অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : “লবন এবং পেঁয়াজ থেকে কিভাবে ইলেক্ট্রিসিটি তৈরী হয়, নিজেই কিভাবে মিনি ঝালাই মেশিন তৈরি করা যায়, গরম বরফ বা প্লাস্টিক থেকে পেট্রোল তৈরি কিংবা হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন গ্যাস উৎপাদন” এমনই সব চমকপ্রদসব কন্টেন্ট পাওয়া যাবে জিরো আইডিয়া নামের একটি ফেসবুক পেইজ এবং ইউটিউবে।
দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অনার্স চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী জাকির হোসেন। ২০১৮ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর থেকে এরকমই বিজ্ঞানের বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার শত শত কন্টেন্ট বানিয়ে নিয়মিত উপহার দিচ্ছেন বিজ্ঞানপ্রিয় শিক্ষার্থীদের। ক্যামেরায় ধারণকরা সেসব ভিডিও দেখছেন লাখ লাখ মানুষ।
দিনাজপুর জেলার স্থানীয় বাসিন্দা সুমন। বাবা দুলাল মিয়া, মা জাহানারা বেগমের ৩ সন্তানের প্রথম সন্তান তিনি।
নিজের অধ্যয়নের বিষয়বস্তু এবং ভালোলাগার জায়গা থেকে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছেন ডিজিটাল এ কন্টেন্ট ক্রিয়েটর। তার কন্টেন্টগুলোর সবগুলোই নিজে এডিট করে ফেসবুক ইউটিউবে দিয়ে থাকেন। কন্টেন্টগুলোর বেশিরভাগই ৫ থেকে ১০ মিনিট দীর্ঘ হয়ে থাকে। যা দেখে বিজ্ঞানের প্রতি প্রেম ও জটিল বিষয়কে সহজে বোঝার উপায় খুঁজে পেয়েছেন দর্শকরা।
‘জিরো আইডিয়া’ নামের ওই ফেসবুক পেজে বর্তমান ফলোয়ার সংখ্যা এক লাখেরও বেশি। বিজ্ঞানের পরীক্ষা-নিরীক্ষা, বিশেষ করে রাসায়নিক পদার্থ সম্পৃক্ত করে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে এ পেজটি। যেখানে সর্বোচ্চ বিয়াল্লিশ লক্ষাধিক মানুষ কন্টেন্টগুলো দেখেছেন। ইউটিউব চ্যানেলটিতেও সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা লাখ ছুঁই-ছুঁই। ২০১৫ সাল থেকে ইউটিউব চ্যানেলটি পরিচালনা করছেন তিনি। স্থানীয় সায়েন্টিফিক স্টোর থেকে বেশিরভাগ সংগ্রহ করা অ্যাপারেটাস ব্যবহার করেই অনায়াসে করেন এসব পরীক্ষা নিরীক্ষা। প্রথম দিকে ইউটিউব থেকে সামান্য অর্থ পেতেন তিনি। যা দিয়ে পরবর্তী কন্টেন্ট তৈরি করতেন। অর্থ জমিয়ে ডিএসএলআর ক্যামেরা কিনে নিজের শখও মিটিয়েছেন এই কন্টেন্ট ক্রিয়েটর।
জাকির হোসেনের বেশিরভাগ কন্টেন্ট খোলা মাঠে বা কৃষি জমিতে ধারণ করা হয়ে থাকে। এর কারণ জানতে চাইলে তিনি জানান, সম্ভাব্য বিপজ্জনক রাসায়নিক বিক্রিয়া করার জন্য তার সীমিত অভ্যন্তরীণ সুবিধা রয়েছে। তাই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে তিনি খোলা জায়গা বেঁছে নেন। এছাড়াও, তিনি প্রয়োজনে গ্লাভস এবং সুরক্ষা গগলস পড়েন এবং পরীক্ষায় জড়িত সম্ভাব্য বিপদ সম্পর্কে দর্শকদের সতর্ক করেন।
জাকির হোসেন বলেন, আমাদের চারপাশে অহরহ ঘটছে কত কিছু। যার মধ্যে বিজ্ঞান জড়িত। অথচ আমরা তা বুঝতেই পারিনা। সেগুলোকেই সবার সামনে তুলে ধরি। বিজ্ঞান যেমন সত্য, তেমনি মজার বিষয়।
জাকির হোসেন তার এ কাজে সহপাঠী- বন্ধুদের সহায়তা নিয়ে থাকেন। তার বন্ধুরাও সর্বাত্মক সহযোগিতা করে থাকেন তাকে। ফলে কঠিন পরীক্ষা গুলো অনায়াসে করতে পারছেন তিনি।
তবে পড়ালেখা শেষে রসায়ন সম্পর্কিত সেক্টরে চাকরির পাশাপাশি একাধিক মানুষের কর্মসংস্থান করে দেওয়ার ইচ্ছা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন বলে জানান তিনি। ভবিষ্যতে আরো ভালো এবং সময়োপযোগী কন্টেন্ট উপহার দিতে পারবেন এমনটাই প্রত্যাশা জাকির হোসেনের।
Leave a Reply