December 15, 2025, 11:48 am
শিরোনামঃ
ঝিনাইদহে যথাযোগ্য মর্যাদায় শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে মিরপুর স্মৃতিসৌধে বিভিন্ন সংগঠনের শ্রদ্ধা নিবেদন লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত জাতীয় নির্বাচন স্থগিত চেয়ে আইনি নোটিশ সুদানে সন্ত্রাসী হামলায়  ৬ বাংলাদেশী শান্তিরক্ষী নিহত ; পরিচয় প্রকাশ ভূমি রেজিস্ট্রেশন ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীন হওয়া উচিত : ভূমি সচিব সালেহ আহমেদ দেশে ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আরও ৫ জনের মৃত্যু ; হাসপাতালে ভর্তি ৩৮৭ চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে নারী ও শিশুসহ ১৫ জনকে ঠেলে পাঠালো বিএসএফ সেন্টমার্টিনে পর্যটকের চাপে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সব টিকিট আগাম বিক্রি শেষ রাঙ্গামাটিতে শিক্ষার্থীদের মাঝে সেনাবাহিনীর শীতবস্ত্র বিতরণ সিরিয়ায় মার্কিন সেনা নিহতের প্রতিশোধ নেওয়ার ঘোষণা দিলেন ট্রাম্প
এইমাত্রপাওয়াঃ

গাজার শিশুরা এখন আর স্বপ্ন দেখে না

গাজার শিশুরা এখন আর স্বপ্ন দেখে না,শুধু অপেক্ষা করে মৃত্যুর জন্য! অসহায়ের কান্না, মায়ের আর্তনাদ, ধ্বসেপড়া ভবন আর রক্তাক্ত পথঘাট এটিই ফিলিস্তিনের দৈনন্দিন বাস্তবতা। রাতে বোমার শব্দে ঘুম ভেঙে যায়, মায়ের গলা জড়িয়ে ধরে ফিসফিস করে বলে, ‘মা, আজকেও কি আমরা মরে যাব?’ মা কিছুই বলে না, শুধু শক্ত করে জড়িয়ে ধরে। সকালে দেখা যায়, এক গলিতে সারি সারি লাশ পড়ে আছে, চেনাজানা অনেকের বাড়িটি নেই। নিষ্পাপ শিশুরা বুঝতে পারে, তাদের বন্ধুরা আর বেঁচে নেই। গাজায় যা ঘটছে, তা কোনো যুদ্ধ নয়, এটি সরাসরি একতরফা গণহত্যা। আন্তর্জাতিক আইনে এটি যুদ্ধাপরাধ, কিন্তু ইসরাইলকে থামানোর মতো কেউ নেই। জাতিসঙ্ঘ, মানবাধিকার সংস্থা, এমনকি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত কেউই কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছে না। গাজা আজ আর শুধুই একটি ভূখন্ডের নাম নয়। এটি হয়ে উঠেছে এক অবিরাম মৃত্যুর মিছিলের প্রতিচ্ছবি। মানবতার বোবা কান্না, বিধবার আর্তনাদ আর ধ্বংস্তূপের নিচে চাপাপড়া অসহায় মানুষের আর্তচিৎকার মিলেমিশে এক নির্মম বাস্তবতা।
গাজা বিশ্বের অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ একটি এলাকা। প্রায় ২৩ লাখ ফিলিস্তিনি সেখানে বাস করে, অথচ তাদের ওপর চেপে বসেছে অবরোধের শেকল। একদিকে সমুদ্র, অন্যদিকে সীমান্ত সবদিক থেকেই গাজাকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে, যেন এটি একটি খোলা কারাগার। খাদ্য,পানি, বিদ্যুৎ, চিকিৎসা প্রতিটি মৌলিক চাহিদার ওপর রয়েছে কঠোর নিয়ন্ত্রণ। গাজার পরিস্থিতি নিয়ে এক ধরনের অপ-প্রচারযুদ্ধও চলছে। মূল ধারার অনেক পশ্চিমা গণমাধ্যম গাজার বাস্তব চিত্র তুলে ধরতে চায় না। তারা ইসরাইলের ‘আত্মরক্ষা’ তত্ত্ব প্রচার করে, কিন্তু ফিলিস্তিনিদের যন্ত্রণার কথা এড়িয়ে যায়।
