23 Feb 2025, 03:30 am

হাজারো নারীকে ধর্ষনের দায়ে স্বঘোষিত ধর্মগুরুর ৮ হাজার ৬শত ৫৮ বছর কারাদণ্ড

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : খুন, ধর্ষণ, নারীদের যৌনদাসী বানিয়ে রাখাসহ একাধিক গুরুতর অভিযোগে তুরস্কের স্বঘোষিত এক ধর্মগুরুকে ৮ হাজার ৬শত ৫৮ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। স্বঘোষিত ওই ধর্মগুরুর নাম আদনান ওকতার (৬৬)। তার কুকীর্তি ছাপিয়ে গেছে ভারতীয় ‘ধর্মগুরু’ রাম রহিমের কুকীর্তিকেও।

এক প্রতিবেদনে ডেইলি মেইল জানায়, ইস্তাম্বুলের ফৌজদারি আদালত গেল ১৭ নভেম্বর ওকতার এবং তার ১৩ সহযোগীকে ৮ হাজার ৬৫৮ দিনের কারাদণ্ড দিয়েছে।

আদনান ওকতার হারুন ইয়াইয়া নামেও পরিচিত।

ওকতারের আশপাশে সব সময় সুন্দরী রমণী ঘিরে থাকতেন। আদালতে ওকতার স্বীকার করেছিলেন, তার একটি বা দুইটি নয়, ১০০০ ‘গার্লফ্রেন্ড’ রয়েছে। ওই নারীদের তিনি ‘পোষা বিড়াল’ বলে ডাকতেন।

ফাইন আর্টস নিয়ে পড়াশোনা করার পর ধর্মগুরুর পথ বেছে নেন আদনান। ১৯৮০ সালে ধর্মগুরু হিসাবে পেশাগত জীবন শুরু করেন তিনি।

ধর্মগুরু হিসাবে কাজ করতে করতেই আদনানসিলর নামে একটি সংগঠন খোলেন এই তিনি। পরে ১৯৯০ সালে সায়েন্স রিসার্চ ফাউন্ডেশন খুলে নারীদের পোশাক নিয়ে গবেষণার কাজ শুরু করেন। নারীদের জন্য আধুনিক এবং ছোট পোশাক বানিয়ে ব্যবসাতেও নামেন।

সংগঠনের আড়ালে আদনান অসামাজিক কাজকর্মের একটা সাম্রাজ্য গড়ে তুলেন। তার পরই ২০১৬ সালে তার আস্তানায় এবং সংগঠনের দপ্তরে তল্লাশি চালায় তুর্কি পুলিশ। ২০১৭ সালে ফের তল্লাশি চালায় পুলিশ। তখন ওকতার কোনো রকমে পালিয়ে বাঁচেন।

পরে নাবালিকাদের যৌন হয়রানি, ধর্ষণ, প্রতারণা, রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টিতে উস্কানি এবং গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে ২০১৮ সালে ওকতারকে গ্রেপ্তার করে তুরস্ক পুলিশ।

একটি টেলিভিশন চ্যানেল চালাতেন ওকতার। ধর্ম নিয়ে জনপ্রিয় টক শো-ও করতেন সেখানে। কিন্তু গ্রেপ্তার হওয়ার পর এ৯ নামে সেই টিভি চ্যানেল বন্ধ করে দেয় পুলিশ।

সংগঠন চালানোর নামে ওকতার ১০০০ তরুণীকে জোর করে যৌনদাসী বানিয়ে তাদের ওপর নিপীড়ন চালাতেন।

নারীদের ত্বকের সমস্যা দূর করার কথা বলে তাদের জোর করে গর্ভনিরোধক ওষুধ খাওয়ানোর অভিযোগ ওঠে ওকতারের বিরুদ্ধে।

তার আস্তানায় তল্লাশি চালানোর সময় ৬৯ হাজারের বেশি গর্ভনিরোধক ওষুধ পেয়েছিল পুলিশ।

ওকতারের সংগঠনের এক সদস্য সাক্ষাৎকারে বলেন, কেউ যদি সংগঠন ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করতেন, তার জীবন নরকে পরিণত করতে দ্বিধাবোধ করতেন না এই স্বঘোষিত ধর্মগুরু। ওকতারের রাজনৈতিক প্রভাবও ছিল যথেষ্ট মজবুত। ফলে সংগঠন ছেড়ে পালিয়ে কেউ রেহাই পেতেন না।

 

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *