November 8, 2025, 2:25 pm
শিরোনামঃ
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের পুকুরিয়ার মাঠ থেকে অজ্ঞাত নারীর লাশ উদ্ধার প্রাথমিকের শিক্ষক পদে আবেদন করতে পারবেন না ধূমপায়ীরা আগামীকাল রোববার থেকে সারাদেশে প্রাথমিক শিক্ষকদের কর্মবিরতি ঘোষণা সাপের কামড়ের এন্টি ভেনম সব উপজেলায় পাঠাতে ওষুধ প্রশাসনের নির্দেশ গণভোট আগামী নির্বাচনের পর করতে হবে : বিএনপি নেতা আমীর খসরু দেশের রাজনীতি স্থিতিশীল থাকলে অর্থনীতি আরও ভালো চলবে : বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর গোপালগঞ্জে ২ হাজার ৮২০ জন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে বীজ-সার বিতরণ শীতের আগমনী বার্তার মাঝে চুয়াডাঙ্গায় খেজুরের রস সংগ্রহে গাছ প্রস্তুত করতে ব্যস্ত গাছিরা মাগুরা জেলা পরিষদের অর্থায়নে অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাইসাইকেল বিতরণ বাংলাদেশ ও ড. ইউনূসসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাতের সাক্ষাৎকার
এইমাত্রপাওয়াঃ

৯৭ বছর বয়সে মারা গেলেন ডিএনএ আবিষ্কারক নোবেলজয়ী বিজ্ঞানী জেমস ওয়াটসন

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ডিএনএ’র দ্বি-হেলিক্স কাঠামো আবিষ্কারক নোবেলজয়ী বিজ্ঞানী জেমস ওয়াটসন মারা গেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৭ বছর।

নিউইয়র্ক থেকে এএফপি জানায়, খ্যাতনামা এই মার্কিন জীববিজ্ঞানী বৃহস্পতিবার নিউইয়র্কের লং আইল্যান্ডের এক ‘হসপিস কেয়ার’-এ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

হসপিস কেয়ার হলো এমন এক ধরনের চিকিৎসা ও সেবা ব্যবস্থা। এ ধরনের সেবা মূলত সেই সব রোগীদের দেওয়া হয়, যাদের রোগ নিরাময় করা সম্ভব নয় এবং যারা জীবনের শেষ পর্যায়ে রয়েছেন।

ওয়াটসন দীর্ঘ সময় ধরে কোল্ড স্প্রিং হারবার ল্যাবরেটরিতে কর্মরত ছিলেন। প্রতিষ্ঠানটি তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে।

১৯৫৩ সালে গবেষক ফ্রান্সিস ক্রিকের সঙ্গে ডিএনএ’র দ্বি-হেলিক্স কাঠামো আবিষ্কার করে বিজ্ঞান জগতে বিপ্লব ঘটান ওয়াটসন।

এই আবিষ্কারের জন্য তিনি ক্রিক ও মরিস উইলকিন্সের সঙ্গে ১৯৬২ সালে নোবেল পুরস্কার পান।

এই আবিষ্কার আধুনিক জীবনের এক নবযুগের সূচনা করে, যা চিকিৎসা, ফরেনসিক ও জেনেটিক্সে বিপ্লব ঘটায়। যেমন- অপরাধ তদন্তে ডিএনএ পরীক্ষা বা জিনগতভাবে পরিবর্তিত উদ্ভিদ তৈরির প্রযুক্তি।

ওয়াটসন মাত্র ২৫ বছর বয়সে এই যুগান্তকারী আবিষ্কারে যুক্ত হন। পরে ক্যান্সার গবেষণা ও মানব জিনোম মানচিত্র তৈরিতেও তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।

১৯৬৮ সালে প্রকাশিত তার স্মৃতিকথা ‘দ্য ডবল হেলিক্স’ ছিল একটি বেস্টসেলার বই। বইটি বিজ্ঞানী সমাজের প্রতিযোগিতা ও আবিষ্কারের গল্প সহজ ভাষায় তুলে ধরে।

তবে ব্যক্তিগত জীবনে ওয়াটসন ছিলেন স্পষ্টভাষী, অনেক সময় বিতর্কিত।

প্রায়শই নারী বিজ্ঞানীদের নিয়ে অবজ্ঞাসূচক মন্তব্য করতেন তিনি, যাদের মধ্যে রোজালিন্ড ফ্র্যাঙ্কলিনও ছিলেন।

রোজালিন্ডের ‘এক্স-রে বিকিরণ চিত্র’/‘এক্স-রে ডিফ্র্যাকশন ইমেজ’ কাজের ওপর ভিত্তি করেই ওয়াটসন ও ক্রিক ডিএনএ মডেল তৈরি করেন।

