19 Apr 2024, 09:09 pm

ইমামের পিছনে জামায়াতে ফরয নামায আদায়ে সূরা ফাতিহা পাঠ করার বিষয়ে সহীহ হাদীসসমূহ

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

“হযরত উবাদাহ ইবনে সামিত রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যাক্তি নামাযে সূরা ফাতিহা পাঠ করল না তার নামাযই হল না। (সহীহ্ বোখারী শরীফ হাদীস নম্বর-৭১২, সহীহ্ মুসলিম শরীফ হাদীস নম্বর ৭৬০, ইবনে মাজাহ্ হাদীস নম্বর- ৮৩৭, নাসাঈ শরীফ হাদীস নম্বর ৯১৩)
“হযরত আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, নবী করিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন ঃ যে ব্যক্তি নামায পড়ল অথচ তাতে উম্মুল কোরআন অর্থাৎ সূরা ফাতিহা পাঠ করেনি তার নামায ত্রুটিপূর্ণ রয়ে গেল। তিনি এ কথাটা তিনবার বলেছেন। হযরত আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহুকে জিঞ্জাসা করা হল, আমরা যখন ঈমামের পিছনে নামায পড়ব তখন কি করব? তিনি বললেন, তোমরা চুপে চুপে তা পড়ে নাও। কেননা আমি রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি ঃ মহান আল্লাহ্ বলেছেন ঃ আমার এবং বান্দার মাঝে আমি নামাযকে অর্ধেক অর্ধেক করে ভাগ করে নিয়েছি। আমার বান্দা যা চায় তাকে তা দেয়া হয়। বান্দা যখন বলে, ‘আলহামদু লিল্লাহি রব্বিল আ’লামীন’; আল্লাহ্ উত্তরে বলেন ঃ আমার বান্দা আমার প্রশংসা করছে। সে যখন বলে, ‘আর রহমানির রহিম’; আল্লাহ্ বলেন ঃ বান্দা আমার প্রশংসা করছে, সে যখন বলে, ‘মালিকি ইয়াওমিদ্দিন’; তখন আল্লাহ্ বলেন ঃ আমার বান্দা আমার মহাত্ম বর্ণনা করছে। তিনি এটাও বলেন ঃ বান্দা তার সমস্ত কাজ আমার উপর নির্ভর করছে। সে যখন বলে, ‘ইয়্যাকানা’বুদু ওয়া ইয়্যাকা নাস্তাঈন’ তখন আল্লাহ্ বলেন ঃ এটা আমার এবং বান্দার মধ্যকার ব্যাপার, আমার বান্দা যা চায় তাই দেয়া হবে। আর যখন সে বলে, ‘ইহ্দিনাস সিরাত্বোয়াল মুস্তাকীম, সিরাত্বোয়াল্লাযীনা আন’আমতা আ‘লাইহিম, গাইরিল মাগদুবি আ‘লাইহিম ওয়ালাদ্ব দ্বো—-ললীন’ তখন আল্লাহ বলেন ঃ এসবই আমার বান্দার জন্য। আমার বান্দা যা চায় তা তাকে দেয়া হবে। হযরত সুফিয়ান বলেন, আমি আ’লা ইব্নে আব্দুর রহমান ইব্নে ইয়া’কুবকে জিঞ্জেস করলে তিনি আমাকে এ হাদীস বর্ণনা করে শোনান।  এ সময় তিনি রোগাক্রান্ত ছিলেন। আর আমি তাকে দেখতে গিয়েছিলাম। (সহীহ্ মুসলিম শরীফ, হাদীস নম্বর- ৭৬৪)
সহীহ্ বোখারী শরীফের হাদীস নম্বর- ৭১২, সহীহ্ মুসলিম শরীফের হাদীস নম্বর- ৭৬০ ও ৭৬৪, সহীহ আবু দাউদ শরীফের হাদীস নম্বর- ৮২১, তিরমিযী শরীফের হাদীস নম্বর- ২৯৩ ও ২৯৪, ইবনে মাজাহ শরীফের হাদীস নম্বর- ৮৩৭ ৮৩৮ ও ৮৪২ এবং নাসাঈ শরীফের হাদীস নম্বর ৯১২ অনুযায়ী ঈমাম যখন চুপে চুপে সূরা কিরাত পাঠ করবে তখন মুক্তাদীকে সূরা ফাতিহা পাঠ করতে হবে।
বিঃ দ্রঃ- ফজরের ফরযের দু’রাকায়াতে, মাগরীবের ফরযের প্রথম দিকের দু’রাকায়াতে ও এশার ফরযের প্রথম দিকের দু’রাকায়াতে ইমাম উচ্চ স্বরে সূরা কিরায়াত পাঠ করার সময় মুক্তাদীকে মনযোগ দিয়ে শুনলেই হবে। (সূরা আ’রাফের ২০৪ নম্বর আয়াত অনুয়ায়ী) বাদবাকী যোহরের ফরযের চার রাকয়াতে, আসরের ফরযের চার রাকয়াতে, মাগরীবের ফরযের শেষের এক রাকয়াতে ও এশার ফরযের শেষের দু’রাকায়াতে ইমাম যখন চুপেচুপে সূরা কিরয়াত পাঠ করবে তখন মুক্তাদীকে চুপে চুপে সূরা ফাতিহা পাঠ করতে হবে।
প্রিয় পাঠক,
সহীহ্ হাদীসে উল্লেখ রয়েছে কিয়ামতের দিন মুসলমানদের প্রথমেই নামাযের হিসাব নেওয়া হবে। ত্রুটির কারণে মহান আল্লাহ্ অনেকের ফরয নামায বাতিল করে তার নফল তলব করবেন। একবার ভেবে দেখুন তো! এতো কষ্ট করে যে নামায আমারা আদায় করছি কিয়ামতের দিন তা বাতিল হয়ে গেলে কি অবস্থা হবে। তাই আসুন লজ্জা-সংশয় না করে ও কারো কথায় কান না দিয়ে সহীহ্ হাদীস অনুযায়ী আমল করি। মনে রাখবেন কোন মায্হাব আপনাকে বেহেশ্তে নিয়ে যাবে না বরং মজবুত ঈমান ও সহীহ আমল বেহেশ্তের পথ দেখাবে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • Visits Today: 4613
  • Total Visits: 581393
  • Total Visitors: 2
  • Total Countries: 903

আজকের বাংলা তারিখ

  • আজ শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ ইং
  • ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (গ্রীষ্মকাল)
  • ১০ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরী
  • এখন সময়, রাত ৯:০৯

Archives

MonTueWedThuFriSatSun
22232425262728
2930     
       
  12345
2728     
       
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
31      
  12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930   
       

https://youtu.be/dhqhRb9y018