মুসলিম বিশ্বে বৃহৎ জনসমাবেশ হচ্ছে,তবে এসব প্রতিবাদ এখন তেমন কোনো কার্যকর আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ আনতে পারেনি। প্রতিবাদ শুধু রাস্তায় নামার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। অনলাইনেও আন্দোলন হচ্ছে। হ্যাশট্যাগ ট্রেন্ড, গণস্বাক্ষর অভিযান, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তথ্য ছড়িয়ে দেয়া এ সবই গাজার পক্ষে জনমত তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। বিশ্বের শিল্পী, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবীরা যদি গাজার পক্ষ নিয়ে অবস্থান নেন, তা হলে এটি আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে একটি বড় পরিবর্তন আনতে পারে। আগেও দেখা গেছে, বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কোনো বড় মানবাধিকার ইস্যুতে সোচ্চার হলে তা ব্যাপক প্রভাব ফেলে। এ ছাড়া কূটনৈতিকভাবেও চাপ সৃষ্টি করা দরকার। মুসলিম ও উন্নয়নশীল দেশগুলো যদি জাতিসঙ্ঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর মাধ্যমে ইসরাইলের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে, তা হলে পরিস্থিতির পরিবর্তন সম্ভব।
যুক্তরাষ্ট্র সবসময় মানবাধিকারের পক্ষে সোচ্চার থাকে। কিন্তু দেশটির ভেতরে ও বাইরে তার মানবাধিকার লঙ্ঘনের নিকৃষ্ট উদাহরণ রয়েছে। উল্লেখ করা যায়, ১৬০০ থেকে ১৯০০ শতক পর্যন্ত শ্বেতাঙ্গরা আমেরিকার আদিবাসীদের ওপর নির্মম নির্যাতন, হত্যাকান্ড, উচ্ছেদ ও নানাবিধ বৈষম্যের মাধ্যমে তাদের নিজ ভূমিতে পরবাসী করে রাখে। ১৬১৯ সাল থেকে ১৯০০ শতক পর্যন্ত আফ্রিকা থেকে নিরীহ মানুষকে জোর করে ধরে এনে দাসবৃত্তিতে নিয়োজিত করেছিল। তাদের উপরও চালানো হয়েছিল নির্যাতনের অমানুষিক বর্বরতা। ১৮৯৯ থেকে ১৯০২ সাল পর্যন্ত তারা ফিলিপিনের অসামরিক জনগণের ওপর নির্যাতন, লুটতরাজ, ধর্ষণ ইত্যাদি মানবতাবিরোধী অপরাধ করে। ১৮৯৩ সালে মার্কিন সরকার বল প্রয়োগ করে হাওয়াইয়ের রাজতন্ত্র উৎখাত করে দ্বীপটি দখল করে নেয়। উনিশ শতকে ল্যাতিন আমেরিকার চিলি ও গুয়াতেমালার সরকার উৎখাতে হস্তক্ষেপ করে। আজও দক্ষিণ আমেরিকার বিভিন্ন দেশের সাথে ওয়াশিংটনের সম্পর্ক ভালো নয়। যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন দেশের সরকার উৎখাতে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভূমিকা রেখে থাকে। বিশেষজ্ঞদের মতে, যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন দেশের সরকার উৎখাতে ১৫০টিরও বেশি হস্তক্ষেপ করেছে।

১৯৪২ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত জাপানের এক লাখ ৪২ হাজার সেনাকে বন্দী করে রাখে যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ ছিল না। পরে আমেরিকানরা নিজেদের ভুল স্বীকার করে। পঞ্চাশ থেকে সত্তরের দশকে আমেরিকান সিভিল রাইটস মুভমেন্টকে শক্তিপ্রয়োগ করে স্তব্ধ করতে চেয়েছিল। এর শেষ পরিণতি ঘটেছিল ১৯৬৮ সালে কৃষ্ণাঙ্গ নেতা মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের হত্যাকান্ডের মাধ্যমে। আগেই বলা হয়েছে, মার্কিন সেনারা ভিয়েতনামে ঠান্ডা মাথায় মানবাধিকার লঙ্ঘন করে। তারা নাপাম বোমা ফেলে অসামরিক জনতাকে হত্যা করে। সেখানকার মাইলাই হত্যাকান্ড ইতিহাসে কালো অক্ষরে লেখা আছে। