November 12, 2025, 9:47 pm
শিরোনামঃ
ঝিনাইদহে দুইদিন ব্যাপি কৃষক প্রশিক্ষণের উদ্বোধন আগামী বছর হজ করতে পারবেন সাড়ে ৭৮ হাজার বাংলাদেশি বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আর্মি সার্ভিস কোরকে প্রস্তুত থাকতে সেনাপ্রধানের আহ্বান আসন্ন সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে প্রবাসী ভোটার নিবন্ধনে নির্দেশনা দিয়ে পরিপত্র জারি বাংলাদেশে অবস্থিত রোহিঙ্গাদের জন্য ২০ হাজার ২৬৫ মেট্রিক টন চাল সহায়তা দিল দ. কোরিয়া গত অক্টোবরে সারা দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৬৯ জন নিহত সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে মতবিনিময় সভা গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর নাকফুল- আংটি-বদনা ফিরে পেলেন বাগেরহাটের শ্রাবণী বাগেরহাটের চিতলমারী ও মোল্লাহাটে অবাধে চলছে অতিথি পাখি শিকার চাঁদপুরে পাঁচটি পাইপগানসহ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার
এইমাত্রপাওয়াঃ

৪৬ হাজার বছর পর জীবন ফিরে পেল সাইবেরিয়ান কেঁচো জাতীয় হিমায়িত কীট

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক কোনো প্রাণী হাজার হাজার বছর হিমায়িত থাকার পরও জীবন ফিরে পেতে পারে এমনটি ভাবা সাধারণভাবে কঠিন। কিন্তু সাইবেরিয়ার পারমাফ্রোস্ট থেকে আবিষ্কৃত এক ক্ষুদ্র প্রাণী এই ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করেছে।

সম্প্রতি পিএলওএস জেনেটিকস জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়, গবেষকরা নিশ্চিত করেছেন যে, প্রায় ৪৬ হাজার বছর ধরে বরফে আটকে থাকা এক কেঁচো জাতীয় কীট প্রাণ ফিরে পেয়েছে এবং জীবিত রয়েছে।

জার্মানির ইউনিভার্সিটি অব কোলোনের প্রাণীবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের গবেষক ড. ফিলিপ শিফার ও তার সহকর্মীরা এই কীটের অস্বাভাবিকভাবে এত দীর্ঘ সময় ধরে টিকে থাকার রহস্য উদ্ঘাটনের চেষ্টা করছেন।

সাইবেরিয়ার পারমাফ্রোস্ট: কঠিন পরিবেশের সংরক্ষণাগার : সাইবেরিয়ায় বিশাল অঞ্চলজুড়ে পারমাফ্রোস্ট বিস্তৃত রয়েছে, যা এমন এক স্তর যেখানে মাটি বা তলদেশের পদার্থ অন্তত দুই বছর ধরে জমাট বাঁধা থাকে।

কিছু কিছু অঞ্চলে এই বরফস্তর কয়েকশ’ ফুট গভীর পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে। প্রচণ্ড ঠান্ডার কারণে এখানে আটকে থাকা যে-কোনো জৈবিক উপাদান দীর্ঘ সময় ধরে অক্ষত থাকে, যা হাজার হাজার বছর পরও গবেষণার উপযোগী থাকে।

জীবন থামিয়ে রাখার ক্ষমতা : জীবিত ফিরে আসা এই কীটটি এমন এক গণের অংশ, যা ‘ক্রিপ্টোবায়োসিস’ নামে পরিচিত এক বিশেষ অবস্থায় প্রবেশ করতে পারে।

এই অবস্থায় প্রাণের কোনো প্রধান বিপাকীয় কার্যকলাপ হয় না, ফলে প্রাণীটি মারাত্মক প্রতিকূল পরিবেশেও বেঁচে থাকতে পারে।

বিজ্ঞানীরা আগেও টার্ডিগ্রেড এবং কিছু লবণাক্ত জলের চিংড়ির ক্ষেত্রে এমন আচরণ লক্ষ্য করেছেন। এরা নিজেদের দেহক্রিয়া সম্পূর্ণ বন্ধ রেখে আবার অনুকূল পরিবেশ ফিরে আসার অপেক্ষায় থাকতে পারে।

জমাটবাঁধা কীটের গুরুত্ব : গবেষকরা জানিয়েছেন, উদ্ধার হওয়া এই নিম্যাটোডের নাম পানাগ্রোলাইমাস কোলাইমেনসিস। এটি আগে বিজ্ঞানীদের কাছে পরিচিত ছিল না।

রেডিওকার্বন ডেটিং অনুযায়ী এই নমুনাটি হাজার হাজার বছরে প্রাচীন। অর্থাৎ এটি প্রায় পুরো সময়ই বরফের নিচে ঘুমিয়ে ছিল।

