“মুনুষের মধ্যে যার সেখানে যাওয়ার ক্ষমতা আছে মহান আলাহর উদ্দেশ্যে ঐ গৃহের হজ্জ করা তার অবশ্য কর্তব্য এবং কেউ প্রত্যাখ্যন করলে সে জেনে রাখুক মহান আলাহ সমগ্র সৃষ্টি জাহানের অ-মুখাপেক্ষী।” ( সূরা ঃ আলে ইমরান ঃ আয়াত ঃ ৯৭)
১. হযরত আবদুলাহ ইবনে উমার রাদিয়ালাহু আনহু হতে বর্ণিত। রাসুলুলাহ সলালাহু আলাইহি ওয়া সালাম বলেন, পাঁচটি বিষয়ের ওপর ইসলামের বুনিয়াদ স্থাপন করা হয়েছে- এ কথার সাক্ষ্য দেয়া যে, মহান আলাহ ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই এবং মুহাম্মদ সলালাহু আলাইহি ওয়া সালাম মহান আলাহর রাসূল, নামায কায়েম করা, যাকাত দেয়া, বায়তুলাহর হজ্জ করা এবং রমযানের রোযা রাখা। (বোখারী ও মুসলিম শরীফ)
২. হযরত আবূ হুরায়রা রাদিয়ালাহু আনহু হতে বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলেন, রসুলুলাহ সলালাহু আলাইহি ওয়া সালাম-কে প্রশ্ন করা হয়েছিল, কোন কাজটি সবচেয়ে উত্তম? তিনি উত্তর দিয়েছিলেন- “মহান আলাহ ও তাঁর রাসূলের উপর ঈমান আনা।” প্রশ্ন করা হয়েছিল- অতঃপর কোন কাজটি? উত্তর দিয়েছিলেন- “অতঃপর উত্তম হচ্ছে মহান আলাহর পথে জিহাদ করা।”প্রশ্ন করা হয়েছিল, অতঃপর কোনটি? উত্তর দিয়েছিলেন- “তারপর হজ্জে মাবরূর (মাকবুল) হজ্জ।” (বোখারী ও মুসলিম শরীফ)
৩. হযরত আবূ হুরায়রা রাদিয়ালাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রসুলুলাহ সলালাহু আলাইহি ওয়া সালাম-কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি হজ্জ করে, তার মধ্যে বাজে কথা বলে না এবং কোন গুনাহর কাজও করে না, সে নিজের গুনাহ থেকে এমনভাবে মুক্ত ও পাকপবিত্র হয়ে ফিরে যায় যেন তার মা তাকে (এখনই) প্রসব করেছে। (বোখারী ও মুসলিম শরীফ)
৪. হযরত আবূ হুরায়রা রাদিয়ালাহু আনহু হতে বর্ণিত। রসুলুলাহ ালালাহু আলাইহি ওয়া সালাম বলেছেন, এক উমরা হতে অন্য উমরা পর্যন্ত সময়টি অন্তবর্তীকালীন গুনাহ্র কাফ¥ফারা হয়। আর মাবরূর (মাকবুল) হজ্জের প্রতিদান হচ্ছে একমাত্র জান্নাত। (বোখারী ও মুসলিম শরীফ)
৫. হযরত আয়েশা সিদ্দীকা রাদিয়ালাহু আনহা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি প্রশ্ন করলাম, ইয়া রসুলুলাহ! আমরা তো দেখছি জিহাদই হচ্ছে সর্বশ্রেষ্ঠ আমল। তাহলে আমরা জিহাদ করবো না কেন? উত্তর দিলেন, তোমাদের জন্য মাবরূর (মাকবুল) হজ্জই হচ্ছে শ্রেষ্ঠ জিহাদ। (মুসলিম)
৬. হযরত আয়েশা সিদ্দীকা রাদিয়ালাহু আনহা থেকে বর্ণিত হয়েছে। রসুলুলাহ সলালাহু আলাইহি ওয়া সালাম বলেছেন, আরাফাতের দিনের চেয়ে বেশি (সংখ্যক) আর কোনদিন মহান আলাহ বান্দাকে দোযখ থেকে মুক্তি দেন না। (মুসলিম শরীফ)
