অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশর (বিএডিসি) গোপালগঞ্জ আলু বীজ হিমাগার ছাদ বাগানে নিরাপদ দেশি-বিদেশি ফলের সমারোহ। সইে সাথে এ ছাদ বাগানে ফলছে মৌসুমী শাক ও সবজি। ছাদ বাগানের ফল ও সবজি উৎপাদকারীদের নিরাপদ পুষ্টির চাহিদা মেটাচ্ছে। পাশাপাশি উৎপাদনকারীদের স্বজনরা এখান থেকে ফল ও শাক, সবজি সংগ্রহ করে খেয়ে পুষ্টির চাহিদা পূরণ করছেন। এ ছাদ বাগানটি গোপালগঞ্জ শহর কৃষির অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে।
বিএডিসির গোপালগঞ্জ আলুবীজ হিমাগারের ছাদে ৫ বছর আগে অর্গানিক পদ্ধতিতে ছাদ কৃষি শুরু করেন গোপালগঞ্জ আলু বীজ হিমাগারের উপপরিচালক দিপংকর রায়। তাঁর ছাদ বাগানে বিভিন্ন প্রজাতির ড্রাগন ফল, ত্বীন ফল, আম, জাম, কমলা লেবু, মাল্টা, পেঁয়ারা, বাতাবিলেবু, কাঁঠাল, ডালিম, সফেদা, জামরুল, কদবেল, শরীফা, আমলকি, জলপাই, কুল, লেবুসহ বিভিন্ন ফলের সমরাহ ঘটেছে। এছাড়া এখানে তিনি শীত ও গ্রীম্মের সবজি ফুলকপি, বাঁধা কপি, লাউ, বেগুন, কুমড়া, শশা, করলা, পেপে, পুঁই শাক, ডাটাশাক, টমেটো, ঘিকাঞ্চন শাক, লাল শাক ফলাচ্ছেন। ৫ বছর আগে তিনি আলুবীজ হিমাগারের ২য় তলার ছাদে দেশি-বিদেশি ফলের বাগান করেন। পরে তিনি সেটি ৩য় তলার ছাদে সম্প্রসারণ করেন। ৩য় তলার ছাদে পরিকল্পিতভাবে পানি সরবরাহ, মাটির ফিলিসহ ছাদ বাগানের সব ব্যবস্থা রেখে তিনি এখানে চাষাবাদ শুরু করেন। এখানে তিনি ফল, শাক-সবজির আবাদ করছেন। বিভিন্ন ধরণের ফল ও সবজিতে তাঁর বাগান এখন সুশোভিত। এ ছাদ বাগান শহরবাসীকে আকর্ষণ করছে। এ বাগান দেখে অনেকেই ছাদ কৃষি করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
গোপালগঞ্জ আলুবীজ হিমাগারের উপপরিচালক দিপংকর রায় বলেন, ছাদ বাগানে অর্গানিক পদ্ধতিতে দেশি-বিদেশি ফল ফলাতে আমি আমাদের হিমাগারের ছাদে বাগান করেছি। এখানে ১৯ টি ফলের বিভিন্ন প্রজাতির দেশি-বিদেশি শতাধিক ফলের গাছ রয়েছে। প্রতিটি গাছ থেকেই আমরা মনবদেহের জন্য নিরাপদ ফল পাচ্ছি। এছাড়া এখানে আমরা নিরাপদ শাক ও সবজি ফলাচ্ছি। প্রতিদিন শহরের অনেকেই এ ছাদ বাগান দেখতে আসেন। তারা এ বাগান দেখে বাগান করার ইচ্ছা পোষণ করছেন। ভবনের ফাঁকা ছাদ হতে পারে আদর্শ ছাদ বাগান। এটি শহরবাসীকে দেখানোর জন্য আমি ছাদ বাগান করেছি। এখানে উৎপাদিত ফল ও শাক সবজি আমাদের নিরাপদ পুষ্টির চাহিদা পূরণ করছে। শহরবাসী এমন ছাদ বাগান করে ফলও সবজি উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টির চাহিদা পূরণকরতে পারেন।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার মাঝিগাতী দশপল্লী নেছারউদ্দিন খান উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রসাদ কুমার মৃধা বলেন,বিএডিসির ছাদ বাগানটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। আর্গানিক পদ্ধতির এমন সুন্দর ছাদ বাগান সাধারণত চোখে পড়ে না। এখানে গাছে গাছে দেশি-বিদেশি ফল ঝুলছে। বাগান জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ফলেছে শাক ও সবজি। এমন বাগান শহরের প্রতিটি ছাদে হলে নিরাপদ পুষ্টির চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে। শহরবাসী উপকৃত হবেন।
গোপালগঞ্জ শহরের নবীণবাগ এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ আলী মোল্লা (৫০) বলেন, নিজের চাহিদার ফল ও সবজি নিজে ফলিয়ে খাওয়া নিরাপদ। এমনই একটি অনুকরণীয় ছাদ বাগান করেছেন বিএডিসির গোপালগঞ্জ আলুবীজ হিমাগারের উপপরিচালক দিপংকর রায়। আমি তার বাগান দেখেছি। তার দেখাদেখি আমিও অর্গানিক পদ্ধতিতে ফল ও সবজি উৎপাদনের জন্য ছাদ বাগান করব।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাফরোজা আক্তার বলেন, ছাদ কৃষিতে হাইভ্যালু ক্রপ করতে হবে। তা হলে ছাদ কৃষি লাভবান হবে। বিএডিসির ছাদ বাগানে আর্গানিক পদ্ধতিতে হাইভ্যালু ক্রপ করা হয়েছে। এটি গোপালগঞ্জ শহরবাসীর জন্য অনুকরণীয়। শহরবাসী এ বাগানের আদলে বাগান করলে নিরাপদ পুষ্টির চাহিদা পূরণের পাশাপাশি লাভবান হতে পারবেন।
Leave a Reply