অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ইরানে পুলিশি হেফাজতে মাহসা আমিনি নামে এক তরুণীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর মাহবাদে ইরানের নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে আরও তিনজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে এ তথ্য।
মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলছে, বুধবার থেকে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে আটজন নিহত হয়েছেন।
ইরানে জনসম্মুখে নারীদের বাধ্যতামূলক হিজাব পরাসহ কঠোর পর্দা পালনের নিয়ম রয়েছে। এই বিধি তদারক করার জন্য রয়েছে দেশটির ‘নৈতিকতাবিষয়ক’ পুলিশ। এই পুলিশের একটি দল গত ১৩ সেপ্টেম্বর ২২ বছর বয়সী মাহসা আমিনিকে তেহরান থেকে আটক করে। আমিনি তার পরিবারের সঙ্গে তেহরানে ঘুরতে গিয়েছিলেন। আটকের পর মাহসা আমিনি থানায় অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত ১৬ সেপ্টেম্বর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় মাহসা আমিনির। এ ঘটনার পর থেকে ইরানজুড়ে ব্যাপক নিন্দার ঝড় শুরু হয়। দফায় দফায় বিক্ষোভ শুরু হয় দেশটির ৫০টির বেশি শহরে।
মাহবাদের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ‘সন্ত্রাসবাদী-বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী’কে শহরের সরকারি স্থাপনাগুলোতে আক্রমণ করতে বিক্ষোভকারীদের প্ররোচিত করছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যদের ওপরও হামলার অভিযোগ করছেন তারা।
দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম নিহতদের পরিচয় প্রকাশ করেনি। অন্য একটি সূত্রে জানা গেছে যে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে একজন পুরুষ এবং দুই নারী মারা গেছেন।
যদিও বিবিসি স্বাধীনভাবে এসব অভিযোগ যাচাই করতে পারেনি।
নরওয়েভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন হেনগো অর্গানাইজেশন ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, ‘বুধবার ছিল মাহসা আমিনির মৃত্যুর ৪০তম দিন। ওই দিন মধ্যরাতের পর মাহবাদ শহরে ব্যাপক বিক্ষোভ ও আন্দোলনকারীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষ হয়’।
ইরানের প্রথা অনুযায়ী কারও মৃত্যুর ৪০তম দিনে শোক পালনের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়। তাই নিষেধাজ্ঞা ও সতর্কতা উপেক্ষা করে বুধবার হাজারো মানুষ সমবেত হন ইরানের কুর্দিস্তানের সাকিজ শহরে। সেখানেই মাহসা আমিনিকে কবর দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, খোররামাবাদের ভিডিওতে দেখা গেছে যে বিক্ষোভকারীরা ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনিকে ‘স্বৈরশাসক’ উল্লেখ করে রাষ্ট্রবিরোধী স্লোগান দিচ্ছেন। ইসলামি প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পর এটি সবচেয়ে গুরুতর চ্যালেঞ্জ বলে মনে করা হচ্ছে।
এর আগে ২০১৯ সালে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে ব্যাপক বিক্ষোভের সাক্ষী হয়েছিল ইরান। সূত্র: বিবিসি
Leave a Reply