অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বাজেটের প্রকল্পে চট্টগ্রাম শহরের যোগাযোগ ব্যবস্থা বদলে দেয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী।
আজ বুধবার আড়াই হাজার কোটি টাকার প্রকল্প বিষয়ে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ‘ডিজাইন প্ল্যানিং এন্ড ম্যানেজমেন্ট কনসালটেন্টস লিমিটেড’-এর সাথে মতবিনিময়কালে তিনি এ প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
টাইগারপাস চসিক কার্যালয়ে আয়োজিত সভায় মেয়র বলেন, ‘আমি মেয়র হওয়ার পরপরই প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামকে বদলে দিতে চসিকের ইতিহাসের সর্বোচ্চ আড়াই হাজার কোটি টাকার প্রকল্প বরাদ্দ দিয়েছেন। এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে চট্টগ্রামের মূূল সড়কগুলো প্রশস্ত এবং জনবান্ধব হবে, হ্রাস পাবে যানজট। পথে হাঁটতে মানুষের যে কষ্ট তা লাঘব হয়ে নান্দনিক চট্টগ্রামের পথগুলোতে হাঁটাও একটি বিনোদন হয়ে উঠবে।
পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি দলের পক্ষে প্রকৌশলী মো. শাহজাহান আলম বলেন, ঘনবসতিপূর্ণ চট্টগ্রামের যানজট হ্রাস এবং ভবিষ্যতের জন্য নগরীকে প্রস্তুত করতে এ প্রকল্প বেশ সহায়ক হবে। আমরা ইতিমধ্যে প্রকল্পের জরিপ, ডিজাইন এবং সয়েল টেস্ট শুরু করেছি। এ প্রকল্পের অধীনে বিমানবন্দর সড়ক সম্প্রসারণসহ রুবি সিমেন্ট এলাকায় ৬০০ মিটারের ওভারপাস, ৭৬২ দশমিক ৮৩ কিলোমিটার সড়ক সংস্কার, ৩৮টি ফুটওভার ব্রিজ, ১৪টি ব্রিজ, ২২টি কালভার্ট ও ১০টি গোলচত্বর নির্মাণ করা হবে।
সভায় চসিকের প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মুনিরুল হুদা, বিপ্লব দাশ, প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মো. গোলাম ইয়াজদানী, প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মুহাম্মদ আবুল হাশেম, নির্বাহী প্রকৌশলী শাহীন-উল-ইসলাম, ফারজানা মুক্তা, জসিম উদ্দিন, আশিকুল ইসলাম, আনোয়ার জাহান উপস্থিত ছিলেন।
সভাশেষে সড়ক যোগাযোগ নিরাপদ করার বিষয়ে ব্লুমবার্গ ফিলানথ্রপিস ইনিশিয়েটিভ ফর গ্লোবাল রোড সেফটির (বিআইজিআরএস) একটি প্রতিনিধি দল মেয়রের সাথে সাক্ষাৎ করেন।
সভায় বলা হয়, চসিক চট্টগ্রামের অবকাঠামোগত উন্নয়নের ক্ষেত্রে মানুষের নিরাপত্তা ও যোগাযোগ ব্যবস্থাকে নিরাপদ করাকে প্রাধান্য দিচ্ছে। বিশ্বজুড়ে ৩০টির অধিক শহরে সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার মাধ্যমে দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু কমাতে কাজ করছে বিআইজিআরএস। চট্টগ্রামেও সড়ক-সংঘর্ষ কমিয়ে আনতে বিআইজিআরএস বিভিন্ন সরকারি সংস্থার সাথে কাজ করছে যার নেতৃত্বে রয়েছে চসিক। চসিকের অব্যাহত সহায়তায় চট্টগ্রামের সড়কগুলোকে নিরাপদ হয়ে উঠছে।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন প্যানেল মেয়র আফরোজা কালাম, সচিব খালেদ মাহমুদ, প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম, প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মুহাম্মদ আবুল হাশেম, বিআইজিআরএসের গ্লোবাল রোড সেফটি পার্টানরশিপের (জিআরএসপি) এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের উপদেষ্টা অ্যল স্টুয়ার্ট, ভাইটাল স্ট্র্যাটেজিসের প্রোগ্রাম অফিসার সুগান্থি শারাভানান, বিআইজিআরএসের ঢাকা সিটি কো-অর্ডিনেটর ও সাবেক অতিরিক্ত সচিব আব্দুল ওয়াদুদ, বুয়েটের একসিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক কাজী সাইফুন নেওয়াজ ও বিআইজিআরএসের কনসালটেন্টগণ।
উল্লেখ্য, এ প্রকল্পের আওতায় ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে নিরাপদ সড়ক কর্মসূচি চলমান রয়েছে। এই কর্মসূচির লক্ষ্য হল সড়কে ট্রাফিক আইনের প্রয়োগ শক্তিশালী করা, রাস্তার নকশা, অবকাঠামো উন্নয়ন করা, সড়ক-সংঘর্ষের যথাযথ তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা এবং জনসচেতনতা বুদ্ধিতে প্রচার-প্রচারণা চালানো।
Leave a Reply