অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ইসরায়েলি হামলায় হামাস নেতা সিনওয়ার মৃত। নেতানিয়াহু বললেন, বন্দিরা মুক্তি পেলে যুদ্ধ থামবে। হামাসকেও অস্ত্র ছাড়তে হবে।
ইয়াহিয়া সিনওয়ার ছিলেন গতবছর ইসরায়েলে হামাসের আক্রমণের মূল পরিকল্পনাকার।ইসরায়েলের কাছে তিনি ছিলেন ‘মোস্ট ওয়ান্টেড পার্সন’। ইসরায়েলের সেনা জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার গাজায় তাদের অপারেশন চলার সময় সিনওয়ার মারা যান।
ইসরয়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন, ”এটা ইসরায়েলের সেনার সামরিক ও নৈতিক কৃতিত্ব। এর ফলে বন্দিদের অবিলম্বে মুক্তির পথ খুলে যাবে।”
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ”গতবছর ৭ অক্টোবরে ইসরায়েলে হত্যা ও অত্যাচারের জন্য দায়ী গণহত্যাকারী ইয়াহিয়া সিনওয়ার ইসরায়েলের সেনার হাতে মারা গেছেন।”
ইসরায়েলের সেনাও সামাজিক মাধ্যমে সিনাওয়ারের মত্যুর খবর দেয়।
সকলের দিকেই সিনাওয়ারের মৃত্যুর খবর রটেছিল। কিন্তু ডিএনএ পরীক্ষা করে সিনাওয়ারের মৃত্যুর বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার পর তা জানানো হয়।
যুদ্ধ বন্ধে নেতানিয়াহুর শর্ত : ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করা একটি ভিডিওতে সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী চার্চিলের কথাগুলে একটু বদলে বলেছেন, ”এখনো গাজার যুদ্ধ শেষ হয়নি। তবে শেষের শুরু হয়েছে বলা যেতে পারে।”
নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, ”আমি গাজার মানুষদের কাছে একটা সরল বার্তা দিতে চাই। যদি হামাস অস্ত্র ত্যাগ করে ও পণবন্দিদের মুক্তি দেয়, তাহলে যুদ্ধ কাল থেমে যাবে। আর যদি কেউ বন্দিদের আঘাত করার চেষ্টা করে, কোনো ক্ষতি করার চেষ্টা করে, তাহলে তাদের বিচারও আমরা করব। আর যারা বন্দিদের ছেড়ে দেবে, তাদের সুরক্ষার সব ব্যবস্থা ইসরায়েল করবে।”
তিনি জানিয়েছেন, ”সাম্প্রতিক মাসগুলিতে প্রচুর হামাস ও হিজবুল্লা নেতার মৃত্যু হয়েছে। এর ফলে এই অঞ্চলের মানুষের কাছে আশার কিরণ দেখা দিয়েছে। ইরানের তৈরি করা সন্ত্রাসের অক্ষরেখা গুঁড়িয়ে দেয়া সম্ভব হয়েছে। নাসরাল্লা আর নেই। তার সহকারী ফুয়াদও মৃত, হানিয়ে, মোহাম্মদ দেইফের পর সিনওয়ারও আর নেই।”
বিশেষজ্ঞের দাবি : সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের সিনিয়র ফেলো ও মধ্যপ্রাচ্য বিশেষজ্ঞ নাতাশা হ্যাল ডিডাব্লিউকে বলেছেন, ”অ্যামেরিকা আর কবে বুঝবে যে, নেতাদের মেরে দিলেও হামাসের মতো মতাদর্শ শেষ হয়ে যায় না। তারা আবার নতুন করে শুরু করে। হিজবুল্লা ও হামাসের ক্ষেত্রে অতীতে এটাই হয়েছে। বিশ্বজুড়ে অন্য অনেক গ্রুপের ক্ষেত্রে এটা হয়েছে। তারা আবার নিজেদের সংগঠিত করেছে।”
নাতাশা জানিয়েছেন, ”কোনো সন্দেহ নেই, হামাস দুর্বল হয়েছে, নেতৃত্বে শূন্যতা দেখা দিয়েছে, তারপরেও তারা নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়নি। এরপর যে হামাসের নেতৃত্ব দেবে, সে সিনওয়ারের থেকে অনেক বেশি নির্মম হতে পারে।”
বাইডেনের বক্তব্য : মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বৃহস্পতিবার তার বিলম্বিত জার্মানি সফরে বার্লিনে এসে পৌঁছেছেন। তিনি বলেছেন, সিনওয়ারের মৃত্যুর পর বন্দি হস্তান্তর ও যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা বেড়ে গেল।
বাইডেন বলেছেন, ”এখন এগিয়ে যাওয়ার সময়। গাজায় যুদ্ধবিরতির দিকে এগিয়ে যেতে হবে। সেটা গোটা বিশ্বের জন্য ভালো হবে।”
বাইডেন বিমান থেকে নেতানিয়াহুর সঙ্গে কথা বলেছেন। হোয়াইট হাউস পরে জানিয়েছে, ”বন্দিমুক্তি নিয়ে দুই নেতার কথা হয়েছে। যুদ্ধ বন্ধ করা এবং হামাস যাতে আর গাজা শাসন না করতে পারে, সে বিষয়ে কথা হয়েছে।”
ফরাসি প্রেসিডেন্ট মাক্রোঁ জানিয়েছেন, ”সিনওয়ারের মৃত্যুর পর গাজায় যুদ্ধ বন্ধের একটা সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।” সূত্র: ডয়েচে ভেলে
Leave a Reply