অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় বিশ্ব যুদ্ধ কি আসন্ন ? এ আশঙ্কা করছেন অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক। দেশজুড়ে ছড়িয়ে থাকা বম্ব শেল্টার অর্থাৎ আগ্নেয়াস্ত্র কিংবা ক্ষেপণাস্ত্র থেকে নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রগুলো পরীক্ষা করে দেখছে পুতিন সরকার। ১৯৪০ থেকে ১৯৮০ এর দশক পর্যন্ত চলা স্নায়ুযুদ্ধের পর এই প্রথম নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রগুলো পুনরায় চালু করতে যাচ্ছে রাশিয়া। যদিও ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি।
এ কাজের সঙ্গে যুক্ত রুশ সরকারি কর্মচারীরা নাম না প্রকাশের শর্তে জানান, ঊধ্র্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে বম্ব শেল্টারগুলোর বেজমেন্ট থেকে শুরু করে সবকিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখার পাশাপাশি সংস্কার ও পরিষ্কার করা হচ্ছে।
তারা আরও জানান, যুদ্ধের আরও ভয়াবহ পরিস্থিতিতে নাগরিক-প্রতিরক্ষা অবকাঠামোগুলো যাতে পুরোপুরিভাবে ব্যবহার করা যায়, সে উদ্দেশ্যেই শেল্টারগুলো সংস্কার করা হচ্ছে। এ উদ্যোগের বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো ঘোষণা দেওয়া হয়নি। তাছাড়া কোনো বিশেষ হুমকি বা পরিকল্পনার পরিপ্রেক্ষিতে এ কাজ পরিচালিত হচ্ছে না।
এ সপ্তাহেই রুশ শিক্ষা কর্মকর্তারা বলেন, আগামী বছর থেকে দেশের সব স্কুলে সোভিয়েত যুগের মতো মৌলিক সামরিক প্রশিক্ষণগুলো পুনরায় চালু করা হবে।
ক্রেমলিনের নিরাপত্তাবিষয়ক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নিকোলায় পাত্রুশেভ বলেন, যুদ্ধস্থানের কাছাকাছি যেসব সীমান্তবর্তী এলাকায় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়েছে, সেসব এলাকায় আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়ে বম্ব শেল্টারগুলো সংস্কার করা হচ্ছে।
এমনকি, এ বছরের এপ্রিলে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে নির্মিত বম্ব শেল্টারগুলোর একটি তালিকা তৈরি করার নির্দেশ দেওয়া হয়। সেখানে বলা হয়, যে শেল্টারগুলো এখন ব্যক্তিমালিকানা বা কোনো প্রতিষ্ঠানের কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে, সেগুলোও নিয়ে নেবে সরকার।
তবে এখন শুধু সোভিয়েত আমলে বাসা-বাড়ি, স্কুল ও সরকারি দপ্তরগুলোর বেজমেন্টে তৈরি করা শেল্টারগুলো সংস্কার ও পরিষ্কার করার কাজ চলছে।
সেন্ট পিটার্সবার্গ পলিটিক্স ফাউন্ডেশনের পর্যালোচক মিখাইল ভিনোগ্রাদভ বলেন, আপাত দৃষ্টিতে মনে হচ্ছে- এটি একটি কেন্দ্রীয় নির্দেশ। আবার এমনো হতে পারে- এটা রুশ বেসামরিক প্রতিরক্ষা এজেন্সিগুলোর উদ্যোগ। এর মাধ্যমে তারা দেখাতে চাচ্ছেন, এজেন্সিগুলো বসে না থেকে আসলেই কিছু করছে।
এদিকে ইউক্রেনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, রাশিয়ার মূল ভূখণ্ডে ও সীমান্তবর্তী এলাকায় হামলা চালানোর কোনো উদ্দেশ্য তাদের নেই। তারা শুধু নিজেদের জায়গাগুলো রুশ সেনাদের হাত থেকে মুক্ত করতে চায়।
অন্যদিকে, যুদ্ধের তীব্রতা যাতে আর না বাড়ে ও রাশিয়া যাতে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার না করে, সেজন্য যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র দেশগুলো ইউক্রেনে দূর-পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ কমিয়ে এনেছে। সূত্র: ব্লুমবার্গ
Leave a Reply