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে যারা ভিয়েতনাম যুদ্ধের বিরোধিতা করেছে তাদের উপরও নির্যাতন চালানো হয়। ২০০১ সালে নাইন-ইলেভেনের হামলার পরে পেট্রিয়ট অ্যাক্ট করে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের নিকৃষ্টতম উদাহরণ রেখেছে। গুয়ান্তানামো বের কারাগারে বিনাবিচারে বিভিন্ন দেশের শত শত নাগরিককে ধরে এনে যে নির্যাতন চালানো হতো তা মানব সভ্যতার ইতিহাসে বিরল। ২০০০ সালের পর বিভিন্ন সময়ে অভিবাসন-প্রত্যাশীদের উপর বারবার যে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হয়েছে তা আমেরিকার গণতন্ত্রের অহঙ্কার চূর্ণ করে দিয়েছে। এমনকি শিশুদের তাদের মা-বাবা থেকে পৃথক করে দেয়া হয়েছে। মাত্র কিছু দিন আগে অবৈধ অভিবাসীদের মাথামুন্ডন করে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে যা সভ্যতার কলঙ্ক।
১৯৪৮ সালে অবৈধ ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও তাদের পাশ্চাত্য বন্ধুরা ফিলিস্তিনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে আজও তা অব্যাহত রেখেছে। বিগত ৭৫ বছরের কথা না হয় আপাতত মুলতবি রেখে সাম্প্রতিককালে অবরুদ্ধ গাজায় ইসরাইল যা করছে তা সভ্যতার সম্পূর্ণ বিপরীত। সেখানে প্রতিনিয়ত ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘন চলছে; আমেরিকা সে অপরাধ সংঘটনে ইসরাইলকে সামরিক, আর্থিক ও কূটনৈতিক সহায়তা দিয়ে চলেছে। ২০১৬ সালে স্বাক্ষরিত এক চুক্তির আওতায় যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলকে প্রতি বছর ৩ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র সহায়তা দিচ্ছে। এর মধ্যে যুদ্ধবিমান, ট্যাঙ্ক, বোমা সব ছিল। শুধু আয়রন ডোমের জন্য দিয়েছে ১ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার। ১৯৪৮ সালের পর থেকে এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছে ১৫০ বিলিয়ন ডলার। এটি হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো বিদেশী রাষ্ট্রকে দেয়া সর্বোচ্চ পরিমাণ সহায়তা। এবারে ইসরাইল গাজায় যে ভয়াবহ হত্যাকান্ড, অবরোধ, অবকাঠামো ধ্বংস করে চলেছে তার সব যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ সহায়তায়। মূলত যুক্তরাষ্ট্র নিজেই যুদ্ধের অংশীদার। জাতিসঙ্ঘ, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, মানবাধিকার কমিশন, আন্তর্জাতিক আদালত কোনো কিছুর তোয়াক্কা করছে না ইসরাইল। কারণ সবক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে। নিরাপত্তা পরিষদে ইসরাইলের বিরুদ্ধে বহু প্রস্তাব উত্থাপন করা হলেও যুক্তরাষ্ট্র সব সময় ভেটো দিচ্ছে। ফলে জাতিসঙ্ঘ একটি অকার্যকর সংস্থায় পরিণত হয়েছে।
