অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : রাইড শেয়ারিংয়ের সঙ্গে পরিচিত বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের মানুষ। কিন্তু বউ শেয়ারিংয়ের কথা শুনেছেন কি? নিজের স্ত্রীকে অন্য পুরুষের সঙ্গে যৌনতায় লিপ্ত করিয়ে পৈশাচিক আনন্দ উপভোগ করা- এমন ঘটনার সঙ্গেই বা কতজন পরিচিত। আশ্চর্যজনক হলেও এমনই ঘটনা ঘটিয়ে কারাদণ্ডসহ বেত্রাঘাতের মতো শাস্তির মুখে সিঙ্গাপুরের চার পুরুষ।
বউ শেয়ারিংয়ের মতো বিকৃত যৌনাচারে মেতে উঠেছিলেন ওই চার পুরুষ। নিজেরা স্ত্রীদের সঙ্গে ‘ফ্যান্টাসি’তে মেতে তা অন্য পুরুষদের সঙ্গে শেয়ার করতেন। তারা যেন তাদের নিজেদের পার্টনারকে যৌনতায় উদ্বুদ্ধ করেন, তাদেরকে ধর্ষণ করেন- এমনভাবে প্রলুব্ধ করার জন্য তারা এ কাজ করতেন।
এই অভিযোগে বুধবার সিঙ্গাপুরের একজন বিচারক ওই চার পুরুষকে সাড়ে ১৩ বছর থেকে ২২ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড দিয়েছে।
দ্য স্ট্রেইটস টাইমস এ খবর দিয়েছে। সেখানে বলা হয়, এই চক্রে জড়িত সাত জন পুরুষ। তার মধ্যে চার জন তাদের স্ত্রীদের সঙ্গে যৌনাচারে মেতে উঠতেন এবং তা অন্যদের সঙ্গে শেয়ার করতেন। এ অভিযোগে তাদের প্রত্যেককে কারাদণ্ডের পাশাপাশি ২০ ঘা করে বেত্রাঘাতের আদেশ দেওয়া হয়েছে। তবে একজনের বয়স ৫০ বছরের বেশি হওয়ায় তিনি বেত্রাঘাতের শাস্তি থেকে রেহাই পেয়েছেন।
বিচারক পাং খাং চাউ ওই চার পুরুষের বিরুদ্ধে শাস্তি ঘোষণা করে বলেন, আদালতের সামনে আসা যৌনতা বিষয়ক সবচেয়ে বিস্ময়কর এবং নৃশংস ঘটনাগুলোর অন্যতম এই ঘটনা।
শাসিত পাওয়া পুরুষরা নিজেদের স্ত্রীদের অন্যকে ভোগ করার ব্যবস্থা করে দিতেন। অন্য ব্যক্তিরা যখন স্ত্রীদের ধর্ষণ করতো, আসামিরা তা বসে বসে দেখতেন। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট নারীর মত নেওয়া হতো না। আসামিদের স্ত্রীদের যখন অন্য কেউ ধর্ষণ করতো, তখন তারা ওই দৃশ্যের ছবি তুলে এবং ভিডিও করে তা অন্য পুরুষদের সঙ্গে শেয়ার করতেন।
চার অপরাধীর মধ্যে একজনের ছদ্দনাম ‘কে’। তাকে ২০ ঘা বেত্রাঘাতসহ ২২ বছরের জেল দিয়েছে আদালত। তিনি একজন ব্যবসায়ী। নিজের স্ত্রীর ওপর ২০১২ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত তিনবার ঘুমের ওষুধ প্রয়োগ করে প্রতিবার তার স্ত্রী অচেতন হয়ে যাওয়ার পর ‘জে’ নামে আরেকজন তাকে ধর্ষণ করতো। প্রতিদান হিসেবে ‘জে’-এর অচেতন স্ত্রীকে নিজের ফ্ল্যাটে অচেতন অবস্থায় ধর্ষণের সুযোগ পেত ‘কে’। একে অন্যের স্ত্রীকে ধর্ষণ করার পর তারা যা করেছে তা নিয়ে চ্যাটিং করতো।
‘জে’-এর স্ত্রী বলেছেন, তিনি প্রচণ্ড বেদনাহত। ক্ষুব্ধ, হতাশ। তার সঙ্গে যে বিশ্বাসঘাতকতা করা হয়েছে তাতে তিনি স্তব্ধ। তিনি এক সময় ভেবেছিলেন এর চেয়ে মৃত্যুও ভালো। সময় বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তিনি এ বিষয়ে আরও অনেক ঘটনার সন্ধান পান।
‘কে’-এর স্ত্রীও একই রকম কথা বলেছেন। তিনি প্রথমে ভেবেছিলেন এটা হয়তো শুধু তার সঙ্গে ঘটেছে। এমনই আরেক অপরাধীর ছদ্দনাম ‘এল’। তাকে সাড়ে ১৩ বছরের জেল দেওয়া হয়েছে। তিনি ২০১৩ সালে ‘জে’-এর স্ত্রী অচেতন থাকা অবস্থায় তাকে ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতন করেছে।
২০১৭ সালে ‘এল’ তার স্ত্রীকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যায় এবং অপরাধী ‘পি’কে আমন্ত্রণ জানায় তাকে ধর্ষণ করতে। তবে ‘পি’ এক্ষেত্রে সফল হয়নি। এ ঘটনায় জানুয়ারিতে তাকে তিন বছরের জেল দেওয়া হয়েছে। আরেক অপরাধী ‘এম’ একটি কোম্পানির পরিচালক। তাকে ২০ ঘা বেত্রাঘাতসহ ২০ বছরের জেল দেওয়া হয়েছে।
Leave a Reply