অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : পবিত্র রমজান মাস এলেই অধিকাংশ ব্যবসায়ীরা যেখানে জিনিসপত্রের দাম বাড়ানোর প্রতিযোগিতায় লিপ্ত থাকেন, সেখানে ব্যতিক্রমী নজির স্থাপন করে চলেছেন এরশাদ উদ্দিন। রমজান উপলক্ষ্যে ১০ টাকা লিটার দরে তার খামারের সব দুধ বিক্রি করে দিয়েছেন।
কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার নিয়ামতপুর রৌহা গ্রামের বাসিন্দা এরশাদ উদ্দিন। তিনি বাংলাদেশ মিলস্কেল রি-প্রসেস অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও জেসি অ্যাগ্রো ফার্মের চেয়ারম্যান।
জানা গেছে, তিন বছর আগে এরশাদ উদ্দিন নিজ এলাকায় জেসি অ্যাগ্রো ফার্ম নামে একটি খামার গড়ে তোলেন। তার খামারে দুগ্ধ ও মোটাতাজাকরণের ৪০০ গরু রয়েছে। এর মধ্যে বর্তমানে ২০টি গরু দুধ দিচ্ছে। প্রতিদিন খামার থেকে ৭০-৭৫ লিটার দুধ উৎপাদিত হচ্ছে। পবিত্র রমজান উপলক্ষ্যে সব দুধ তিনি ১০ টাকা লিটার দরে বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যে কেউ তার খামার থেকে নামমাত্র ১০ টাকা লিটার দরে সর্বোচ্চ এক লিটার দুধ কিনতে পারবেন।
সরেজমিনে রমজানের প্রথম দিন শুক্রবার (২৪ মার্চ) বেলা ১১টার দিকে দেখা গেছে তার খামারে এলাকার দরিদ্র শতেক নারী-পুরুষ লাইন ধরেছেন। কেউ কেউ ১০ টাকায় আবার কেউ বিনা মূল্যে দুধ নিয়েছেন।
নিয়ামতপুর ইউনিয়নের দেওপুর গ্রামের মমতা বেগম ও করফুলা বেগম ঢাকা পোস্টকে বলেন, বাজারে সবকিছুরই দাম অনেক বেশি। রমজানে ১০০ টাকা লিটার করে দুধ কিনে খাওয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব না। এরশাদ ভাই ১০ টাকা করে দুধ দিচ্ছেন, এই দুধ দিয়েই আমরা সেহরি খাব।
রৌহা গ্রামের হারেস উদ্দিন ও কামাল মিয়া বলেন, এরশাদ সাহেব আমাদের জন্য ১০ টাকা করে এক লিটার দুধ দিচ্ছেন। আমরা অনেক খুশি। কেননা বাজার থেকে দুধ কিনে খাওয়া সম্ভব না।
মোহাম্মদ ইমরান নামে একজন ঢাকা পোস্টকে বলেন, এরশাদ ভাইয়ের এ মানবিক উদ্যোগ আমাদের উপজেলায় প্রশংসিত হয়েছে। তিনি সবসময়ই এমন মানবিক উদ্যোগ গ্রহণ করে থাকেন।
বাংলাদেশ মিলস্কেল রি-প্রসেস অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও জেসি অ্যাগ্রো ফার্মের চেয়ারম্যান এরশাদ উদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, রমজান এলেই এলাকায় দুধের চাহিদা বেড়ে যায়। হাটবাজারগুলোতে এক লিটার দুধ ৯০-১০০ টাকায় বিক্রি হয়। ১০০ টাকা দিয়ে নিম্নবিত্ত মানুষদের কিনে খাওয়ার ক্ষমতা নেই। এ বিষয়টা চিন্তা করেই তাদের জন্য নামমাত্র ১০ টাকা বা ১ টাকা মূল্যে প্রতিদিন ৭০ জনকে ১ লিটার করে দুধ দেওয়া শুরু করেছি। এছাড়া অনেককে বিনা মূল্যেও দুধ দিয়েছি। আজ প্রথম রমজান থেকে এ কার্যক্রম শুরু হয়েছে, রমজানের শেষ দিন পর্যন্ত চলবে।
তিনি আরও বলেন, পুরো রমজানে আমার খামারে যা দুধ উৎপাদন হবে সবই ১০ টা বা ১ টাকা করে বিক্রি করা হবে। সেই হিসেবে এই রমজানে ২ মেট্রিক টন দুধ বিক্রি করা হবে।
Leave a Reply