প্রায় ৩৭ মিটার গভীর থেকে উদ্ধার করা এই কীট চরম ঠান্ডার কারণে সুরক্ষিত ছিল এবং আধুনিক গবেষণাগারে এটি পুনরায় স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু করতে সক্ষম হয়, এমনকি নতুন প্রজন্মও উৎপন্ন করেছে।

টিকে থাকার অনন্য কৌশল : গবেষকদের মতে এই ধরনের নিম্যাটোড সাধারণত মাত্র এক থেকে দুই মাস বাঁচে। কিন্তু হিমায়িত থাকা কীটটি তার জীবনচক্রকে ৪৬ হাজার বছর পর্যন্ত বাড়িয়ে নিতে পেরেছে।

বিশেষ কিছু অণু হয়তো এদের কোষগুলোকে স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করেছে, যার ফলে তা প্রচণ্ড ঠান্ডা বা শুষ্কতার মধ্যেও অক্ষত থেকেছে।

ড. শিফার বলেন, ‘এতো দীর্ঘ সময় ধরে ক্রিপ্টোবায়োসিস বজায় রাখা সম্ভব বলে কেউ ভাবেননি। ৪০ হাজার বছর বা তারও বেশি সময় পর আবার জীবন ফিরে আসতে পারে- এটি সত্যিই বিস্ময়কর।’

হিমায়িত কীটের জিনগত রহস্য : গবেষকরা এই কীটের জিনোম সিকোয়েন্সিং করেছেন এবং দেখেছেন যে এর জিনগত গঠনের সঙ্গে কেনোরহাবডাইটিস এলিগ্যান্স নামক একটি পরিচিত নিম্যাটোডের কিছুটা মিল রয়েছে।

এই ধরনের স্ট্যাসিস বা স্থগিত জীবনপ্রবাহ টার্ডিগ্রেডদের মধ্যেও দেখা যায়। ২০১৭ সালে নাসার এক গবেষণায় দেখা যায়, তারা মহাকাশের কঠিন পরিবেশ সহ্য করতে পারে। এ থেকে ইঙ্গিত মেলে যে ক্ষুদ্র প্রাণীদের মধ্যে চরম প্রতিকূলতা-প্রতিরোধী বিশেষ ব্যবস্থা থাকতে পারে।

অন্যদিকে কিছু বীজও দীর্ঘদিন ঠান্ডা পরিবেশে সংরক্ষিত থাকার পরও অঙ্কুরিত হতে পারে। তবে, এই কীটের হিমায়িত থাকার সময়কাল তার তুলনায় অনেক বেশি, যা এটিকে এক অনন্য উদাহরণে পরিণত করেছে।

ক্রিপ্টোবায়োসিস সম্ভাব্য প্রয়োগ ; বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, মরুভূমি, মেরু অঞ্চল বা এমনকি অন্য গ্রহেও এ ধরনের প্রাণী থাকতে পারে। মঙ্গলগ্রহ বা শনির উপগ্রহগুলোর মতো শীতল পরিবেশে প্রাণের অস্তিত্ব অনুসন্ধানে এই গবেষণা নতুন দিকনির্দেশনা দিতে পারে।

এছাড়া খাদ্য সংরক্ষণ বা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে এই জিনগত প্রযুক্তি কাজে লাগতে পারে। যদি বিজ্ঞানীরা কোষের বরফ প্রতিরোধী জিন আলাদা করতে পারেন, তবে ভবিষ্যতে এটি মানব অঙ্গ সংরক্ষণ বা জৈবিক নমুনা সংরক্ষণে ব্যবহার করা যেতে পারে।

গবেষণার ভবিষ্যৎ দিক : মূল নমুনাটি এখন মৃত, তবে গবেষকরা এর সন্তানদের নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে লালন-পালন করছেন।

এতে দেখা যাবে, কীভাবে এই নিম্যাটোডরা দীর্ঘ সময় ধরে পানি শূন্যতা, তাপমাত্রার পরিবর্তন এবং সুপ্ত অবস্থা সহ্য করতে পারে।

গবেষকরা এখন এর কোষে থাকা বিশেষ প্রোটিন বা চিনি শনাক্ত করার চেষ্টা করছেন, যা পানির পরিবর্তে কোষে জমা হয় এবং ক্রিপ্টোবায়োসিস বজায় রাখে।

এ ছাড়া তারা আরও প্রাচীন পারমাফ্রোস্ট নমুনার অনুসন্ধান চালিয়ে যেতে চান, যা থেকে প্রাগৈতিহাসিক জীবের সুদীর্ঘ দিন টিকে থাকার বিষয়ে নতুন তথ্য পাওয়া যেতে পারে।

 

আজকের বাংলা তারিখ

November ২০২৫
Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
« Oct    
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০


Our Like Page