অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফেরাতে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে বিএনপি, জামায়াত ও সুজনের করা রিভিউ শুনানি আগামী ১৭ নভেম্বর।
তিনটি রিভিউ আবেদন বৃহস্পতিবার শুনানির কার্যতালিকা এলে রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মো: আসাদুজ্জামান বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় ৪ সপ্তাহ সময় চান। এসময় বিএনপির পক্ষে সিনিয়র আইনজীবী জয়নুল আবেদীনও ৪ সপ্তাহ সময়ের সাথে একমত প্রকাশ করেন। অন্যদিকে সুজনের পক্ষে সিনিয়র আইনজীবী ড. শরীফ ভূঁইয়া এতে আপত্তি নেই বলে জানান। এসময় আদালতে জামায়াতের পক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির উপস্থিত ছিলেন।
একপর্যায়ে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির আপিল বিভাগ তিনটি রিভিউ একসাথে শুনানির জন্য আগামী ১৭ নভেম্বর দিন ধার্য করেন।
এদিকে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করার ক্ষেত্রে সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের বিচার হওয়া উচিৎ কি না? আদালতের বাইরে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে বিএনপির পক্ষের সিনিয়র আইনজীবী জয়নুল আবেদীন বলেন, আমি আগেও বলেছি, তিনি অসাধুতা করেছেন। তার বিচার হওয়া উচিৎ।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল সংক্রান্ত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে ১৬ অক্টোবর রিভিউ (পুনর্বিবেচনা) করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তার আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল সংক্রান্ত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ করে সুজনের সম্পাদক ড. বদিউল আলম জুমদারসহ পাচজন। অন্যরা হলেন তোফায়েল আহমেদ, এম হাফিজউদ্দিন খান, জোবাইরুল হক ভূঁইয়া ও জাহরা রহমান। সর্বশেষ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে সেক্রেটারী জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার রিভিউ আবেদন করেন। চেম্বার আদালত ২৪ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে এইসব রিভিউ শুনানির দিন ধার্য করেন।
১৯৯৬ সালে ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত হয়। এই সংশোধনীর বৈধতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এম সলিমউল্লাহসহ অন্যরা ১৯৯৮ সালে হাইকোর্টে রিট করেন। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুল দেন। হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চ চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট রায় দেন। সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনীকে বৈধ ঘোষণা করে দেওয়া রায়ে বলা হয়, ১৯৯৬ সালের ত্রয়োদশ সংশোধনী সংবিধানসম্মত। এ রায়ের বিরুদ্ধে সরাসরি আপিলের অনুমতি দেওয়া হয়। এর ধারাবাহিকতায় ২০০৫ সালে আপিল করে রিট আবেদনকারীপক্ষ। এই আপিল মঞ্জুর করে ২০১১ সালের ১০ মে আপিল বিভাগ রায় ঘোষণা করেন। ঘোষিত রায়ের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার বিলোপসহ বেশ কিছু বিষয়ে আনা পঞ্চদশ সংশোধনী আইন ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পাস হয়। ২০১১ সালের ৩ জুলাই এ–সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করা হয়।
Leave a Reply