সময়টা ছিল ১৯৬৯ সাল। পবিত্র মসজিদ আল-আকসায় অগ্নিসংযোগ করে মধ্যপ্রাচ্যের বিষফোঁড় ইসরায়েল। তীব্র ক্ষোভে ফেটে পরে সমগ্র মুসলিম বিশ্ব।
বিষয়টি স্পর্শকাতর হওয়ায় ৫৭টি ইসলামী রাষ্ট্র নিয়ে গড়ে তোলা হয় ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি)। যার বর্তমান সদস্যদেশ ৫৭টি। জাতিসংঘের পর এটিই সবচেয়ে বড় আন্তঃদেশীয় জোট। যা প্রায় ২০০ কোটি মানুষের প্রতিনিধিত্ব করে। মুসলিম উম্মাহর বৃহত্তর একক সংস্থা হওয়া সত্ত্বেও ফিলিস্তিন ইস্যুতে একেবারেই নীরব ভূমিকায় রয়েছে। গত বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর লেবাননে ইসরায়েল ব্যাপক বিমান চালায়। এখন পর্যন্ত পাওয়া খবরে অন্তত তিন হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। বাস্তুচ্যুত হয়েছে হাজার হাজার মানুষ। সেই বর্বরোচিত হামলার বিরুদ্ধে নিষ্প্রাণ এই সংস্থাটি মুখে কুলুপ এঁটে বসেছিল, আছে। দেয়নি ন্যূনতম একটি বিবৃতিও।
ফিলিস্তিনকে সম্পূর্ণভাবে কুক্ষিগত করতে মরিয়া মধ্যপ্রাচ্যের ‘দানব’ ইসরায়েল। বিশ্বমানচিত্র থেকে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে নিশ্চিহ্ন করার শেষ পেরেকটাও ঠুকেছে। অর্থাৎ ওয়েস্ট ব্যাংক, রামাল্লা, জেরুজালেম, খান ইউনিস, পশ্চিম তীর,গাজা উপত্যকা দখল করে নিয়েছে। নিরীহ ও দুঃসাহসি ফিলিস্তিনিদের সর্বশেষ আশ্রয় রাফা শহরও দখল করে নিয়েছে দখলদার ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। অথচ মুসলিম বিশ্ব বিশেষ করে- সৌদি আরব, মিশর, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, তুরস্ক, পাকিস্তান সামরিক সহায়তা তো দূরে থাক ত্রাণ সামগ্রী গাজায় পৌঁছানো সুনিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ প্রভাবশালী পশ্চিমা দেশগুলো ইসরায়েলের সর্বাত্মক সমর্থনে এগিয়ে এসেছে। হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরাল্লাহকে হত্যার পর বেশ সংকটের মুখে পড়ে মধ্যপ্রাচ্য।
জেনারেল কাশেম সোলাইমানি নিহত হওয়ার পর পুরো মধ্যপ্রাচ্য যখন ছদ্মযুদ্ধের বড় রণাঙ্গন হয়ে উঠেছে, তখনো ওআইসিকে অকার্যকরই দেখা গেছে। গাদ্দাফির লিবিয়া আজও ওয়াইসির ‘ঐক্যবদ্ধ মুসলমান বিশ্বে’র ধারণার চরম পরিহাস হয়ে আছে। জোটের একেক সদস্যদেশ সেখানকার বিবদমান একেক শক্তিকে মদদ দিচ্ছে। কাশ্মীর থেকে ইয়েমেন,আফগানিস্তান থেকে সোমালিয়া, রোহিঙ্গা থেকে সিরিয়া পর্যন্ত মুসলমানদের বিপন্ন দশায় ওয়াইসি কখনোই সংঘবদ্ধ হয়ে ভরসা হয়ে দাঁড়াতে পারছে না।
ওআইসির ব্যর্থতার সবচেয়ে জীবন্ত চিহ্ন ফিলিস্তিনিদের রাজনৈতিক ও মানবিক দুর্দশা। এমন দৃশ্যপটে জোটভূক্ত অধিকাংশ দেশের উদাসীন থাকা। পবিত্র আল-আকসা মসজিদের নিরাপত্তাকে উপলক্ষ করেই ওআইসির জন্ম হলেও এর অনেক সদস্য দেশ এখন ইসরায়েলের মিত্র। গাজা অবরোধে ইসরায়েলের অন্যতম সহযোগী মিশর। খবর ছড়িয়েছে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলা ইসলায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর জানাশোনাতেই হয়েছে। আর এতে অর্থায়ন করায় রাষ্ট্রদোহের গুরুতর অভিযোগের মুখোমুখি হয়েছেন তিনি।
