15 Nov 2024, 12:36 am

বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক প্রকল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে যা বলছে ভারতীয় মিডিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক :  শেখ হাসিনা সরকারের পতন ও প্রধানমন্ত্রীর দেশ ছাড়ার পর আলোচনায় এসেছে বাংলাদেশের সাথে ভারতের দ্বিপাক্ষিক সকল প্রকল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে। এরই মধ্যে ভারতের একাধিক সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে দ্বিপাক্ষিক প্রকল্প নিয়ে ভারতের ভাবনা।

গত ২৭ আগস্ট ভারতের প্রথম সারির অর্থনৈতিক পত্রিকা ‘দ্য ইকোনমিক টাইমসে’ এর এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, ভারতের পাঁচটি বিদ্যুৎ সংস্থার বাংলাদেশের কাছে মোট বকেয়া অর্থের পরিমাণ এক বিলিয়ন বা ১০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে গেছে। এর মধ্যে ‘আদানি পাওয়ারে’রই ৩০ জুন তারিখে ৮০ কোটি ডলার পাওনা ছিল বলে বলা হয়েছে।

এই সংস্থাটি ঝাড়খন্ডের গোড্ডায় অবস্থিত তাদের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদনের পুরোটাই বাংলাদেশে রপ্তানি করে থাকে।

এছাড়াও এসইআইএল এনার্জি, পিটিসি ইন্ডিয়া, এনটিপিসি (ডিভিসি ও ত্রিপুরা) ও পাওয়ার গ্রিডের মতো আরও বিভিন্ন সংস্থারও বাংলাদেশের কাছে কোটি কোটি ডলার পেমেন্ট বাকি রয়ে গেছে বলে ওই রিপোর্টে জানানো হয়।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা যে এই অর্থ পরিশোধের সম্ভাবনাকে ব্যাহত করতে পারে, সেই আশঙ্কার কথাও উল্লেখ করা হয়েছিল ওই প্রতিবেদনে।

ইতোমধ্যে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়ালও জানান, গত ৫ অগাস্টের পর থেকেই বাংলাদেশ-ভারতের প্রায় সব দ্বিপাক্ষিক প্রকল্পের কাজ থমকে গেছে, কর্মীরাও অনেকে ভারতে ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছেন।

‘পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে’ এই প্রকল্পগুলোর কাজ যে চট করে আবার শুরু হচ্ছে না, সেটাও জানিয়ে দিয়েছেন তিনি।

জানা যাচ্ছে, এরই মধ্যে রামপালের মৈত্রী তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র বা নুমালিগড়-পার্বতীপুর জ্বালানি পাইপলাইনের মতো বহু প্রকল্পের ভবিষ্যৎও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। তাহলে কি বাংলাদেশের জ্বালানি, বিদ্যুৎ, অবকাঠামো-সহ বিভিন্ন সেক্টরে ভারতের বিভিন্ন সংস্থার বিপুল বিনিয়োগ এখন ঝুঁকির মুখে?

দিল্লিতে থিঙ্কট্যাঙ্ক আরএইএস এর অর্থনীতিবিদ প্রবীর দে কিন্তু এ ব্যাপারে এখনই নিরাশ হতে রাজি নন। তিনি মনে করিয়ে দিচ্ছেন, বাংলাদেশের নতুন সরকার ভারতের সঙ্গে বিভিন্ন চুক্তি বা সমঝোতা পুনর্বিবেচনা করার কথা বললেও সে দেশের কোনও ভারতীয় প্রকল্প কিন্তু বাতিল ঘোষণা করেনি।

ড. দে বলেন, তাছাড়া এই ধরনের বিনিয়োগে সব সময় একটা ‘সভারেইন গ্যারান্টি’ বা সার্বভৌম নিশ্চয়তার আওতায় থাকে। অর্থাৎ প্রকল্প বাতিল করা হলে রাষ্ট্রের ওপর সেই ক্ষতি পুষিয়ে দেওয়ার দায় বর্তায়।

এধরনের ক্ষেত্রে ক্ষতিগ্রস্ত কোম্পানির ইন্টারন্যাশনাল আরবিট্রেশন কোর্ট বা আন্তর্জাতিক সালিশি আদালতে যাওয়ার রাস্তাও খোলা থাকে।

বছর কয়েক আগে মালদ্বীপ যখন তাদের দেশের প্রধান বিমানবন্দরটির পরিচালনার ভার একটি ভারতীয় কোম্পানির হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়েছিল, সেই সংস্থাটি সিঙ্গাপুরে আন্তর্জাতিক সালিশিতে গিয়ে বিপুল অঙ্কের ক্ষতিপূরণও আদায় করতে সক্ষম হয়।

বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এখনই সে রকম কোনও সম্ভাবনা না-দেখলেও সে দেশের অর্থনৈতিক সংকট ও বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতি মেটাতে যে বেশ কিছুটা সময় লাগবে ও ভারতীয় সংস্থাগুলোকে লগ্নির রিটার্ন পেতে আরও অপেক্ষা করতে হবে– সেই বাস্তবতা অবশ্য দিল্লি এরই মধ্যে অনুধাবন করেছে। সূত্র: বিবিসি

 

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • Visits Today: 2337
  • Total Visits: 1243675
  • Total Visitors: 4
  • Total Countries: 1668

আজকের বাংলা তারিখ

  • আজ শুক্রবার, ১৫ই নভেম্বর, ২০২৪ ইং
  • ৩০শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (হেমন্তকাল)
  • ১২ই জমাদিউল-আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরী
  • এখন সময়, রাত ১২:৩৬

Archives

MonTueWedThuFriSatSun
    123
11121314151617
18192021222324
252627282930 
       
15161718192021
293031    
       
  12345
2728     
       
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
31      
  12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930   
       

https://youtu.be/dhqhRb9y018