অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : শর্তসাপেক্ষে এক সপ্তাহের জন্য কর্মবিরতি স্থগিত করেছে খুলনায় কর্মবিরতি পালনরত চিকিৎসকরা। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে চিকিৎসকের ওপর হামলাকারী অভিযুক্ত পুলিশের এএসআই নাঈমুজ্জামান শেখকে গ্রেপ্তারের শর্ত দিয়ে তারা এই কর্মসূচি স্থগিত করেন।
শনিবার (৪ মার্চ) বেলা পৌঁনে ১২টায় বিএমএ ভবনে সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেনের সঙ্গে বিএমএ নেতৃবৃন্দের বৈঠক শেষে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। এর আগে, সকাল সোয়া ১০টা থেকে পৌঁনে ১২টা পর্যন্ত দেড়ঘণ্টা এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তবে কর্মবিরতির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হবে সন্ধ্যা ৭টায় বিএমএ’র সাধারণ সভা শেষে।
বৈঠক শেষে বিএমএ সভাপতি ডা. শেখ বাহারুল আলম জানান, সিটি মেয়র এবং আওয়ামী লীগ নেতাদের আশ্বাসে তারা কর্মসূচি এক সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছেন। এখন থেকে চিকিৎসকরা কাজে যোগদান করছেন। তবে তারা এক সপ্তাহের মধ্যে এএসআই নাঈমকে গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনার শর্ত দিয়েছেন।
খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক বলেন, চিকিৎসকরা ৭ দিনের জন্য কর্মবিরতি স্থগিত করবেন। আমরা অনুরোধ করবো এখন থেকেই তারা যেন কাজে যোগদান করেন। সন্ধ্যায় সাধারণ সভায় আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দেওয়া হবে। সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টির জন্য যার যে দায়িত্ব সেই দায়িত্ব পালন করতে হবে।
একই কথা বলেন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন।
এর আগে, গত শুক্রবার (৩ মার্চ) সাড়ে ৩টায় বিএমএ ভবনে স্বাস্থ্য বিভাগের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ডা. রাশিদা সুলতানার নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল স্থানীয় বিএমএ নেতৃবৃন্দ ও চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে তারা চিকিৎসকের ওপর হামলাসহ খুলনার স্বাস্থ্যবিষয়ক ব্যাপারে খোঁজখবর নেন। এরপর সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য বিভাগের প্রতিনিধিদলের সদস্যরা সার্কিট হাউজে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
ভুল চিকিৎসার অভিযোগ এনে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি রাতে নগরীর শেখপাড়া এলাকার হক নার্সিং হোমের অপারেশন থিয়েটারে ঢুকে সাতক্ষীরায় কর্মরত পুলিশের সহকারী পরিদর্শক (এএসআই) নাইমুজ্জামান শেখ ও তার সঙ্গীরা খুলনা আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ডা. শেখ নিশাত আব্দুল্লাহকে মারধর করেন। ঐ ঘটনার প্রতিবাদে এবং এএসআই নাঈমকে গ্রেপ্তার ও বিচারের আওতায় আনার দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি ঘোষণা করে খুলনা বিএমএ। চিকিৎসকদের চারদিনের কর্মবিরতির কারণে প্রায় ভেঙ্গে পড়ে খুলনার চিকিৎসা ব্যবস্থা। এছাড়া খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালসহ সব সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা না পেয়ে চরম ভোগান্তির শিকার হয় রোগী ও তাদের স্বজনরা।
ওই ঘটনায় ডা. শেখ নিশাত আব্দুল্লাহ ও এএসআই নাঈমের স্ত্রী নুসরাত আরা ময়না নগরীর সোনাডাঙ্গা থানায় পাল্টাপাল্টি দুটি মামলা করেছেন। গত বুধবার ওই মামলায় এএসআই নাঈমকে সাতক্ষীরা সদর থানা থেকে জেলা পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হয়েছে।
Leave a Reply