অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার নবাবগঞ্জ সরকারি পাইলট স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ নাজমুন আখতারের বিরুদ্ধে চেক জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) স্বাক্ষর জাল করে ব্যাংক থেকে অর্থ উত্তোলনের চেষ্টার অভিযোগে তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। একইসঙ্গে জ্যেষ্ঠ শিক্ষক জাকির হোসেন মিয়াকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
এ ঘটনায় অধ্যক্ষের মেয়ে এবং তার ব্যক্তিগত গাড়িচালকের বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক।
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় প্রতিষ্ঠানের সভাপতি, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দিলরুবা ইসলাম স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ইউএনও দিলরুবা ইসলাম মৌখিকভাবে বলেন, কমিউনিটি ব্যাংক গুলশান শাখা থেকে জানানো হয় যে একই ব্যাংকের নবাবগঞ্জ শাখার ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকার একটি চেক জমা দেয়া হয়েছে। তাতে সভাপতির (ইউএনও)’র স্বাক্ষরে মিল পাওয়া যাচ্ছে না। পরে অনুসন্ধান করে দেখা যায় চেকটি ইস্যুবিহীন। এ বিষয়ে সাবেক অধ্যক্ষ নাজমুন আখতারের সাথে যোগাযোগ করা হলে, তিনি এ চেকটি ইস্যু করেনি বলে ব্যাংকে লিখিত দিয়েছেন।
ইউএনও আরও বলেন, আমি জানতে পেরেছি, চেকটি বহন করছিলেন নাজমুন আক্তারের ব্যক্তিগত গাড়ি চালক ও তার মেয়ে। এ মর্মে গুলশান থানায় জসিম উদ্দিন ও আসফিয়া নামের দুই জনের বিরুদ্ধে একটি সাধারণ ডায়েরি করেছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
প্রাথমিকভাবে বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী রমজান আলীর কাছ থেকে জানতে পেরেছি, নাজমুন আখতার তার কাছ থেকে গত ২১ আগষ্ট জোরপূর্বক চেক বই নিয়ে নেয় এবং সেখান থেকে ৫টি চেকের পাতা সরিয়ে রেখে দুই দিন পর চেক বই ফেরত দেয়া হয়।
ইউএনও বলেন, ব্যাংক স্টেটমেন্ট এনে দেখতে পাই, গত ২৫ আগষ্ট আসফিয়া নামের একজন ৪ লাখ ১১ হাজার টাকা লেনদেন করেছেন। সে সব চেক ইস্যুবিহীন এবং আমি ওইসব চেকে স্বাক্ষর করিনি। এবিষয়ে অনুসন্ধানে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ইতিমধ্যে এলাকার গণ্যমান্যদের সাথে আলোচনা করে নাজমুন আখতারকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। একই সাথে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ পরিপত্র অনুযায়ী বিদ্যালয়ে জ্যেষ্ঠ শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
ইউএনও আরও বলেন, বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী রমজান আলী এ বিষয়ে বলেন, গত ২১ আগষ্ট বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে পৌনে ৪টার দিকে বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষকদের সামনে সাবেক অধ্যক্ষ নাজমুন আখতার আমাকে চেক বই দিতে বলেন। শিক্ষকদের সামনে আমি চেক বই বুঝিয়ে দেই। দুই দিন পর চেক বই আমাকে ফেরত দেয়া হয়। দেখি সেখান থেকে ৭১ থেকে ৭৫ নম্বর পর্যন্ত চেকের পাতা নেই। পরে চেক জালিয়াতির বিষয়ে জানতে পারি। এই চেকের বিষয়ে নবাবগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরী করবো।
এবিষয়ে জানতে নবাবগঞ্জ সরকারি পাইলট স্কুল এন্ড কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অভিযুক্ত নাজমুন আখতারের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন করে বন্ধ পাওয়া যায়। অফিসে খোঁজ করেও পাওয়া যায়নি।