নয়। প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের সম্মিলিত উদ্যোগই পারে এই সমস্যার সমাধান করতে। সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে ঝিনাইদহ হাইওয়ে পুলিশের পুরিদর্শক মিজানুর রহমান বলেন, মহাসড়কগুলো অবৈধ যানজট মুক্ত করতে পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। প্রতিদিন অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হচ্ছে, মামলা ও জরিমানা করা হচ্ছে। চালকদের সচেতনতা ও দুর্ঘটনা এড়াতে সেমিনার এবং প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও সচেতন না হলে দুর্ঘটনা হ্রাস করা সম্ভব হবে না।
Leave a Reply