৭. হযরত আবদুলাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়ালাহু আনহু হতে বর্ণিত। রসুলুলাহ সলালাহু আলাইহি ওয়া সালাম বলেন, রমযান মাসে উমরা করা হজ্জের সমান। অথবা আমার সাথে হজ্ব করার সমান (বোখারী ও মুসলিম)
৮. হযরত আবদুলাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়ালাহু আনহু থেকে বর্ণিত। জনৈকা মহিলা বললেন, ইয়া রসুলুলাহ সলালাহু আলাইহি ওয়া সালাম! মহান আলাহ তাঁর বান্দাদের ওপর হজ্ব ফরয করেছেন। কিন্তু আমি দেখছি আমার পিতা অত্যন্ত বৃদ্ধ হয়ে পড়েছেন। তিনি সাওয়ারীর পিঠে বসতে সমর্থ নন। তার পক্ষ থেকে কি আমি হজ্ব করতে পারি? উত্তর দিলেন, হ্যাঁ! করতে পার। (বোখারী ও মুসলিম শরীফ)
৯. হযরত লাকীত ইবনে আমির রাদিয়ালাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি রসুলুলাহ সলালাহু আলাইহি ওয়া সালাম-এর নিকট এসে বললেন, আমার পিতা অত্যন্ত বৃদ্ধ হয়ে পড়েছেন। তাঁর হজ্ব এবং ওমরা করার ও এজন্য সফর করার ক্ষমতা নেই। তিনি বলেন, তুমি নিজের পিতার পক্ষ হতে হজ্ব ও উমরা কর। (আবূ দাউদ ও তিরমিযী শরীফ)
১০. হযরত সায়িব ইবনে ইয়াযীদ রাদিয়ালাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমাকে সাথে নিয়ে বিদায় হজ্বে রসুলুলাহ সলালাহু আলাইহি ওয়া সালাম-এর সাথে হজ্ব করা হয়। সে সময় আমার বয়স ছিল সাত বছর। (বোখারী শরীফ)
১১. হযরত আবদুলাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়ালাহু আনহু থেকে বর্ণিত। (তিনি বলেন), রাওহা নামক স্থানে রসুলুলাহ সলালাহু আলাইহি ওয়া সালাম-এর সাক্ষাৎ হলো কিছু সাওয়ারের সাথে। তিনি প্রশ্ন করলেন, তোমরা কারা? তারা বলল, আমরা মুসলমান। তারা পাল্টা প্রশ্ন করল, আপনি কে? তিনি উত্তর দিলেন, মহান আলাহর রসূল! একথা শুনে একটি মেয়ে তার বাচ্চাকে সামনে এনে জিজ্ঞেস করলেন, এরও কি হজ্ব হয়ে যাবে? তিনি উত্তর দিলেন, হ্যাঁ! হয়ে যাবে, তবে সাওয়াবটা পাবে তুমি। (মুসলিম শরিফ)
১২. হযরত আনাস রাদিয়ালাহু আনহু হতে বর্ণিত। (তিনি বলেন) রসুলুলাহ সলালাহু আলাইহি ওয়া সালাম একটি হাওদার ওপর হজ্ব করেন এবং নিজের মালপত্রও তার উপর রাখেন। (বোখারী)
১৩. হযরত আবদুলাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়ালাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, জাহেলিয়াতের যুগে উকায, মাযান্নাহ ও যুল-মাজায ছিল তিনটি বাজার। (ইসলামের যুগের প্রারম্ভে) লোকেরা হজ্বের মওসুমে ঐ তিনটা বাজারে ব্যবসা করা গুনাহ মনে করতে লাগল। তখন নিমেèাক্ত আয়াতটি নাযিল হলো- “তোমরা হজ্বের মওসুমে তোমাদের প্রতিপালকের অনুগ্রহ (হালাল রিযিক) সন্ধান করলে তাতে কোন ক্ষতি নেই।” (সূরা ঃ বাকারা ঃ আয়াত ঃ ১৯৮) (বোখারী শরীফ)
Leave a Reply