অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : দেশে মোট রপ্তানি আয়ের ৮৫ শতাংশ আসে তৈরি পোশাক পণ্য রপ্তানি থেকে। চলতি অর্থবছরে (২০২২-২৩) এই খাতে রপ্তানি আয়ের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমএ) তথ্য মতে, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সমস্যার কারণে সেপ্টেম্বর মাসে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি কমেছে ৭ দশমিক ৫২ শতাংশ। চলতি অক্টোবরেও রপ্তানি ২০ শতাংশ কমবে। নভেম্বর মাসে এটি আরও হ্রাস পাবে বলে আশঙ্কা করছে বিজিএমএ।
রবিবার এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির সভাপতি ফারুক হাসান একথা বলেন। বিজিএমইএ কমপ্লেক্সে বিজিএমইয়ের উদ্ভাবন, দক্ষতা উন্নয়ন, পেশাগত নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উদ্বোধন এবং পোশাক শিল্পের সমসাময়িক বিষয় নিয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ২০২২-২৩ অর্থবছরে তৈরি পোশাক খাতের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা ৪৬ দশমিক ৮০ বিলিয়ন ডলার। গত অর্থবছরের থেকে ১০ শতাংশ বাড়িয়ে এই লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়।
তৈরি পোশাক খাতের বর্তমান সমস্যার বিষয়ে ফারুক হাসান বলেন, ‘বর্তমান বোর্ড দায়িত্ব গ্রহণের পর গত বছরের আগস্ট থেকে চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত পোশাক শিল্পে টানা প্রবৃদ্ধি হয়েছে, যেটি উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি ছিল। যে কারণে গত অর্থবছরে এ শিল্পখাত থেকে রপ্তানি হয়েছে ৪২ দশমিক ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে, জুলাই-আগস্টে প্রবৃদ্ধি ভালো ছিল। কিন্তু গত দুই মাসে আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, ক্রয়াদেশ ক্রমেই কমছে।’
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ, বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক অস্থিরতা, মূল্যস্ফিতি ও খুচরা বাজারে প্রভাবের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে এবং জার্মানিসহ প্রধান বাজারগুলোতে প্রবৃদ্ধি হ্রাস পাচ্ছে।
ফারুক হাসান বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে জ্বালানি সংকট চলছে। স্থানীয় পর্যায়ে গ্যাস-বিদ্যুতের সংকটের প্রভাব আমাদের পোশাক শিল্পেও পড়ছে। এতে করে শিল্পে ব্যয় বাড়ছে দুভাবে। বিদ্যুতের অপ্রতুলতার কারণে কারখানাগুলোতে ডিজেল দিয়ে জেনারেটরগুলো চালানো হচ্ছে। অন্যভাবে, অধিক সময় জেনারেটর চালানোর কারণে জেনারেটরগুলো ঘনঘন বিকল হচ্ছে। এতে করে শিল্পে উৎপাদন ব্যয় বাড়ছে।’
তিনি বলেন, ‘সরকারের কাছে আমাদের একান্ত অনুরোধ রপ্তানিমুখী শিল্পকারখানাগুলোতে বিশেষ ব্যবস্থায় চাহিদা অনুযায়ী নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ করা হোক। সেই সঙ্গে আমাদের আরেকটি অনুরোধ, আমাদের উৎসে কর যা এ বছরে ১ শতাংশ করা হয়েছে, সেটি পূর্ববর্তী বছরের ন্যয় একই পর্যায়ে রাখা হোক।’
সংবাদ সম্মেলনে বিজিএমএর সহসভাপতি মো. শহীদুল্লাহ আজিম ও অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
Leave a Reply