অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : একজন ব্রিটিশ বিশ্লেষক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে একজন ভ্রান্ত মেগালোম্যানিয়াক বা ভ্রান্ত আত্মঅহংকারী হিসেবে বর্ণনা করে বলেছেন: তিনি বৈশ্বিক সংকট সমাধানে অক্ষম।
পার্সটুডে আরও জানিয়েছে, গার্ডিয়ান বিশ্লেষক সাইমন টিসডাল (Simon Tisdall) মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গাজা ও ইউক্রেন যুদ্ধ সমাধানের দাবির সমালোচনা করে লিখেছেন: ট্রাম্প সিংহাসন এবং মুকুটবিহীন এক বিশ্ব রাজা। তিনি যুদ্ধ ও শান্তির মহান মধ্যস্থতাকারী হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করে মার্কিন আধিপত্যের ধারণাকে বাস্তবে রূপান্তর করার চেষ্টা করছেন।
টিসডাল জোর দিয়ে বলেন: ট্রাম্প, যিনি এ ধরণের মহত্ত্বের ভ্রান্তিতে মত্ত ছিলেন। প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণের আগে তিনি ইউক্রেন এবং গাজার সংঘাত দ্রুত নিষ্পত্তি করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। সম্ভবত, গর্ব এবং অহংকারের কারণে হয়তো সত্যিই ভেবেছিলেন, তিনি সেটা পারবেন। কিন্তু আট মাস পর, ঠিক বিপরীতটাই ঘটছে। উভয় সংকটই বিস্তৃত এবং তীব্রতর হচ্ছে।
তিনি বলেন: গাজা এবং ইউক্রেনে যুদ্ধের অবসান ঘটানোর পরিবর্তে, ট্রাম্প শান্তির প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন। তার বেপরোয়া হস্তক্ষেপ, আত্মপ্রদর্শনী এবং পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ পরিস্থিতিকে আরও সংকটময় করে তুলছে এবং উভয় সংঘাতকেই দীর্ঘায়িত করছে।
“টিসডেল” ট্রাম্পের বুদবুদ ফুটিয়ে দিয়ে তার ভণ্ডামিকে উস্কে দিয়ে আরও বলেন, অন্য কোনও মার্কিন প্রেসিডেন্ট নিজেকে একজন শক্তিশালী নেতা হিসেবে তুলে ধরার জন্য এত চেষ্টা করেন নি, যদিও বাস্তবে প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে তিনি শোচনীয়ভাবে ব্যর্থ হয়েছেন।
ব্রিটিশ এই বিশ্লেষকের মতে, ট্রাম্প নিজের শক্তিশালী ভাবমূর্তি আরও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে যা করেন তার বেশিরভাগই সত্যিকার অর্থে লোক দেখানো। অবৈধ নির্বাহী আদেশ জারি করা, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বরখাস্ত করা, প্রতিরক্ষাহীন প্রতিবেশী এবং অভিবাসীদের হুমকি দেওয়া, আমেরিকার শহরগুলোর রাস্তায় সৈন্যদের নির্দেশ দেওয়া অথবা বিচারক কিংবা স্বাধীন গণমাধ্যমের সাথে বিতণ্ডায় জড়ানো ইত্যাদি কর্মকাণ্ড তাঁর নিজের শক্তিমত্তা প্রদর্শন করার চেষ্টা মাত্র। কিন্তু বাস্তবতা একেবারেই ভিন্ন। ট্রাম্প যখন দেখেন লক্ষ্যবস্তু সহজ নয় বরং একগুঁয়ে, কিংবা যখন তিনি বিরোধীদের মুখোমুখি হন, তখন হাল ছেড়ে দেন এবং পিছু হটেন।
অন্যদিকে, লেবানিজ-আমেরিকান বিশ্লেষক মোহাম্মদ বাজ্জি (Mohamad Bazzi) দ্য গার্ডিয়ানে একটি বিশ্লেষণে লিখেছেন: কাতারের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক ইসরাইলি আগ্রাসন ওয়াশিংটনের মিত্রদের রক্ষা করার ক্ষেত্রে মার্কিন প্রেসিডেন্টের প্রতিশ্রুতির মূল্যহীনতা প্রমাণ করে।
ট্রাম্প সম্প্রতি কাতার সফর করেছেন এবং কাতারকে সুরক্ষা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি তার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে পারেন নি। ইসরাইলকে এই আরব দেশটিতে আক্রমণ করা থেকে বিরত রাখতে পারেন নি। গাজার জন্য একটি নতুন ইসরাইল-মার্কিন যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করার জন্য বৈঠকে বসতে যাওয়া হামাস নেতাদের একটি প্রতিনিধি দলকে লক্ষ্য করে ইসরাইল কাতারে নির্লজ্জভাবে বিমান হামলা চালিয়েছে। দোহায় ট্রাম্পের সাম্প্রতিক সফরের সময় কাতারকে সুরক্ষা দেওয়ার সেই প্রতিশ্রুতির কথা স্মরণ করিয়ে দেন বাজ্জি।#