অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : লক্ষ্মীপুর জেলা সদরের উপর দিয়ে প্রবাহিত ওয়াপদা ও রহমত খালী খালের পানির তীব্র স্রোতে ভাঙ্গনের মুখে বাড়িঘর, ফসলি জমিনসহ বিস্তীর্ণ এলাকা খালের গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এতে ভিটেমাটি হারিয়ে অনেকেই মানবেতর জীবনযাপন করছে। নতুন করেও ভাঙ্গনের মুখে রয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা।
জানা গেছে, জেলা সদরের উপর দিয়ে ওয়াপদা ও রহমত খালী খালের পানি প্রবাহিত হয়ে মেঘনা নদীতে চলে যায়। সাম্প্রতি অতিবৃষ্টি ও বন্যার পানিতে খালে তীব্র স্রোত প্রবাহিত হচ্ছে। এতে ভাঙ্গণের কবলে পড়ছে সদর উপজেলার মান্দারী, লাহারকান্দি, ভবানীগঞ্জ, টুমচর, চর রমনী মোহনের বিস্তীর্ণ এলাকা। গত ২০ দিনে ভাঙ্গনের মুখে বিলীন হয়েছে এসব গ্রামের ফসলি জমি, বাড়িঘরসহ গাছপালা। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শতাধিক পরিবার। এরই মধ্যে বসতভিটা হারিয়েছেন ৪০ টি পরিবার। জায়গাজমি ও বসতভিটা হারিয়ে এখন বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে তারা। অচিরেই তীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ না করা হলে হুমকির মুখে পড়বে অনেক এলাকা।
সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের পিয়ারাপুর গ্রামের বাসিন্দা দুলাল হোসেন বলেন, ভাঙ্গনের কবলে পড়ে বাড়িঘর হারিয়ে এখন খোলা আকাশের নিচে থাকতে হচ্ছে। কোনোরকম বেড়া দিয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে অন্যের জায়গা বসবাস করছি। আমাদের যাওয়ার মত কোনো জায়গা নেই। কোথায় থাকবো বা কোথায় যাবো। এছাড়া একই অবস্থা এখানকার ৪০ টি পরিবারের। এ অবস্থায় সরকারি সহযোগিতার দাবি জানান ভুক্তভোগীরা।
এদিকে ভাঙ্গন থেকে রক্ষার জন্য তীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণের দাবিতে ভাঙ্গন কবলিত এলাকা ও জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার গুলো। মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসক সুরাইয়া জাহানের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি দেন তারা।
বিষয়টি নিয়ে পানি উন্নয়ন বিভাগ (বাপাউবো) লক্ষ্মীপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদ-উজ -জামান খান বলেন বাসসকে বলেন, বন্যার পানির চাপের কারণে রহমত খালী ও ওয়াপদা খালের পানির তীব্র স্রোতে সদরের মান্দারী, লাহারকান্দি, ভবানীগঞ্জ, টুমচর ও চররমনী মোহন ইউনিয়নের প্রায় ৫ কিলোমিটার এলাকা ভাঙ্গনের মুখে পড়েছে। এদিকে ভাঙ্গন রোধে টুমচরে জিও ব্যাগ পেলে অস্থায়ী তীর রক্ষা বাঁধের কাজ চলছে। ভাঙ্গন কবলিত অন্যান্য স্থানেও আজ থেকে কাজ শুরু হবে। স্থায়ী তীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণের জন্য ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে ডিজাইন ডাটা তৈরি করে পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে দ্রুত স্থায়ী তীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হবে বলে জানান তিনি।
জেলা প্রশাসক সুরাইয়া জাহান বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অবহিত করেছি। বরাদ্দ পেলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার গুলোকে পুনর্বাসন করা হবে।
Leave a Reply