কিন্তু উইলকিন্সের সঙ্গে কাজ করা রোজালিন্ড ফ্র্যাঙ্কলিন নোবেল পুরস্কার পাননি। তিনি ১৯৫৮ সালে মারা যান আর এই মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার তিন জনের বেশি ব্যক্তিকে দেওয়া হয় না এবং মরণোত্তর পুরস্কারও দেওয়া হয় না।

২০০৭ সাল পর্যন্ত ওয়াটসনের আচরণের জন্য তাকে তেমন কোনো পরিণতির সম্মুখীন হতে হয়নি।

সে বছর তিনি একটি সংবাদপত্রকে বলেছিলেন, ‘আফ্রিকার ভবিষ্যৎ নিয়ে আমি হতাশ। কারণ আমাদের সব সামাজিক নীতি এই তথ্যের ওপর ভিত্তি করে তৈরি যে তাদের বুদ্ধিমত্তা আমাদের মতোই। যদিও সব পরীক্ষাই ভিন্ন কথা বলে।’

এই মন্তব্যের পর তিনি ক্ষমা চাইলেও কোল্ড স্প্রিং হারবার ল্যাবরেটরির চ্যান্সেলর পদ থেকে তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়।

এরপর তার ভাবমূর্তি আর পুনরুদ্ধার হয়নি।

‘বেঁকে যাওয়া মই’
১৯২৮ সালের ৬ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোতে জন্মগ্রহণ করেন জেমস ডিউই ওয়াটসন।

১৫ বছর বয়সে ইউনিভার্সিটি অব শিকাগোতে বৃত্তি পান। ১৯৫০ সালে ইন্ডিয়ানা ইউনিভার্সিটি ব্লুমিংটন থেকে প্রাণিবিজ্ঞানে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।

এরপর ইউরোপের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। ক্যামব্রিজে গিয়েই ক্রিকের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। এরপর গড়ে ওঠে এক ঐতিহাসিক অংশীদারিত্ব।

লন্ডনের কিংস কলেজে গবেষণা চলাকালে রোজালিন্ড ফ্র্যাঙ্কলিন ও মরিস উইলকিন্সের তোলা এক্স-রে ইমেজের ভিত্তিতে ওয়াটসন ও ক্রিক ডিএনএ’র দ্বি-হেলিক্স কাঠামো বিশ্লেষণ শুরু করেন।

প্রথম চেষ্টা ব্যর্থ হয়। দ্বিতীয়বার ফ্র্যাঙ্কলিনের একটি এক্স-রে ইিেছল মূল সূত্র, যা তারা তার অজ্ঞাতসারেই পেয়েছিলেন। এরপর সেটি মূল চাবিকাঠি হয়ে ওঠে।

তাদের মডেলটি ডিএনএ’র দ্বি-হেলিক্স কাঠামোর গঠন তুলে ধরে, যা দেখতে বেঁকে যাওয়া মই (টুইস্টিং ল্যাডার)-এর মতো।

এটি দেখায়, কীভাবে ডিএনএ নিজেকে অনুলিপি করতে পারে। যা জেনেটিক্সের একটি মৌলিক প্রশ্নের উত্তর দেয়।

তারা ১৯৫৩ সালে বৃটিশ জার্নাল ‘নেচার’-এ গবেষণার ফল প্রকাশ করেন। যা ব্যাপক প্রশংসা লাভ করে।

ওয়াটসন হার্ভার্ডে ১৫ বছর শিক্ষকতা করেন। পরে কোল্ড স্প্রিং হারবার ল্যাবরেটরির পরিচালক হন এবং প্রতিষ্ঠানটিকে বিশ্বজুড়ে অণুজীববিজ্ঞানের কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলেন।

১৯৮৮ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউটস অব হেলথ-এর অধীনে মানব জিনোম প্রকল্পের পরিচালক ছিলেন তিনি।

ওয়াটসনের স্ত্রীর নাম এলিজাবেথ। রুফাস ও ডানকান নামে তার দুই ছেলে রয়েছে।

তিনি বহু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডিগ্রি পেয়েছেন।

তিনি বই লিখেছেন এবং নানা সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন।

বিবিসি নির্মিত একটি চলচ্চিত্রে ওয়াটসনের চরিত্রে অভিনয় করেছেন জেফ গোল্ডব্লাম।

শুক্রবার তার সাবেক গবেষণাগার তার ‘অসাধারণ অবদান’-এর প্রশংসা করেছে। তবে প্রতিষ্ঠানটি শেষ পর্যন্ত এই বিজ্ঞানীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে।

২০১৯ সালে পিবিএস-এর এক তথ্যচিত্রে ওয়াটসন আবারও ‘নিন্দনীয়’ মন্তব্য করেন, যার পর তাকে এমেরিটাস পদ থেকেও সরিয়ে দেওয়া হয়।

 

আজকের বাংলা তারিখ

November ২০২৫
Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
« Oct    
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০


Our Like Page