“যারা সচ্ছল ও অসচ্ছল অবস্থায় দান করে এবং রাগকে দমন করে ও মানুষের প্রতি ক্ষমাশীল; আল্লাহ্ কল্যাণকারীদের ভালবাসেন।” সূরা : আল ইমরান ঃ আয়াত : ১৩৪)
১. হযরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, মানব জাতির মধ্যে ঐ ব্যাক্তি উত্তম যে সর্বোত্তম চরিত্রের অধিকারী। (বোখারী ও মুসলিম শরীফ)
২. হযরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, কোন পশমী ও রেশমী কাপড়কেও আমি রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর হাতের তালুর চেয়ে অধিকতর নরম ও মোলায়েম অনুভব করিনি। কোন সুগন্ধির চেয়ে অধিকতর সুগন্ধি পাইনি। হযরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি ১০ বছর পর্যন্ত রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর খেদমত করেছি। কিন্তু কখনও তিনি আমার প্রতি “উহ্” শব্দও উচ্চারণ করেননি। আমার কৃত কোন কাজের জন্য বলেননি যে, তুমি এ কাজটি কেন করেছ, আর কোন কাজ না করলে, বলেননি কেন তুমি এ কাজটি করনি। (বোখারী ও মুসলিম শরীফ)
৩. হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে আমর ইবনে আস রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রকৃতিগতভাবে অশ্লীলতা পছন্দ করতেন না এবং তিনি অশ্লীলভাষীও ছিলেন না। তিনি বলতেন, তোমাদের মধ্যে উৎকৃষ্টতম লোক তারাই যাদের চরিত্র সর্বোৎকৃষ্ট। (বোখারী ও মুসলিম শরীফ)
৪. হযরত আবু দারদা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, কিয়ামতের দিন মু’মিন বান্দার আমলনামায় সচ্চরিত্রের চেয়ে অধিকতর ভারী আর কোন আমলই হবে না। বস্তুত মহান আল্লাহ্ তা’আলা অশ্লীলভাষী নিরর্থক বাক্য ব্যয়কারীর সাথে দুশমনী রাখেন। (তিরমিযী শরীফ)
৫. হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, কোন জিনিষ লোকজনের সর্বাধিক পরিমাণ বেহেশতে প্রবেশ করারে ? তিনি বলেছিলেন,তাকওয়া বা মহান আল্লাহ্ ভীতি ও সচ্চরিত্র। তাকে আরও প্রশ্ন করা হয়েছিল, কোন বস্তু লোকজনের সর্বাধিক পরিমাণে দোযখে প্রবেশ করাবে ? তিনি বলেছিলেন মুখ ও লজ্জাস্থান। (তিরমিযী শরীফ)
৬. হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ঈমানের দিক থেকে সর্বাধিক কামিল মু’মিন হচ্ছে সেই লোক যার চরিত্র সর্বোৎকৃষ্ট। আর তোমাদের মাঝে সর্বোত্তম লোক তারা যারা তাদের স্ত্রীদের সঙ্গে সর্বোত্তম আচরণ করে। (তিরমিযী শরীফ)
৭. হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হতে শুনেছি, তিনি ইরশাদ করতেন ঃ মু’মিন তার সুন্দর স্বভাব ও সচ্চরিত্রের মাধ্যমে দিনে রোযা পালন করে ও রাত জেগে ইবাদতকারীর মর্যাদা হাসিল করতে পারে। (আবূ দাউদ শরীফ)
৮. হযরত আবূ উমামা বাহিলী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, আমি এমন লোকজনের জন্য বেহেশ্তের পার্শ্ববর্তী এক ঘরের যামিন যে হকের (সত্যের) উপর প্রতিষ্ঠিত থেকে রিয়াকারী বা প্রদর্শনমূলক কাজ পরিত্যাগ করে। আর আমি এমন এক লোকজনের জন্য বেহেশ্তের মাঝে ঘরেরও যামিন যে ঠাট্রাচ্ছলে হলেও মিথ্যা ও মিথ্যাচারকে পরিহার করে। আর আমি বেহেশ্তের শীর্ষস্থানে অবস্থিত একটি ঘরের যামিন এমন এক লোকজনের যার স্বভাব-চরিত্র ভাল। এ হাদীসটি সহীহ্ আবূ দাউদ সহীহ্ সনদে রিওয়ায়েত করেছেন।
৯. হযরত জাবির রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, কিয়ামতের দিন তোমাদের মধ্যে হতে আমার কাছে সবচেয়ে প্রিয় ও মজলিসের দিক দিয়ে সবচেয়ে নিকটবর্তী হবে সেই ব্যক্তি, যার চরিত্র সবচেয়ে ভাল। অপর দিকে কিয়ামতের দিন তোমাদের মধ্যে হতে আমার কাছে সবচেয়ে ঘৃণিত ও আমার হতে সবচেয়ে বেশী দূরবর্তী হবে সেই লোক যারা দ্বিধা সহকারে কথা বলে, কথার দ্বারা অহংকার প্রকাশ করে এবং যারা মতাকাইহিকুন। সাহাবায়ে কেরাম বললেন, ইয়া রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দ্বিধা সহকারে বাক্যলাপকারী ও কথার মাধ্যমে অহংকার প্রকাশকারী অর্থতো বুঝলাম, কিন্তু মতাকাইহিকুন এর অর্থ কি ? তিনি বললেন, এর অর্থ অহংকারী ব্যক্তি। (তিরমিযী শরীফ)
Leave a Reply