21 Nov 2024, 07:57 pm

ময়মনসিংহের ভাংডির দোকানে মাধ্যমিকের ৫৩০ কেজি নতুন বই

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া উপজেলার হুকুমচাঁদা গ্রামে ভাংডির দোকানে ২০২২ শিক্ষা বর্ষের ৫৩০ কেজি অব্যহৃত (নতুন) বই পাওয়া গেছে। ভাংডির দোকানি জানান, ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির নতুন বই ২০ হাজার টাকা দিয়ে তিনি উপজেলার সীমান্তবর্তী ত্রিশাল উপজেলার রওশন আরা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ক্রয় করেছেন। প্রধান শিক্ষক স্বীকার করেছেন (নতুন) বইগুলো বিদ্যালয় থেকে বিক্রি করা হয়েছিল। অভিভাবকদের অভিযোগ নতুন বই গুলো শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিতরণ না করে কেজি দরে বিক্রি করেছেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া উপজেলার আন্ধারিয়াপাড়া হুকুমচাদা গ্রামের আজিজুলের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে আট বস্তা মাধ্যমিকের অব্যবহৃত বই মজুত করে রাখা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার ফুলবাড়ীয়া উপজেলার সীমান্তবর্তী ত্রিশাল উপজেলার রওশন আরা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় হতে ৩৯ টাকা কেজি দরে ৫৩০ কেজি বই ক্রয় করেন আজিজুল। বই বুঝে আনার সময় স্কুলের সহকারী শিক্ষক হুমায়ূন, রোকন ও অফিস সহকারী দেলোয়ারসহ অন্য স্টাফরা উপস্থিত ছিলেন। হুমায়ূন স্যারের কাছে ৩৯ টাকা দরে ৫৩০ কেজি বইয়ের সর্বমোট ২০ হাজার টাকা প্রদান করে বই ও খাতা কিনেন তিনি। ঐ সময় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক স্কুলে উপস্থিত ছিলেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কুতুবখানা বাজারের পশ্চিমে হুমুকচাঁদা গ্রামে আজিজুল নিজ বাড়িতে ভাঙারির ব্যবসা করেন। সেখানে প্লাস্টিকের আটটি বস্তায় প্যাকেট করা বই। মুখ খুলতেই দেখা যায় বইয়ের মলাট ছিঁড়া কিন্তু বইয়ের পাতায় পাতায় লেখা 2022। অনেক বস্তায় ২০২১ সালের বই একদম আস্ত (নতুন) দেখা যায়।

ভাঙারির ব্যবসায়ী আজিজুল জানান, বইগুলো স্যার ও কেরানিদের উপস্থিতিতে আমাকে মাপ দিয়ে বুঝিয়ে দেওয়া হয় । ঐ সময় থেকে বইয়ের কভার পৃষ্ঠা ছিঁড়া। কোন সনের বই আমি জানি না। তারা আমাকে নগদ টাকায় বই খাতা বুঝিয়ে দিয়েছে। আমার কাছে আট বস্তা বই আছে। সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীর অভিভাবক রাজু মিয়া জানান, আমার মেয়ে সবগুলা বই পায় নাই। আমার চাচাতো বোনের পুরাতন বই এনে আমার মেয়ে পড়ছে। কমিটির অভিভাবক সদস্য কফিল উদ্দিন, সুলতান মিয়া ও আজিজুল হক বলেন, ‘এমনিতেই সারা দেশে বইয়ের সংকট অথচ আমাদের ম্যাডাম মেয়েদের বই না দিয়ে অন্যত্র বিক্রি করে দেন। এই বিষয় মিটিংয়ে কোনদিন ওঠায় নাই। সে বেশি বেশি চাহিদা দিয়ে বইয়ের সংকট তৈয়ার করতে চায়।

প্রধান শিক্ষক আছমা আক্তারের কাছে স্কুলের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ও ২০২২ সালের বইয়ের চাহিদার পরিসংখ্যান জানতে চাইলে পাওয়া যায়নি। তবে বিক্রি বইগুলো উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে পাঠিয়ে দেবেন বলে জানান তিনি।

ত্রিশাল উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মফিজুল ইসলাম বলেন, আমাকে হেড মাস্টার রাতে ফোন দিয়ে পুরাতন বই বিক্রি করার নিয়ম জানতে চাইছিল। আমি তাকে বলেছি অব্যবহৃত বই থাকলে সেগুলো উপজেলায় জমা দিয়ে দেবে। সেগুলো উপজেলা কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক টেন্ডারের মাধ্যমে বিক্রি করতে হবে। যদি পুরাতন খাতার সঙ্গে বই চলে গিয়ে থাকে তাহলে ফেরত নিয়ে আসতে বলা হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনের নজরে এসেছে। তদন্ত করে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা জানান ঐ কর্মকর্তা।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • Visits Today: 4531
  • Total Visits: 1261375
  • Total Visitors: 4
  • Total Countries: 1668

আজকের বাংলা তারিখ

  • আজ বৃহস্পতিবার, ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং
  • ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (হেমন্তকাল)
  • ১৯শে জমাদিউল-আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরী
  • এখন সময়, সন্ধ্যা ৭:৫৭

Archives

MonTueWedThuFriSatSun
    123
18192021222324
252627282930 
       
15161718192021
293031    
       
  12345
2728     
       
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
31      
  12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930   
       

https://youtu.be/dhqhRb9y018