অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ফিলিস্তিনের যুদ্ধ-বিধ্বস্ত গাজা উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চলের একটি হাসপাতালে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ২০ জন নিহত হয়েছে। সোমবার ইসরায়েলি হামলায় হাসপাতালে নিহতদের মধ্যে অন্তত পাঁচ সাংবাদিক রয়েছেন। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স, মার্কিন বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) এবং কাতার-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা তাদের নিহত সংবাদকর্মীদের জন্য শোক প্রকাশ করেছে।
গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থার মুখপাত্র মাহমুদ বাসসাল বলেছেন, ইসরায়েলের হামলায় হাসপাতালে ২০ জন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে পাঁচজন সাংবাদিক এবং সিভিল ডিফেন্সের একজন সদস্য রয়েছেন। গাজার খান ইউনিসের বৃহত্তম স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান নাসের হাসপাতালে ওই হামলা হয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর থেকে একাধিকবার ইসরায়েলি হামলার লক্ষ্যবস্তু হয়েছে এই হাসপাতাল।
আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যম পর্যবেক্ষক সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের দুই বছরে গাজা উপত্যকায় প্রায় ২০০ সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, সোমবার খান ইউনিসের নাসের হাসপাতাল এলাকায় হামলা চালিয়েছেন ইসরায়েলি সৈন্যরা। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর প্রধান এই ঘটনায় প্রাথমিক তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বেসামরিক লোকজন হতাহতের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। একই সঙ্গে সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে এই হামলা চালানো হয়নি বলে বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে।
মাহমুদ বাসসাল বলেছেন, ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর ছোড়া বিস্ফোরক বোঝাই ড্রোন প্রথমে নাসের হাসপাতালের একটি ভবনকে লক্ষ্যবস্তু করে। ড্রোন হামলায় আহতদের সরিয়ে নেওয়ার সময় বিমান হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী।
কাতার-ভিত্তিক টিভি নেটওয়ার্ক আল জাজিরার একজন মুখপাত্র বলেছেন, ইসরায়েলি হামলায় আল জাজিরার আলোকচিত্রী ও ক্যামেরাপারসন মোহাম্মদ সালামা নিহত হয়েছেন।
এক বিবৃতিতে আল জাজিরা বলেছে, আমরা ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর সংঘটিত এই ভয়াবহ অপরাধের তীব্র নিন্দা জানাই। ইসরায়েলি বাহিনী সাংবাদিকদের সরাসরি লক্ষ্যবস্তু করে হত্যা করেছে; যা সত্যকে স্তব্ধ করার পরিকল্পিত প্রচারণার অংশ।
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) এক বিবৃতিতে বলেছে, হামলায় এপির ৩৩ বছর বয়সী ভিজ্যুয়াল সাংবাদিক মারিয়াম দাগ্গা নিহত হয়েছেন। যুদ্ধের শুরু থেকে সংস্থাটির হয়ে ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করছিলেন তিনি।
রয়টার্সের একজন মুখপাত্র বলেছেন, আমরা রয়টার্সের কন্ট্রাক্টর হুসাম আল-মাসরির প্রাণহানির ঘটনায় গভীরভাবে মর্মাহত। হামলায় আরেক কন্ট্রাক্টর হাতেম খালেদ আহত হয়েছেন। তিনি বলেন, আমরা হাতেমের জরুরি চিকিৎসা সহায়তার জন্য গাজা ও ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছি।
এই হামলায় আরও দুই সাংবাদিক নিহত হয়েছেন বলে দাবি করে তাদের নাম প্রকাশ করেছে ফিলিস্তিনি সাংবাদিক ইউনিয়ন। তারা হলেন, মোয়াজ আবু তাহা এবং আহমাদ আবু আজিজ। এএফপির গাজার সংবাদকর্মীরা বলেছেন, কিছু ফিলিস্তিনি ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে কাজ করেছেন আবু তাহা।