অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রেজা তালায়েয়ি-নিক বলেছেন, দেশের ‘স্থানীয়ভাবে তৈরি, উন্নত ও জ্ঞানভিত্তিক’ ক্ষেপণাস্ত্র শিল্প বর্তমানে বিশ্বের শীর্ষ পর্যায়ের দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম।
গতকাল (সোমবার) সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তালায়েয়ি-নিক বলেন, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র শিল্পের অভিজ্ঞতা অন্য খাতগুলোতেও নিষেধাজ্ঞা মোকাবিলার মডেল হিসেবে কাজ করতে পারে।
তিনি আরও বলেন, ইরান গত ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে নিষেধাজ্ঞার মুখে থেকেও সেগুলোকে অকার্যকর করে উচ্চ মাত্রার ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
জেনারেল তালায়েয়ি-নিক জোর দিয়ে বলেন, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র শিল্পের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলো দেশটির প্রতিরক্ষা শক্তির জন্য একটি ‘কৌশলগত আক্রমণাত্মক সুবিধা’ তৈরি করেছে।
তিনি উল্লেখ করেন, গত জুন মাসে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক ইরানের বিরুদ্ধে আরোপিত ১২ দিনের যুদ্ধের সময়, ইরানের আক্রমণাত্মক ক্ষেপণাস্ত্র শক্তি শত্রুপক্ষকে গুরুতর ক্ষতির মুখে ফেলে দিয়েছিল।
১৩ জুন, ইসরায়েল কোনো উসকানি ছাড়াই ইরানের বিরুদ্ধে আগ্রাসন শুরু করে এবং বহু উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা, পারমাণবিক বিজ্ঞানী ও সাধারণ নাগরিককে হত্যা করে।
এক সপ্তাহেরও বেশি সময় পর, যুক্তরাষ্ট্রও জাতিসংঘ সনদ, আন্তর্জাতিক আইন এবং পরমাণু অস্ত্র নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি (এনপিটি)-এর মারাত্মক লঙ্ঘন করে ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় বোমা হামলা চালায়।
প্রতিশোধ হিসেবে ইরানের সশস্ত্র বাহিনী ইসরায়েলের কৌশলগত স্থাপনাগুলোসহ কাতারে অবস্থিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আল-উদেইদ বিমান ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালায়। ২৪ জুন, ইরান শেষ পর্যন্ত প্রতিশোধমূলক অভিযানের মাধ্যমে ইসরায়েলের ওপর চাপ সৃষ্টি করে যুদ্ধ বন্ধ করতে সক্ষম হয়।
ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) উপ-সেনাপ্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী ফাদাভি বলেছেন, ইরানের ওপর সরাসরি আক্রমণে ইসরায়েলি শাসন কঠিন পরাজয়ের মুখে পড়ে, যা তাদের গভীরভাবে হতাশ করেছে।
তিনি আরও যোগ করেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই হতাশা কাটাতে এবং ইসরায়েলি শাসকগোষ্ঠীর মনোবল পুনরুদ্ধার করতে যুদ্ধক্ষেত্রে প্রবেশ করেছিলেন।
তিনি বলেন, “সাধারণত যুক্তরাষ্ট্র পরোক্ষভাবে হামলা চালায়, কিন্তু এবার তারা সরাসরি ইসলামি প্রজাতন্ত্রের বিরুদ্ধে আক্রমণ চালায় এবং আক্রমণের আগেই তাদের উদ্দেশ্য প্রকাশ করে ফেলে।”
তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন, ইরান শত্রুর ওপর ভয়াবহ আঘাত হেনেছে এবং তাদের পরাজিত করেছে।