ইসরায়েলকে একঘরে করতে সক্রিয় তৎপরতা চালানোর কথা থাকলেও হয়েছে তার উল্টো। সংস্থাটি নিজেই এখন বিশ্ব পরিসরে তাৎপর্যহীন। ১৯৯০ সালের ৫ আগস্টে কায়রোতে এক সম্মেলনে মানুষের মৌলিক মানবাধিকার রক্ষার পাশাপাশি মত প্রকাশের স্বাধীনতা, সুশাসন ও সুষম উন্নয়নের অঙ্গীকার করা হয়। কিন্তু ওআইসিভুক্ত বেশিরভাগ দেশই এই অঙ্গীকার পূরণে ব্যর্থ হয়েছে।
বৈশ্বিক মানের শিক্ষা,গবেষণা, উদ্ভাবনী সংস্থা গড়তেও ওআইসি তেমন সাফল্য দেখাতে পারেনি। বরং সামর্থ্যের খুব সামান্যই ব্যবহার করেছে। যদিও বিশ্বের জ্বালানি সম্পদের ৭০ ভাগ আরব দেশগুলোতে রয়েছে। অথচ ওআইসিভুক্ত সমগ্র জনসংখ্যার ২৫ ভাগ এখনো নিরাপদ খাওয়ার পানি ও প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা বঞ্চিত। বিশ্ব জনসংখ্যার প্রায় চার ভাগের এক ভাগ হলেও তারা বৈশ্বিক জিডিপির মাত্র ৭ থেকে ৮ শতাংশ হিস্যাধারী।
ওআইসির লক্ষ্য হাসিলে প্রধান বাধা সদস্যদেশগুলোর সংকীর্ণ জাতীয়তাবাদী স্বার্থ। ইসলামি বিশ্বের সব বিষয়েই ওআইসিতে অভ্যন্তরীণ বিরোধ থাকে। যে কারণে এই জোট লেবাননে ইসরায়েলের আগ্রাসন ঠেকাতে পারে না। একইভাবে রুখতে পারেনি আফগানিস্তানে রুশ কিংবা যুক্তরাষ্ট্রের অভিযান। আরাকান রোহিঙ্গাদের নিপীড়ন থামাতেও ওআইসির আরও বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখার সুযোগ ছিল। আরব বসন্তের আকাংখা ধারণ করতেও ব্যর্থ হয়েছে সংস্থাটি। ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখন্ডে অবিরাম হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইলে। টানা প্রায় ১৮ মাস ধরে চালানো এই আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৫০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনী। হামলার পাশাপাশি ইসরাইল গাজাতে সর্বাত্মক অবরোধও জারি রেখেছে। গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় নতুন করে ইসরাইলী বিমান হামলায় প্রায় ১৪০০ ফিলিস্তিনী নিহত এবং আরো ৩৪০০ জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। যাদের বেশির ভাগই শিশু ও নারী। পৃথিবীব্যাপী মানবতার লঙ্ঘন হচ্ছে। আগের দিনে বার্ট্টান্ড রাসেল কোন বক্তব্য দিলে বিভিন্ন দেশের পত্র-পত্রিকায় ফলাও করে তুলে ধরা হতো। একজন বার্ট্টান্ড রাসেল যে কোন রাষ্ট্র বা সরকারের চেয়েও বেশি শক্তিশালী। তিনি ন্যায়ের পক্ষে,অন্যায়ের বিপক্ষে এবং মানবজাতির ভবিষ্যৎ ভালোর জন্য কথা বলেন। আলবার্ট আইনস্টাইন কোনো বক্তব্য দিলে তা সারা বিশে^ ছড়িয়ে পড়ত। এখন এমন ব্যক্তি নেই বলেই কথা বলার মানুষ নেই। গত ৭ এপ্রিল বিশে^র অন্যসব দেশের মত বাংলাদেশেও পালিত হয় ‘গ্লোবাল স্ট্রাইক ফর গাজা’। আগামী ১২ তারিখে পালিত হবে ‘মার্চ ফর প্যালেস্টাইন’। আমরা আশা করবো অন্যায়ের প্রতিবাদ যেন ন্যায়নিষ্ঠভাবেই হয়।

আজকের বাংলা তারিখ

December ২০২৫
Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
« Nov    
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০৩১  


Our Like Page