24 Nov 2024, 10:36 am

মরক্কোর রাজপথে ইসরাইলবিরোধী বিক্ষোভ ; সম্পর্ক ছিন্ন করার আহ্বান

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : মরক্কোর বিপুল সংখ্যক মানুষ ফিলিস্তিন দিবস উপলক্ষে রাজধানী রাবাতে সমবেত হয়ে ইহুদিবাদী ইসরাইলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করেছে। বিক্ষোভকারীরা অবিলম্বে দখলদার ইসরাইলের সাথে সরকারের সব রকম সম্পর্ক ছিন্ন করার আহ্বান জানিয়েছে।

‘ফিলিস্তিনিদের অধিকার বিক্রয়যোগ্য নয়’, ‘ইসরাইলের সাথে বন্ধুত্ব বিশ্বাসঘাতকতার শামিল’ প্রভৃতি শ্লোগান দিয়ে তারা ইসরাইলের সাথে যেকোনো সম্পর্কের নিন্দা জানান। একই সাথে ইসরাইল বিরোধী এ বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীরা ইসরাইলি পতাকায় অগ্নিসংযোগ করেন। ইসরাইলের সাথে সম্পর্কের বিরোধী এবং ফিলিস্তিনি অধিকারের প্রতি সমর্থন দেয়ার জন্য গঠিত ‘মরক্কো ফ্রন্ট’এর নেতৃবৃন্দ বলেছেন, ইসরাইলি সেনারা যখন ফিলিস্তিনের বিভিন্ন শহরে নির্বিচারে নারী ও শিশুদেরকে হত্যা করছে তখন আর্থ-রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, শিক্ষা, কৃষি, শিল্প, ক্রিড়া, নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহের ক্ষেত্রে অবৈধ এ সরকারের সাথে মরক্কোর সম্পর্ক নিন্দনীয়।

উল্লেখ্য, মরক্কোর জনগণ এর আগেও বহুবার রাস্তায় ইসরাইল বিরোধী বিক্ষোভ করেছে এবং তাদের পতাকায় অগ্নিসংযোগ করে অবৈধ এ সরকারের সাথে সব রকম সম্পর্ক ছিন্ন করার আহ্বান জানিয়েছে। বিক্ষোভকারীরা শুরু থেকেই বলে আসছেন, চোখ বন্ধ করে ইসরাইলের সাথে সম্পর্কের অর্থ হচ্ছে ফিলিস্তিনিদের অধিকারের বিষয়টি উপেক্ষা করা এবং বায়তুল মোকাদ্দাসকে রাজধানী করে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের বিরোধিতা করা। কিন্তু আমরা জনগণ এ অন্যায় মেনে নিত পারি না। এ ছাড়া, মরক্কোর আইনজীবী সমিতির নেতৃবৃন্দও গত নভেম্বরের শেষের দিকে ৩১তম জাতীয় কনফারেন্স শেষে বলেছেন ফিলিস্তিন মুসলমানদের প্রধান সমস্যা এবং ফিলিস্তিনিদের সংগ্রামের প্রতি আমাদের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে।

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সরকারের বৃহৎ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে মরক্কো সরকার ইসরাইলের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে। সে সময় ট্রাম্প মরক্কোর এই পদক্ষেপের প্রতিদান হিসেবে বলেছিলেন, পশ্চিম সাহারার ওপর মরক্কোর সার্বভৌমত্বকে স্বীকৃতি দেবে আমেরিকা।

বাস্তবতা হচ্ছে, মরক্কো উত্তর আফ্রিকায়  আমেরিকার প্রধান মিত্র দেশ এবং এই সরকার সবসময়ই এ অঞ্চলে আমেরিকা ও ইসরাইলের স্বার্থের অনুকূলে কাজ করে। ফিলিস্তিন মুক্তিফ্রন্ট ও ইসরাইলের মধ্যে অসলো শান্তিচুক্তি হওয়ার পর ১৯৯৩ সালে মরক্কো ও ইসরাইল কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করেছিল কিন্তু ২০০০ সালে ফিলিস্তিনিদের দ্বিতীয় ইন্তিফাদা আন্দোলন শুরু হলে তেলআবিবের সাথে রাবাতের সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যায়। এরপর ট্রাম্পের সময় এ সম্পর্ক আবারো জোড়া লাগে।

তবে, সামরিক ও নিরাপত্তা ক্ষেত্রে মরক্কোর সাথে ইসরাইলের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক প্রতিবেশী দেশ আলজেরিয়াকে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। কারণ মরক্কোর সাথে আলজেরিয়ার সম্পর্ক ভালো নয় এবং এ অঞ্চলে গোলযোগ বাধাতে ইসরাইল এর সুযোগ নিতে পারে। আলজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট আব্দুল মজিদ তাবুন ইসরাইল-মরক্কোর ঘনিষ্ঠতায় দুঃখ প্রকাশ করে বলেছেন, এটা মুসলমানদের জন্য লজ্জাজনক।

এ অবস্থায় মরক্কোর জনগণের ইসরাইল বিরোধী বিক্ষোভ তাৎপর্যপূর্ণ বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • Visits Today: 12867
  • Total Visits: 1289019
  • Total Visitors: 4
  • Total Countries: 1668

আজকের বাংলা তারিখ

  • আজ রবিবার, ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং
  • ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (হেমন্তকাল)
  • ২১শে জমাদিউল-আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরী
  • এখন সময়, সকাল ১০:৩৬

Archives

MonTueWedThuFriSatSun
    123
252627282930 
       
15161718192021
293031    
       
  12345
2728     
       
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
31      
  12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930   
       

https://youtu.be/dhqhRb9y018