অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত ৯ জনের মরদেহ কবর থেকে তুলে ময়নাতদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে শিগগিরই এ মরদেহ তুলে পরবর্তী ব্যবস্থা নিতে পুলিশকে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও বানিয়াচং থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গীর আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
নিহতরা হলেন- বানিয়াচং উপজেলার কুন্ডুর পাড়ের মো. ছানু মিয়ার ছেলে হোসাইন মিয়া, জাতুকর্ণপাড়ার মো. আব্দুন নূরের ছেলে মো. আশরাফুল ইসলাম, আব্দুর রউফ মিয়ার ছেলে মো. তোফাজ্জল হোসেন, পাড়াগাঁওয়ের মো. শমসের উল্লার ছেলে মো. মোজাক্কির মিয়া, পূর্বগড়ের মো. ধলাই মিয়ার ছেলে মো. সাদিকুর রহমান, কামালখানী মহল্লার মৃত মো. আলী হেসেনের ছেলে শেখ নয়ন হোসেন, সাগর দিঘীর পূর্বপাড়ের মৃত মোশাহিদ আখঞ্জীর ছেলে সোহেল আখঞ্জী, চানপুরের মৃত তাহের মিয়ার ছেলে আকিনুর রহমান, খন্দকার মহল্লার মো. আবুল হোসেনের ছেলে মো. আনাস মিয়া।
বানিয়াচং থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গীর আলম জানান, প্রায় দুই সপ্তাহ আগে তিনি হবিগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মরদেহ তোলার আদেশ চেয়ে আবেদন করলে বিচারক মো. আবদুল আলীম তা মঞ্জুর করেছেন। এরপর থেকে অতি গোপনীয়তা রক্ষা করা হয় বিষয়টি নিয়ে।
পুলিশ জানায়, গত ৫ আগস্ট বেলা ১১টায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সাগরদিঘীর পশ্চিমপাড় ঈদগাহ মাঠ থেকে মিছিল বের করে। গ্যানিংগঞ্জ বাজার প্রদক্ষিণ শেষে মিছিলকারী ৪-৫ হাজার লোক বড়বাজার শহীদ মিনারে গিয়ে জড়ো হন। পরে বিক্ষুব্ধ জনতা মিছিল নিয়ে থানার সামনে গেলে পুলিশের সঙ্গে তাদের কথা কাটাকাটি হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘটনার সময় পুলিশ রাবার বুলেট, কাঁদানে গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। পুলিশের গুলিতে ঘটনাস্থলে চারজনসহ মোট সাতজন নিহত হন। এ সময় ছবি তুলতে গেলে বিক্ষুব্ধরা এক সাংবাদিককে পিটিয়ে হত্যা করে। এ নিয়ে মোট নিহতের সংখ্যা হয় আট। এরপর বিক্ষুব্ধ জনতা থানার উপপরিদর্শক সন্তোষ চৌধুরীকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে। পরদিন গুলিবিদ্ধ আরেকজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
এ ঘটনায় নিহত ৯ জনের পরিবারের পক্ষ থেকে ও এসআই সন্তোষ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে ও আহত একজনের বাবার পক্ষ থেকে মোট তিনটি মামলা করা হয়। এসব মামলায় আসামি প্রায় ১০ হাজার।
মরদেহ তোলার বিষয়ে এসআই জাহাঙ্গীর বলেন, জেলা প্রশাসন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দিলে শিগগিরই এ আদেশ বাস্তবায়ন করা হবে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে দায়ের করা হত্যা মামলায় আদালত এ আদেশ দিয়েছেন।
Leave a Reply