অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : বিএনপির সংসদ সদস্যদের পদত্যাগে শূন্য হওয়া ৫টি আসনের উপনির্বাচনে থাকবে না সিসিটিভি ক্যামেরা। বরাদ্দ না থাকায় ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় এই পাঁচ আসনের কোনোটাতেই সিসিটিভি থাকবে না বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা।
বগুড়া-৪ এবং বগুড়া-৬ উপনির্বাচনের প্রিসাইডিং অফিসারদের সঙ্গে মঙ্গলবার মতবিনিময় সভার পর সাংবাদিকদের তিনি এ তথ্য জানান। দুপুর সাড়ে ১২টায় বগুড়া জেলা পরিষদের প্রিসাইডিং অফিসারদের সঙ্গে এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ইসি রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘আজেট কম থাকায় এই উপনির্বাচনে ৫টি আসনের কোনোটাতেই সিসিটিভি ক্যামেরা থাকবে না। তবে নির্বাচনের পরিবেশ সুষ্ঠু রাখার জন্য সব কিছু করবে নির্বাচন কমিশন।’
‘এই উপ-নির্বাচন যে হবে এটার কিন্তু সম্ভাবনা আমরা দেখিনি। এটা তো হঠাৎ করেই একটা ঘটনা ঘটে গেছে। এখন আমাদের পর্যাপ্ত বাজেট নেই।’
তিনি বলেন, ‘গাইবান্ধার উপনির্বাচনে আগে থেকেই বাজেটসহ সবকিছু নির্ধারন করা ছিলো। আমরা সিসি ক্যামেরা করবো না বা করবো এরকম কিন্তু আইনে বাধ্যবাধকতাও নেই।’
‘এর আগে করেছিলাম তার একটাই কারণ সবাই বলছিলো, ভোটে অনেক কিছু ঘটে। আসলে ঘটে কিনা সেটা একটু দেখার জন্যই করা হয়েছিলো। এটা আমরা ভবিষ্যতে করবো না তাও বলবো না, করবো তাও বলবো না। এটা নির্ভর করবে সময়ের উপর।’
সিসি ক্যামেরা না থাকলে মনিটরিং করবেন কিভাবে? সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘সবচেয়ে বড় চোখ মিডিয়ার। যখন সিসি ক্যামেরা ছিল না তখন কিন্তু সুন্দর নির্বাচন হয়েছে। অনেক অনিয়ম কিন্তু আমরা দেখেছি। আমি মনে করি আপনারা আমাদের বড় চোখ। আপনাদের চোখ দিয়ে আমাদের দেখান।’
পাঁচ আসনে উপনির্বাচনে যদি সিসিটিভি ক্যামেরা দেওয়ার বাজেট না থাকে তাহলে আগামী জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম বা সিসি ক্যামেরা থাকছে কি না এই প্রশ্নের কোনো মন্তব্য করতে চাননি এই নির্বাচন কমিশনার।
এদিকে আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে রাশেদা সুলতান বলেন, ‘আমাদের একটাই উদ্দেশ্য আগামী জাতীয় নির্বাচন যেন সুষ্ঠু-সুন্দর অবাধ হয়। ভোটাররা যাতে নির্বিঘ্নে এসে ভোট দিতে পারেন এই ফিল্ডটা তৈরি করা।’
‘নির্বাচন গ্রহণযোগ্য করার জন্য আমরা শুরু থেকেই বলে আসছি, সব দলকেই আমরা চাই। ৩৯টি দল আমাদের নিবন্ধিত আছে। তারা সবাই প্রার্থী দেবে। সবাই আসবে এটাই আমাদের চাওয়া। সবদল যেন নির্বাচনে অংশ নেয় সেই ক্ষেত্রগুলো তৈরির চেষ্টা করে যাচ্ছি।’
নির্বাচন কমিশন চায় সব দল আসুক জানিয়ে ইসি রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘এরপরও যদি তারা মনে করেন তারা আসবেন না তাহলে আর কি করার আছে আমাদের। সেক্ষেত্রে সাংবিধানিক মতে আমাদের নির্বাচন করতে হবে, আমরা তো এর বাইরে যেতে পারবো না।’
বগুড়ার দুই আসনে উপনির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সব প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারণা নিশ্চিতের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে সংশ্লিষ্টদের। ভোটের দিনের জন্য প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আপনারা এমনভাবে ভোট অনুষ্ঠিত করবেন যাতে ভোটাররা এসে ভোট দিতে পারেন এবং তারা যেন বাইরে গিয়ে বলতে পারেন আমরা ভোট দিয়ে এসেছি।’
মতবিনিময় সভায় বগুড়া জেলা রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলাম, জেলা পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী, জেলা সিনিয়র নির্বাচন অফিসার মো. মাহমুদুল হাসান, কাহালু উপজেলা নির্বাহী অফিসার মেরিনা আফরোজ, নন্দীগ্রাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিফা নুসরাত প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, গত ১০ ডিসেম্বর ঢাকার গোলাপবাগে বিভাগীয় গণসমাবেশে বিএনপির সংসদ সদস্যরা একযোগে পদত্যাগের ঘোষণা দেন। পরদিন তারা সংসদ ভবনে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর দপ্তরে গিয়ে পদত্যাগপত্র জমা দেন।
বিএনপির সংসদ সদস্যদের ছেড়ে যাওয়া এসব আসনে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ১ ফেব্রুয়ারি। আসনগুলো হচ্ছে—ঠাকুরগাঁও-৩, বগুড়া-৪, বগুড়া-৬, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২।
Leave a Reply